নিজস্ব সংবাদদাতা:
দেশের রপ্তানীর প্রধান খাত তৈরী পোষাক শিল্প। বিশ^ মহামারী ‘কভিড-১৯’ এর ছোবলে সাড়া বিশে^র অর্থনীতি পর্যদুস্থ, স্থবির অর্থনীতির চাকা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লকডাউনে গৃহবন্দী হয়ে বিশাল এক জনগোষ্ঠী। এমন পরিস্থিতিতে ২০২০ সাল পোষাক শিল্পের পুরোটাই কেটেছে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়। এ সময়ে কমেছে স্বাভাবিক কার্যাদেশ (বায়ারদের অর্ডার), বেড়েছে উৎপাদন ব্যায়। এ শিল্পের কাঁচামালের বাজারেও চলছে চরম অনিশ্চয়তা। সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় চরম হিমসিম খাচ্ছে দেশের রপ্তানীর প্রধান এ খাতটি। এমন পরিস্থিতি জানিয়ে দেশের তৈরী পোষাক শিল্পের বৃহৎ বানিজ্যিক সংগঠন বিকেএমইএ একটি পত্র দিয়েছে শ্রম মন্ত্রাণালয় বরাবর। যেখানে অনুরোধ করা হয়েছে, আগামী ২ বছরের জন্য শ্রমিকদের বাৎসরিক ৫% হারে মজুরী বৃদ্ধির বিধান স্থগিত করার।প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান (এমপি) শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয় বরাবর বিকেএমইএ’র সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এমপি স্বাক্ষরিত ওই আবেদন পত্রটি ২৭ ডিসেম্বর জমা দেয়া হয়।শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের মজুরী বোর্ড ঘোষিত গ্যাজেটে শ্রমিকদের প্রতিবছর শতকরা ৫টাকা হারে মজুরী বৃদ্ধির বিধান রাখা আছে। এরই প্রেক্ষাপটে তৈরী পোষাক শিল্প মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় যেখানে শ্রমিক-কর্মচারীদের বর্তমান বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করাটাই প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে, বাংলাদেশসহ সারা বিশে^ই বিভিন্ন খাতে যেখানে বেতন-ভাতা কমিয়ে দিয়েছে, সেখানে পোষাকখাতে ৫% বৃদ্ধি কোনভাবেই বাস্তব সম্মত নয়। তারা জানান, আইনে থাকার কারণে কভিডের মধ্যেও বিগত সময়েও আমরা ইনক্রিমেন্ট (মজুরী বৃদ্ধি) দিতে বাধ্য হয়েছি। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি ভয়াবহ।তারা উল্লেখ করেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে নেওয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। কোথাও কারখানা সাময়িক বন্ধ, কোথাও কর্মী ছাটাই, কোথাও বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিভিন্ন পার্সেন্টেজে শ্রমিককর্মচারীদের বেতন-ভাতা কমিয়ে দিয়ে টিকে থাকার প্রচেষ্টা চলছে। আবার ভারতের শিল্পঘন বেশ কিছু রাজ্যে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে শ্রম আইন।এমন পরিস্থিতি স্বাভাবিক কবে হবে তার কোন পূর্বাভাস নেই, চরম প্রতিকুলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে এক অস্বাভাবিক সময়। এমনই পরিস্থিতিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের ঘোষিত সহযোগিতা নিয়ে কোনভাবে টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানীখাত পোষাক শিল্প। পর্যাপ্ত কার্যাদেশ নেই, নেই আগামী দিনগুলোতেও স্বাভাবিক কার্যাদেশ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা; যা কিছু কার্যাদেশ রয়েছে বা রপ্তানী হচ্ছে তারও পয়সা মিলবে ১৮০ থেকে ২০০ দিন পরে; আবার পূর্বের তুলনায় পোষাকের মূল্য কমিয়ে দিয়েছে ১০-১৫%। কোন প্রকার দর কষাকষির সুযোগ নেই।শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্ম-সংস্থান বজায় রাখার স্বার্থে, লস দিয়েই কার্যাদেশ নিতে বাধ্য হচ্ছে পোষাক খাতের উদ্যোক্তাগন। এরপরও আমরা আশার আলো দেখছি এই কারণে যে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা সরকার এ খাতটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সর্বদা পাশে থাকছেন। এমতাবস্থায় ৫% বেতন বৃদ্ধির বিধানটি আগামী ২ বছরের জন্য স্থগিত করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।