Logo
শিরোনাম
তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষের সাথে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাক্ষাৎ শ্রমিক শামীম হত্যায় গ্রেফতার আলফাস দুই দিনের রিমান্ডে জেলা কৃষকদলে শাহীন আহ্বায়ক, সদস্য সচিব আলম ফতুল্লায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার যানজট নিরসনে ভ্রাম্যমাণ আদালত, ৬ মামলায় জরিমানা আদায় মামুন হত্যায় আকতার ও সুমনকে আসামি করে মামলা নারায়ণগঞ্জ শহরের হকার্স মার্কেটের পিছনে প্রকাশ্যে মাদকের হাট সন্ত্রাসীদের আটক করতে না.গঞ্জসহ সারা দেশে শুরু ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ প্রশাসন নিরব থাকলে ছাত্র-জনতা উপযুক্ত জবাব দিতে বাধ্য হবে: আব্দুল্লাহ আল আমিন মোবাইলের কারণে যুবকরা ক্রীড়া ও শিক্ষার দিকে অমনোযোগী হয়ে পড়ছে: গিয়াসউদ্দিন
HEL [tta_listen_btn]

রূপগঞ্জে বেলুনে গ্যাস সংরক্ষণ করে রান্না

রূপগঞ্জে বেলুনে গ্যাস সংরক্ষণ করে রান্না

রূপগঞ্জ সংবাদদাতা:
কারো ঘরে লাল পলিথিনের বেলুন। কারো ঘরে হলুদ বেলুন। আবার কারো ঘরে নীল বেলুন। কারো ঘরের খাটের নীচে বেলুন। কারো ঘরের মাঁচার উপড়ে বেলুন। কারো গোয়াল ঘরে বেলুন। গ্রামের পর গ্রাম ঘরে ঘরে বেলুন। যেন গ্রামগুলো বেলুনের গ্রাম। তবে এসব কিন্তু খেলনা বেলুন কিংবা জন্মদিনের বেলুন নয়। এসব বেলুন গ্যাস সঞ্চয় করে রাখার জন্য পলিথিনের তৈরি ভয়ংকর বেলুন। এসব বেলুন বিস্ফোরণে ভস্মীভূত হতে পারে গ্রামের পর গ্রাম। রূপগঞ্জের কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের বেলুন ব্যবহার করে রান্নাবান্নার কাজ চলছে। লাইনে গ্যাস না থাকায় এমনটা করছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি বেশ আতঙ্কিত রূপগঞ্জের সচেতন সমাজ।পলিথিনের বেলুন তৈরি করে এক ধরনের মেশিনের সাহায্যে পাইপ থেকে গ্যাস টেনে এনে জমা করা হয়। পরে তা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। এতে যেকোনো সময় বেলুন লিকেজ হয়ে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে। তবুও থেমে নেই বেলুন ব্যবহারের। প্রতিনিয়তই বাড়ছে বেলুন বোমা ব্যবহারকারীর সংখ্যা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউপির প্রায় ১০টি গ্রামে ভয়ংকর বেলুনে চলছে রান্নাবান্নার কাজ। সোনারগাঁও তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেলুন বোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে তিতাস কর্তৃপক্ষ বলছে তারা এসব ব্যাপারে কিছুই জানেন না। স্থানীয়রা জানান, সারাদিন গ্যাস থাকে না। তাই গভীর রাতে এ পলিথিনে গ্যাস ভরে রাখি। তা দিয়ে দিনের বেলায় রান্না করি। একবার গ্যাস ভরে রাখলে দুদিন রান্না করা যায়। আর গ্যাস ভর্তি পলিথিন বেলুনটা থাকে ঘরের আড়ার ওপরে। গত কয়েকদিন আগেই সবার দেখাদেখি আমিও বাজার থেকে পলিথিন এনে লোক দিয়ে বানিয়েছি। মানুষের মুখে শুনলাম গ্যাস অফিসের লোক আসছে তাই খুলে ফেলেছি।পলিথিন, রশি, পাইপ ও কিছু যন্ত্রপাতির সাহায্যে এটা বানানো হয়েছে। এটি বানাতে এক হাজার পাঁচশ টাকা খরচ হয়েছে। রাতে যখন বেশি গ্যাস আসে তখন পাইপের একটা মুখ খুলে দিলে গ্যাস ভরে যায়। পুরো পলিথিন গ্যাসে ভরে গেলে আবার পাইপের মুখ বেঁধে রাখি। সকালে চুলা জ্বালালে বেলুনের জমে থাকা গ্যাস দিয়ে রান্না করা যায়। এলাকাবাসী জানান, ২০১৫ সালের শুরুতে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে অবৈধ গ্যাস সঞ্চালন লাইন টানা হয়। এ লাইন থেকে সংযোগ নিতে প্রতি বাড়ি থেকে এককালীন ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা নেয় স্থানীয়রা। যারা গ্যাসের সংযোগ নিজের বাড়িতে নিয়ে ব্যবহার করছেন তারা এখনো বিল পরিশোধ করেননি। ফলে, গ্যাসের চাপ বাড়াতে কেউ তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডকে অভিযোগ জানাতে পারেন না। এজন্য ঝুঁকি জেনেও ১৫টি গ্রামের সাধারণ মানুষ কয়েক শতাধিক বাড়িতে এভাবে পলিথিনে গ্যাস সংরক্ষণ করে রান্নার কাজে ব্যবহার করছেন।
নিজে পলিথিনে গ্যাস জমা করেন না দাবি করে আলী মুহাম্মদ শাওন বলেন, রাত দুইটার দিকে গ্যাস আসে, আবার ফজরের আজানের সময় চলে যায়। এজন্য কিছু লোক অভিনব কায়দায় গ্যাস জমা করে। গ্যাসের বিল নির্ধারণ করা হয়নি। আমাদের সারাক্ষণ গ্যাস দিলে আমরা বিল পরিশোধ করবো। অবৈধ গ্যাস লাইন কীভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সংযোগের জন্য প্রতিঘর থেকে ১২ থেকে ১৫ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। তারাই বলেছে পরে বৈধ করে দেবে। তবে, এখনো পর্যন্ত লাইন বৈধ করেনি। আর তিতাস থেকে কোনো লোক যোগাযোগ করেনি। সরেজমিনে উত্তরপাড়া এলাকার জীবন চন্দ্র সরকারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির টয়লেটের উপড়ে লাল পলিথিনের বেলুন। তিতাস গ্যাসের পাইপ লাইন থেকে পাইপের মাধ্যমে পলিথিনে গ্যাস উঠানো হচ্ছে। পলিথিন থেকে আরেকটি পাইপ চুলায় দেয়া আছে। পরে সারাদিন চালানো হয় রান্নার কাজ। জীবন চন্দ্র বলেন, গ্যাস থাহেনা বাপু। হের লেইগ্যা গ্যাস বেলুন নিছি। সারা রাইত গ্যাস তুইলা রাহি। দিনে রান্ধন-বান্ধন করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত্তো আইন-কানুন জানি না। দরকার পড়ছে, নিছি। আরেক বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, হগলতে নিছে, আমিও নিছি। এভাবে গ্যাস নেয়া ঝূঁকিপূর্ণ জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এইডা আর কি অইবো? গ্যাসতো উইড়া যায়গা। কিছু অইবো না। সোনারগাঁও কার্যালয়ের (ব্যবস্থাপক) মেজবাহউর রহমান বলেন, এমন কথা আজ নতুন শুনলাম। বড়ই অদ্ভুত লাগলো। এভাবে গ্যাস সঞ্চয় করে রাখা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পলিথিন গলে গেলে কিংবা ছিদ্র হয়ে গেলে আগুন লেগে যেতে পারে। পুড়ে যেতে পারে বাড়িঘর। খোঁজ নিয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা নিচ্ছি। রূপগঞ্জের ইউএনও শাহ নুসরাত জাহান বলেন, এটা কিভাবে সম্ভব? একদিকে বড় অন্যায়। এরপর ঝুঁকি! আমরা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com