Logo
HEL [tta_listen_btn]

রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি…………………………. শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ড ২৪ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর

রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডি…………………………. শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকান্ড ২৪ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর

রূপগঞ্জসংবাদদাতা:
রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় বৈদ্যুতিক তার থেকে (শর্টসার্কিট) আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ) ইমাম হোসাইন। অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহতদের লাশ হস্তান্তর উপলক্ষে বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ প্রাঙ্গণে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। সিআইডির এই অ্যাডিশনাল ডিআইজি বলেন, তদন্ত কার্যক্রম কবে নাগাদ শেষ হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। যত দ্রæত সম্ভব মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলার মধ্যেই আসামীরা জামিন পেয়েছেন, ফলে তদন্ত কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে কি-না জানতে চাইলে ইমাম হোসাইন বলেন, যেকোনো মামলার ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ একটি পক্ষ; এখানে বিচার বিভাগ রয়েছে। কোন আসামী জামিনে থাকবে, কোন আসামী জেলখানায় থাকবে তা সম্পূর্ণ বিচার বিভাগের এখতিয়ার। এখানে কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। আদালত যা ভালো মনে করেছেন সেভাবে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে আসামীর জামিন, বাইরে থাকাকে আমরা কোনো বাধা মনে করছি না। তদন্তের অগ্রগতি কত দূর এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ তদন্তে আমরা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। এসব কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। এখন পর্যন্ত আমরা আগুন কোথা থেকে লেগেছে তার কাছাকাছি অবস্থানে চলে গেছি। এরপর বাকি বেশকিছু রিপোর্ট লাগবে, বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট লাগবে, কিছু বিশেষজ্ঞের রিপোর্ট লাগবে। এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে বলার মতো সময় হয়নি। অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ৪৮ জনের মধ্যে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরির মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষায় ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত হওয়া গেছে। এর মধ্যে আজ ২৪ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ দাফনের জন্য প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে।
২৪ লাশ হস্তান্তর
রূপগঞ্জের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় আগুনে নিহত ৪৮ জনের মধ্যে ২৪ জনের লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গ থেকে বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে মরদেহগুলো পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মরদেহ দাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। নাম ঠিকানা মিলিয়ে স্বাক্ষর করে টাকা গ্রহণের পর স্বজনদের কাছে মরদেহগুলো বুঝিয়ে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়া হয়। যে ২৪ জনের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে তারা হলেন- মোঃ আয়াত হোসেন, মোঃ নাঈম ইসলাম, নুসরাত জাহান টুকটুকি, হিমা আক্তার, মোসা. সাগরিকা শায়লা, খাদেজা আক্তার, মোহাম্মদ আলী, তাকিয়া আক্তার, মোসা. শাহানা আক্তার, মোসা. মিতু আক্তার, জাহানারা, মোসা. ফারজানা, মোসা. ফাতেমা আক্তার, মোসা. নাজমা খাতুন, ইসরাত জাহান তুলি, মোসা. নাজমা বেগম, রাশেদ, মোঃ রাকিব হোসেন, ফিরোজা, মোঃ তারেক জিয়া, মোঃ রিপন মিয়া, মোসা. শাহানা আক্তার, মোঃ মুন্না ও রিয়া আক্তার। মেয়ের মরদেহ নিতে আসা নেত্রকোনার মোহাম্মদ আলী বলেন, ২৫ দিন অপেক্ষায় ছিলাম। গতকাল মঙ্গবার ফোন পেয়ে ভোরে চলে আসি। মেয়েকে দেখে চিনতে পারিনি। অন্তত তার শরীরটা মাটিচাপা দিয়ে শান্তি পাবো। দুপুর থেকেই ঢামেক জুড়ে স্বজনদের আহাজারি। মায়ের জন্য মর্গে আসা জাকিরের কান্না যেন কোনোভাবেই থামছে না। জাকিরের মা জাহানারা বেগম ওই কারখানার চতুর্থ তলায় কাজ করতেন। মাকে নিতে না পারলেও এবার মায়ের মরদেহ কিশোরগঞ্জের মাতুয়াপাড়ায় নিয়ে যাবেন তিনি। মায়ের কফিনের সামনে আহাজারি করে জাকির বলেন, ‘আমার মা তো চলে গেল। আর তো পাবো না। আমার মায়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন। এই আমার আপনাদের কাছে চাওয়া। ১৬ বছরের মুন্নার মরদেহ নিতে এসেছে বাবা গিয়াস উদ্দিন। নিজেকে সামলাতে পারবেন না বলে তার সঙ্গে এসেছেন মুন্নার ফুপা কুতুবউদ্দিন, ফুপু রোকসানা। এছাড়াও কারখানার কর্মচারী শাহীনুরের মরদেহ বুঝে নিয়েছে ১৪ বছরের তানিয়া, মোহাম্মদ আলীর মরদেহ নিয়েছে তার বাবা শাহদাত খান।
১২ বছরের হাসনাঈনের নিথর মরদেহ নিতে এসেছেন তার মা নাজমা। উল্লেখ্য, ৮ জুলাই সজীব গ্রæপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কারখানার মালিক আবুল হাসেম, তার চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। পুলিশ তাদের চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com