Logo
HEL [tta_listen_btn]

কার রিপোর্ট সঠিক?

কার রিপোর্ট সঠিক?

নিজস্ব সংবাদদাতা:
কোন্রিপোর্টটি সত্য, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে পপুলারে করোনার রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ আর খানপুরের ৩শ’ শয্যায় ‘নেগেটিভ’ ধরা পড়েছে।প্রশ্ন ওঠেছে, কার ভুলে এমনটি হয়েছে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই। তবে, ভুল যারই হউক, ভয়ঙ্কর বাস্তবতার মুখমুখি হয়েছে ক্যান্সার আক্রান্ত এক দিন মজুরের ছেলে। গত ২ দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে ভুক্তভোগীর পিতা দিনমজুর মোহন মিয়া কান্না করে বলেন, ‘ছেলের বয়স অল্প, এক মাস আগেই মাথায় টিউমারের অপারেশন করেছি, তার উপর ধরা পরেছে ক্যান্সার। সু-চিকিৎসা নিতে হলে করাতে হবে করোনা টেস্ট, হতে হবে করোনা মুক্ত। এই পরিস্থিতিতে যখন করোনা পজেটিভ শুনেছি, তখন থেকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছি। করোনার কথা শুনে স্বজন বা প্রতিবেশীরা একটি বারের জন্য সহানুভুতি পর্যন্ত দেখায় নি। রাস্তার এক পাশে দেখলে অন্য পাশে চলে গেছে। করোনা শুনে অসুস্থ ছেলেকে সেবা টুকুও করতে পারিনি।’ মোহন মিয়ার বাড়ি ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নে। নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতা লোড-আনলোড করে স্বল্প আয় দিয়ে ৩ সদস্যের সংসার চালান এই ব্যক্তি। ১৯ বছর বয়সী এক মাত্র ছেলে সন্তান জিসানের যখন এই পরিস্থিতি, তখন রাত হলেও নিদ্রা নেই পরিবারের কারো চোখে। গত ১৪ এপ্রিল কিশোর ছেলে মো. জিসানের মাথায় টিউমার ধরা পরে। ২৫ এপ্রিল সেই টিউমারেরই অপারশন হয়। পরে টিউমারে ক্যানসার ধরা পড়ায় জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তাই গত ৫ জুন নারায়ণগঞ্জের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা দেন। ২হাজার ৩শ’ টাকা ফি দেওয়ার পর ৬ জুন রিপোর্ট আসে পজেটিভ (করোনা আক্রান্ত)। পিতার মন সোয় দেয় না। পপুলারের রিপোর্ট নিয়ে সন্দেহ হলে ৭ জুন ১০০ টাকা দিয়ে খানপুরের ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে আবারও করোনার নমুনা দেন এবং ৮ জুন সেই রিপোটে নেগেটিভ আসে (করোনা মুক্ত)। এমন বাস্তবতায় কঠিন দ্বিধাদ্ব›েদ্ব পরিবারটি।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, এক-দুই দিনের ব্যবধানে কখনোই করোনা পজেটিভ হয় না। কোন একটি রিপোর্ট ভুল রয়েছে। তবে, মোহন মিয়ার ভাষ্য, ‘জরুরি ভিত্তিতে যে চিকিৎসার জন্য করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে, ভুল রিপোর্টের ফলে সেই চিকিৎসাই এখন পর্যন্ত নিতে পারিনি। শনিবার (১২ জুন) হাসপাতালে গেলে বুঝা যাবে, ভুল রিপোর্টের মাশুল কতদিনে দিতে হবে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর ম্যানেজার শহীদুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘কারটা ভুল আর কারটা সঠিক, সেটা আমি বলতে পারবো না। আমাদের রেকর্ড দেখে বলতে হবে। তার জন্য রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। তারপরেই বলতে পারবো ঘটনা কী’। এ সময় রিপোটের ছবি পাঠাবো কি না, জানতে চাইলে মিটিংয়ে আছেন বলে ফোনটি রেখে দেন এবং পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে তার সাথে প্রতিবেদককে দেখা করার অনুরোধ করেন। অপর দিকে দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসা তত্তাবধায়ক আবুল বাসার জানান, আমাদের হাসপাতালে যোগ্যতা সম্পন্ন চিকিৎসক ও টেকনোলজিস রয়েছে। এছাড়া কোন রিপোর্ট সন্দেহ হলে একাধিকবার টেষ্ট করে রিপোর্ট দেওয়া হয়। তাই খানপুরের পরীক্ষার রিপোর্টই গ্রহণ যোগ্য।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com