নিজস্ব সংবাদদাতা:
লোগোসহ বড় করে লেখা রয়েছে ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন’র নাম। এরপর কিউআর কোড দেওয়া, থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের নম্বরও।
এত কিছু দেখার পর সংস্থার ‘বৈধতা’ নিয়ে অনেকের মাঝে প্রশ্ন না আসাটা স্বাভাবিক। আর এ সুযোগ নিয়েই অভিনব কায়দায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মিশনে নেমেছে নামধারী একটি এনজিও। বন্দরের কদম রসূল অঞ্চল থেকে হোল্ডিং নম্বর প্লেট প্রদান করার নাম করে ইতোমধ্যেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার তারা বলেছেন, ‘পুরো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে নাম্বার প্লেট প্রদান করার অনুমতি দিয়েছে মেয়র’।
বন্দরের আল-আমিন নামের এক যুবক বলেন, এমন হোল্ডিং নম্বর প্লেট করতে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা লাগবে। সেখানে সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডে এক একটি হোল্ডিং নম্বর প্লেটের জন্য বাধ্য করছে ৫০০ টাকা করে দিতে। কোথাও কোথাও দাবী করছেন এর চেয়েও বেশি টাকা। মেয়র নাকি তাদের টাকা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলে ২২ হাজার ৫৩২ টি হোল্ডিং, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে ১৬ হাজার ৪৭১ ও বন্দরের কদম রসূল অঞ্চিলে আরও ১৩ হাজার ২৭২টি হোল্ডিং রয়েছে। সব মিলিয়ে ৫২ হাজার ২৭৫ টি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকার টার্গেট নিয়ে নেমেছে নামসর্বস্ব এনজিও ‘ইউডিআরডবিøউএস’। এরই মধ্যে বন্দরের কদম রসূল অঞ্চিলের ২০ নং ওয়ার্ডে প্রতারণা শুরু করে দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ বলেন, ‘হোল্ডিং নম্বর প্লেট দেওয়ার অনুমতি সিটি করপোরেশন থেকে কাউকে দেওয়া হয়নি। আর ৫০০ টাকা করে আদায় করতে অনুমতি দেওয়াতো প্রশ্নই আসে না। যদি কেউ এসে সিটি করপোরেশনের কথা বলে টাকা দাবী করে, অবশ্যই পেপার্স দেখতে চাইতে বলবেন’।ইউডিআরডবিউএস কি?‘আরবান ডেভেলপম্যান্ট এন্ড রুরাল ওয়েলফ্যায়ার সোসাইটি’ নামসর্বস্ব এনজিও। কার্যালয়ের ঠিকানা কেরানীগঞ্জে বলে জানা গেছে। তবে সংগঠনটির ফেসবুক পেইজে যোগাযোগের জন্য যে নম্বর (০২৭৭৬৩১৫৭)টি দেওয়া হয়েছে, সেটাও ভুল। আর ই-মেইল (ঁফৎংিথ০৬@ুধযড়ড়.পড়স) টিও বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়া সংগঠনের কোন কার্যকম ফেসবুক প্রেসটিতে নেই। নেই ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বরের পর কোন নতুন পোস্টও। এমন নামসর্বস্ব এনজিও‘র প্রতারণা ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নিবে জানতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোঃ আবুল আমিনকে একাধিকবার ফোন করলেও রিসিভ করেনি। তবে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনাবিদ মোঃ মঈনুল ইসলাম জানান, আমরা কোন এনজিওর সাথে এ ধরণের চুক্তি করিনি। যদি কেউ হোল্ডিং প্লেট দেওয়ার নামে টাকা আদায় করে থাকে, তাহলে সেটা সম্পূন্ন অবৈধ ভাবে করছে। এর আগেও একটি এনজিও এমন কর্মকান্ড করেছিল, আমরা ব্যবস্থা নিয়ে ছিলাম। স্থানীয় কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সাথে কথা বলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।