নিজস্ব সংবাদদাতা:
করোনা দুর্যোগে শোভন গ্রুপে বেআইনী ও অমানবিকভাবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে শ্রমিকরা গতকাল শনিবার বেলা ১১ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভিজে বিকেএমইএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শোভন সিল্ক এন্ড নিটিং মিলস লিঃ এর শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এসএম কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট গাবতলী-পুলিশ লাইন শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসনাত কবীর, সহ-সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সোহাগ, কাঁচপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সভাপতি আমানউল্লাহ আমান, সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন, শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব মো: জলিল ও আল আমিন প্রমুখ। এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে করোনা দুর্যোগ চলছে। ভয়াল করোনায় ইতিমধ্যে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা লক্ষ ছাড়িয়েছে, মৃত্যু দেড় হাজার ছুঁই ছুঁই। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ভয়াবহভাবে বাড়ছে। আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর পাশাপাশি দেশে চলছে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকট। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের শ্রমজীবী মানুষ। ফলে মানুষের প্রত্যাশা ছিল করোনাকালে যেন শ্রমিক ছাঁটাই না হয়। সরকারেরও মালিকদের প্রতি নির্দেশ ছিল শ্রমিক ছাঁটাই না করার। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। গার্মেন্টসে যারা শ্রমিকের শ্রম ও ঘামে বড় বড় গ্রুপের মালিক হয়েছে তারাও ব্যাপকভাবে শ্রমিক ছাঁটাই করছে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ১ মাস সাধারণ ছুটির পর চাকরিতে যোগদান করতে গেলে শোভন গ্রুপের ২ শতাধিক শ্রমিককে কারখানায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। মালিকপক্ষের সাথে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা শ্রম আইন অনুযায়ী প্রাপ্য পাওনা নিয়ে কথা বলতে চাইলে মালিকপক্ষ কথা বলতে অস্বীকার করে। ছাঁটাইকৃত সকল শ্রমিকের শোভন গ্রুপের পরিচয়পত্র থাকলেও কর্তৃপক্ষ এ শ্রমিকদের তার শ্রমিক নয় বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকরা অনেকেই ২০/২৫ বছর ধরে কারখানায় কর্মরত আছে। মালিকের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ১৭ জুন ফতুল্লা থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছে। করোনা দুর্যোগে কর্মহীন হয়ে শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাসাভাড়া, দোকানবাকি পরিশোধ করতে না পেরে বাড়িওয়ালা-দোকানদারের ভয়ে এলাকাছাড়া হয়ে আছেন অনেক শ্রমিক। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিকরা ৯ জুন বিকেএমইএ সভাপতি, ১৩ জুন শিল্প পুলিশের এসপি ও ১৪ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শকের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো সংকট নিরসনে বিকেএমইএ অথবা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কেউ এগিয়ে আসেনি। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শ্রমিকদের সংকট নিরসনে কলকারখানা পরিদর্শনসহ শিল্প পুলিশ ও বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসার আহবান জানান
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।