নিজস্ব সংবাদদাতা:
ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে আলোর মিছিল করেছে সাংস্কৃতিক জোট। রোববার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মশাল হাতে সংস্কৃতি কর্মীরা শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে মিছিল করেন। এর আগে বিকেলে চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি, বাসদের জেলা সমন্বয়কারী নিখিল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি শুভ দেব, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শুভ বণিক, জেলা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সুলতানা আক্তার, সংস্কৃতি কর্মী মণি সুপান্ত ও দীনা তাজরিন প্রমুখ। সমাবেশে রফিউর রাব্বি বলেন, আমেরিকায় এক কৃষ্ণাঙ্গ শিশুকে হত্যা করে কয়েকটি খন্ডে টুকরো করা হয়েছিল। সেই কৃষ্ণাঙ্গ নারী বিচার চাইলে কোনভাবেই কেউ এগিয়ে আসেনি। তখন তিনি একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। সবাই যখন বলছে এই লাশটিকে কবর বা সমাধিস্থ করতে তখন তিনি বারণ করলেন। বরং তিনি বললেন তার এই শিশুর খন্ডিত দেহ প্রদর্শনী করবেন। হাজার হাজার মানুষ লাইন ধরে সেই নৃশংস বর্বর চিত্র দেখেছে। তখন আমেরিকার সরকার আইন করতে বাধ্য হয়েছিল। অর্থাৎ আইনের পরিবর্তনটা তখনই হয় যখন শাসকগোষ্ঠী তার নিজের চেহারা আয়নায় দেখতে পায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে যে বিভৎস ঘটনাগুলো বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে তার আয়নাটা শাসকগোষ্ঠীর সামনে তুলে ধরতে হবে। আমাদের দায়িত্ব হলো এই আয়না তুলে ধরা যাতে তাদের নির্মম, বিভৎস রূপ সবার পাশাপাশি তারাও যেন দেখতে পারে। যাতে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের ধারণা হয়। তারা যেন লজ্জিত হয় যে, কি নৃশংস ঘটনা তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘটিয়ে চলেছে। আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করার চেষ্টা করবো। নিখিল দাস বলেন, অপরাধের সাথে সম্পৃক্তরা বিত্তশালী কিংবা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকে। ফলে প্রশাসন তাদের বিচার করতে ব্যর্থ হয়। অপরাধীর পাশাপাশি তার পেছনে যেসব মদদদাতা রয়েছে তাদেরও আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। তরিকুল সুজন বলেন, নারীদের পণ্য হিসেবে স্থাপন করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নারীকে বিজ্ঞাপন বানানো শহরের বিলবোর্ডগুলোকে ভেঙ্গে দিতে পারলে, পুস্তকে নারী বিদ্বেষী লেখা বাদ দিয়ে নারীর মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারলে এই ধর্ষণের মাত্রা কমে যেত। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের চেয়ে নারীর মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।