নিজস্ব সংবাদদাতা:
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, করোনা মহামরি আমাদের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা। ধৈর্যের সাথে আমাদেরকে এর মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, খালিহাতে এসেছি খালিহাতে যাবো। যাদের সম্পদ আছে তাদের উচিৎ অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো।শনিবার (৩১ জুলাই) সকালে ইসদাইরস্থ শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণকালে টেলিফোনে তিনি এ কথা বলেন।করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর লকডাউনে সবচেয়ে বেশি যে শ্রেণির মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম পরিবহন শ্রমিকরা। করোনা ভাইরাসের এই দুর্দিনে তাদের পাশে তেমন কাউকেই এগিয়ে আসতে দেখা যায় না। শামীম ওসমান কয়েক ধাপে তাদের জন্য সহযোগিতা করেছেন। এবার এই অসহায় মানুষ গুলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটু। তার এই উদ্যোগে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ক্লাবের ইসি কমিটির ও ক্লাবের কিছু সদস্যও। চলমান লকডাউনে চলাচল বন্ধ রয়েছে নারায়ণগঞ্জের উৎসব, বন্ধন, বন্ধু, বাধঁন, হিমাচল, আনন্দ ও লেগুনার মতো গণপরিবহন। সেই পরিবহনের প্রায় ১৬০০ শ্রমিকের হাতে হাতে শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইসদাইরস্থ শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। প্রতি প্যাকেটে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আটা, ২ কেজি আলু, ১ লিটার তেল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি লবন ছিল। খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে এমপি শামীম ওসমান স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও মোবাইল ফোনে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডের পক্ষে সভাপতি তানভীর আহমেদ টিটু ছাড়াও বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্য ও গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজর আলী, পরিবহন ব্যবসায়ী ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোঃ জুয়েল হোসেনসহ নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বেশ কয়েকজন সদস্য ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বক্তব্যকালে এমপি শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকায় আজ আসতে পারিনি। করোনা টেস্ট করিয়েছি। তবে, আমার করোনার ফলাফল ভালো আসছে। যেহেতু শরীরটা খারাপ ছিল, তাই মানুষের মধ্যে আসতে চাই নাই। আমার কারণে যাতে কোন মানুষ অসুস্থ না হয়। আপনারা যারা এখানে আসছেন, আমি জানি, সকলেই খুব কষ্টে রয়েছেন। তানভীর আহমেদ টিটুর উদ্যোগে যারা আজকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন, তাদের এই আয়োজনে শরিক হওয়ার একটাই উদ্দেশ্য, সেটা হচ্ছে আল্লাহকে খুশি করা। আল্লাহ মানুষকে তৈরি করে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন আল্লাহকে খুশি করার জন্য। মহামারি আমাদের জন্য একটা পরীক্ষা। শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘আমার শ্রমিক ভাই যারা রয়েছেন, তারা সচেতন হয়ে থাকবেন, পাশাপাশি বাসার সকলকে সচেতন করবেন। ইনশাআল্লাহ, দয়ালু আল্লাহ আমাদের মাফ করে দিবেন। আমরা আসছি খালি হাতে, যাবোও খালি হাতে। আল্লাহ যাদেরকে সম্পদ দিয়েছেন, সবার উচিৎ আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানো। খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এই দুঃসময়ে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব এগিয়ে আসায় সরকারের পক্ষ থেকে আমি তানভীর আহমেদ টিটুকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তার মাধ্যমেই তার সহকর্মীরা একটি মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। আমরা চাই করোনার এই বিপদকালে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানরা নারায়ণগঞ্জের অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে এসে দাঁড়াক। তাহলে জেলায় মানবতার একটি জয় হবে। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, করোনার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক করোনা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর নারায়ণগঞ্জ ক্লাব চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা করেছে। ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রায় ৯ হাজার পরিবারকে সহযোগিতা করা হয়েছে। খানপুরের করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে দায়িত্বের জায়গা থেকে অংশ গ্রহণ করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসকের পরামর্শে জেলার ১৬০০ পরিবহন শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়ানো হলো আজ। তানভীর আহমেদ টিটু আরও বলেন, এবার যারা বাদ পরেছেন, পাশাপাশি অন্যান্য খাতের মানুষদের নিয়ে আরও ১৫০০ থেকে ২০০০ অসহায় মানুষের তালিকা করা হবে। সেখানে আমার আমেরিকান প্রবাসী চিকিৎসক বড় ভাই সহযোগীতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। উল্লেখ্য, গত বছর করোনার শুরু থেকেই তানভীর আহমেদ টিটু ব্যক্তিগত ভাবে নারায়ণগঞ্জের অসহায় দরিদ্র পরিবারের পাশাপাশি যারা লজ্জায় নিজেদের অবস্থানের কথা কাউকে জানাতে পারে না, গণমাধ্যম কর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে তাদের তালিকা করে গোপনে অনেক পরিবারের ঘরে খাদ্য পৌছে দিয়েছেন। এছাড়াও নানা শ্রেনী-পেশার মানুষদের খাদ্য, অর্থ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।