সোনারগাঁ সংবাদদাতা:
সোনারগাঁয়ে জিসান নামে সাত বছরের শিশুকে হত্যার ঘটনায় আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছে জিসানের পরিবার। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নিহত জিসানের বাবা ইলিয়াছ শেখ, মা সুবর্না আক্তার, ভাই আশরাফুল, চাচা দিদার হোসেন, দুলাভাই ইকবাল প্রমুখ। মানববন্ধন জিসানের বাবা ইলিয়াছ শেখ বলেন, ‘আমি কিছু চাই না, আমি শুধু আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। আমার ছেলেটারে তারা মাইরা লাশটা রান্নাঘরের পাশে ফালায় রাখছিলো। তুহিন নামের যে বাচ্চাটারে পুলিশ ধরছিলো ওর পরিবারের সবাই মাদক ব্যবসায়ী। ওর পরিবারের মাদক বিক্রয় করবার কোন দৃশ্য হয়ত আমার ছেলে দেখে ফেলছিলো তাই আমার ছেলেকে তারা হত্যা করছে। আমার আদরের সন্তানটারে তারা আমার থেকে ছিনাইয়া নিয়া গেছে। আমার পোলাটারে মাইরা বস্তায় ডুকাইয়া রান্নাঘরের লগে ফালায় রাখছিলো। লাশের গন্ধ না পাইলে হয়ত আমার পোলাডারে খুইজাও হয়ত পাইতাম না। কাঁদতে কাঁদতে জিসানের মা সুবর্না আক্তার প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘আমার সুষ্ঠু বিচার একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই করতে পারেন। তিনি চাইলে দোষীদের এখনই শাস্তি দেয়া হবে। নাইলে তাদের আর শাস্তি হবে না। আমার ছোট ছেলেটারে তারা মাইরা ফেললো। আমার বুকটা খালি কইরা দিলো। আমারে এখন মা কইয়া কে ডাকবো? আমার পোলাটারে মাইরা লাশটা তো দিয়া দিতে পারতো। কিন্তু তা না কইরা বস্তায় রাইখা লাশটা পচাইলো। আমার জিসানের কোনো দোষ ছিল না। আমার নিষ্পাপ পোলাটারে তারা মাইরা ফেললো। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন তিনি যাতে আমার জিসানরে যারা খুন করছে তাদের সুষ্ঠু বিচার করেন। প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর দুপুরে নিখোঁজ হয় শিশু জিসান। পরদিন সোনারগাঁ থানায় নিহতের বাবা ইলিয়াস শেখ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ১০ ডিসেম্বর বিকেলে বিআর স্পিনিং মিলের পাশের একটি বাড়ির রান্নাঘর থেকে ওই শিশুর বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত জিসানের বাবা ইলিয়াস শেখ বিআর স্পিনিং মিলের মালি হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ছেলে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। পরে এই ঘটনায় তুহিন নামে পাশের এলাকার ১২ বছরের আরেক শিশু ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। সে আদালতকে জানায়, খেলনা না দেওয়ায় সে জিসানকে গলা টিপে হত্যা করেছে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।