নিজস্ব সংবাদদাতা:
বাংলাদেশের সব থেকে ছোট আধুনিক জেলা নারায়ণগঞ্জ। প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্প নগরী হিসেবে বেশ পরিচিত। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এই জেলাটিতে তুলনামূলকভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি হওয়ায়, এই জেলায় বহিরাগতদের বসবাস বেশী। লাখো মানুষের স্বপ্ন পূরণের শহর নারায়ণগঞ্জ। আজ থেকে ৩৪ বছর পূর্বে, ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মধ্য দিয়ে, ২৯২ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রতিষ্ঠা হয়। প্রাচীন বাংলার মানচিত্রে সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নামে কোন নগরীর অস্তিত্ব না থাকলেও পরবর্তীতে পলাশী যুদ্ধে ইংরেজদের সাহায্যকারী ব্যাক্তিবর্গদের ইংরেজ সরকার পুরস্কৃত করে। এ সুবাদে ১৭৬৬ সালে (বাংলা ১১৭৩) ভীখন লাল ঠাকুর ওরফে লক্ষী নারায়ণ ঠাকুর কোম্পানির নবাব মোজাফফর জঙ্গের কাছ থেকে দলিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলের ভোগস্বত্ব লাভ করেন। পরে প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি ঘোষণা করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে যার নাম হয়ে উঠে নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জে ১টি সিটি কর্পোরেশন, ৫টি উপজেলা, ৭ টি থানা নিয়ে গঠিত। এছাড়াও শত বছরের পুরোনো, দেশের প্রধান নদীবন্দর এখানে অবস্থিত। এখানে আছে লোকশিল্প জাদুঘর, পানাম নগর, সোনারগাঁও, সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি, সুলতান জালাল উদ্দিন ফতেহ শাহের এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ, বাবা সালেহ মসজিদ, বন্দর শাহী মসজিদ, কদমরসুল দরগাহ, গোয়ালদি মসজিদ, সোনাকান্দা দূর্গ, হাজীগঞ্জ দূর্গ, বিবি মরিয়মের সমাধি, আদমজী জুট মিল, জাতীয় ক্রিকেট ষ্টেডিয়াম (৩য়), ফতুল্লা। বহু কৃতি ব্যক্তির জন্মস্থান এই নারায়ণগঞ্জ। এখানে জন্মেছেন বহু মুক্তিযোদ্ধা- কমান্ডার এম এ গনি, মোহাম্মদ আলী, মোঃ সামসুল হক, মহিউদ্দিন রতন, মোঃ নাসির উদ্দিন, মমিনুল ইসলাম উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও আরও আছে ৪র্থ বাংলাদেশী গ্রান্ড মাস্টার খেতাবধারী আব্দুল্লাহ আল রাকিব, কবি ও লেখক বেনজির আহমেদ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। সাবেক সেনা প্রধান ও এমপি জেনারেল শফিউল্লাহ, সাবেক সরাষ্ট্রমন্ত্রী আঃ মতিন চৌধুরী, একেএম সামসুজ্জোহা, আলী আহমেদ চুনকাসহ আরও অনেকে। এক কথায়, গৌরবময় ইতিহাসের এক ভান্ডার নারায়ণগঞ্জ।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।