সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
গাজীপুরে ঈদে ১০ দিনের ছুটি চাহিয়া আন্দোলনরত হামীম গ্রæপের শ্রমিকদের উপর গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে গার্মেন্টস শ্রমিকফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে সকাল ১১ ট্য়া নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। গার্মেন্টস শ্রমিকফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিকফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, সহ-সভাপতি হাসনাত কবীর, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, কাঁচপুর শাখার সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান। নেতৃবৃন্দ বলেন, টঙ্গিতে ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের উপর শিল্প পুলিশের গুলিবর্ষণে ২ জন মারাত্মক আহতসহ ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। শিল্প মালিক আর রাষ্ট্র পরিচালকদের অব্যবস্থাপনা-সিদ্ধান্তহীনতা শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টির জন্য দায়ী। শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পাশ কাটাতে গৃহিত সরকারি কৌশল করোনা নিয়ন্ত্রণে ঘোষিত লক-ডাউন কে মানুষের কাছে হাস্যকর বিষয়ে পরিণত করেছে। আর এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই কারখানাগুলিতে ঈদের সাধারণ ছুটির সাথে অতিরিক্ত ছুটি দেওয়ার জন্য সাপ্তাহিক বন্ধের দিনগুলিতেও জেনারেল ডিউটি করানো হয়েছে। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হওয়ার আকাংখা থেকেই শ্রমিকরা বিগত দেড়মাস যাবত বিশ্রাম না নিয়ে কাজ করেছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, উৎপাদন চালিয়ে রাখার জন্য প্রচার করা হয়েছে শ্রমজীবী মানুষের ইমিউনিটি শক্তিশালী তাদের করোনা হয় না। ফলে শ্রমিকদের মধ্যে ঈদযাত্রায় করোনার বিষয়টি বিবেচনায় ছিল না। অতিরিক্ত কাজের সময়ের মজুরির কিভাবে ফয়সালা হবে? করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে পরিবার-পরিজনের সাথে মিলিত হতে ছুটি পাওয়া যাবে কিনা? এই সকল প্রশ্নের ফয়সালা না করে আকষ্মিকভাবে শুধুমাত্র ৩ দিনের ছুটি দেওয়ার ঘোষণা শ্রমিকদের লালিত স্বপ্নে আঘাত করেছে, তাদের ক্ষুদ্ধ করেছে। এই অসন্তোষের দায় মালিক আর সরকারের নীতিনির্ধারকদের। অথচ শ্রমিকদের আকাংখাকে বিবেচনা না করে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের উপর নির্বিচার লাঠিচার্জ আর গুলি চালিয়েছে গাজীপুর শিল্প পুলিশ। মজুরি, ছুটি বা অন্যান্য শ্রম অধিকার সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি শিল্প সম্পর্কের নিয়মানুসারে মালিক এবং শ্রমিকের দ্বি-পাক্ষিক দরকষাকষির বিষয়। আর রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসাবে পুলিশের দায়িত্ব শিল্প সম্পর্কের দুর্বল পক্ষ শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষায় সাহায্য করা। ভারসাম্যপূর্ণ স্থিতিশীল শিল্পসম্পর্ক অব্যাহত রাখা। অথচ ২০১০ সালে ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পুলিশ নামে যাত্রা শুরু করা পুলিশের এই নতুন ইউনিট সাধারণ শ্রমিক আর শ্রমিক নেতাদের হয়রানি-নির্যাতনের মাধ্যমে শ্রমিক আন্দোলন, শ্রমিকের প্রতিবাদী কন্ঠকে দমন করার দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করেছে। কিন্তু শ্রম আইন লঙ্ঘনকারী, শ্রমিকের পাওনা বেতন-ভাতা আত্মসাতকারী কোন শিল্প মালিককে গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়ার নজির গত ১১ বছরে স্থাপন করতে পারেনি। মালিকদের শোষণ প্রক্রিয়াকে নির্বিগ্ন করতে শক্তি প্রয়োগকে বৈধতা দিতে শ্রমিক আর সাধারণ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় শিল্প মালিকদের নিরাপত্তা দিতে ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পুলিশের প্রবর্তন করা হয়েছে। শ্রমিকরা অস্ত্রধারী নয়, ডাকাত নয়, তারা শ্রম দিয়ে উৎপাদন করে মূল্য সৃষ্টি করে আর তৈরীকৃত মূল্যের একটি অংশ মজুরি হিসাবে পেতে চায়। ফলে শিল্প সম্পর্ক পরিচালনায় অস্ত্রধারী পুলিশের কোন প্রয়োজন নেই। নেতৃবৃন্দ হামীম গ্রæপের শ্রমিকদের উপর গুলিবর্ষণের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, আহতদের সুচিকিৎসা এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি করেন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।