Logo
HEL [tta_listen_btn]

‘এই আদেশে দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা হল’

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন খারিজ করে দিয়ে দেশের রাজনীতিতে স্থায়ীভাবে সংঘাতময় পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে রাজনীতিতে স্থায়ী সংঘাত সৃষ্টি হল। আমরা এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ও হতাশ।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ১৫ ডিসেম্বর বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন মহাসচিব।

জামিন আবেদন খারিজ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই আদেশে দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করা হল। সারা বাংলাদেশের মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ।’

তিনি বলেন, ‘যে প্রত্যাশা মানুষের মধ্যে ছিল, যে অন্তত সর্বোচ্চ বিচার ব্যবস্থা- সবার শেষ আশা ভরসার স্থল সেখান থেকে খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি সেই ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোকে দুর্বল করে ফেরতে প্রথম থেকেই এক এক করে পদক্ষেপ নিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলেছে।’

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রোববার সারা দেশে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ তাই রোববার সারা দেশে বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করবে।

জনগণের সক্রিয় আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের ফল বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলেও হুশিয়ারি দেন বিএনপির এই মহাসচিব।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টার পর চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকটি শুরু হয়। মূলত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর করণীয় কী, সেটা ঠিক করতেই এ বৈঠক।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। এছাড়া বৈঠকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অংশ নেন। বৈঠক শেষে দলটির পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার জামিন খারিজের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানান দলের মহাসচিব।

এর আগে এদিন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আপিল আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়। সকাল ১০টা ৮ মিনিটে আপিল বিভাগে এ শুনানি শুরু হয়। পরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, একেএম এহসানুর রহমান প্রমুখ।

এরপরই দুপুরে আদালতের আদেশের পরপরই বিচ্ছিন্নভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। অবশ্য পুলিশের ধাওয়ায় মিছিল বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এ সময় বিএনপির দুই নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া বাংলামটর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com