Logo

‘টাউন হল’কে ‘জিয়া হল’ বানালো কারা এড. খোকন সাহা

‘টাউন হল’কে ‘জিয়া হল’ বানালো কারা এড. খোকন সাহা

নিজস্ব সংবাদদাতা:
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা এক বিবৃতিতে বলেন, তৎকালীন বিএনপি সরকারকে খুশী করার জন্য ‘নারায়ণগঞ্জ টাউন হল’কে ‘জিয়া হল’ নামকরণ করতে কারা সহায়তা করেছিলো তা নারায়ণগঞ্জবাসী জানেন। তিনি ‘৭৫ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখনই আক্রমণ শুরু হয়, প্রথমে যেমন সেরনিয়াবাত সাহেবের বাসায় বা শেখ মণির বাসায়, খবরটা আসার সঙ্গে সঙ্গে এবং আমাদের বাসায় যখন গুলি শুরু হয়, বঙ্গবন্ধু কিন্তু সবাইকে ফোন করেছিলেন। আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কথা হয়, তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে কথা হয়, সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর সঙ্গে কথা হয়। সেনাবাহিনীরও যার যা ভূমিকা ছিল, তারাও কিন্তু সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে নাই । এর পেছনে রহস্যটা কী, সেটাই কথা। বৃহস্পতিবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর কণ্যা, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা ঠিক যে, এই রকম একটা ঘটনার পর আমাদের দল, সমর্থক, মুক্তিযোদ্ধাদের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, তা হয়তো তারা করতে পারেনি’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের পর, আবারও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের ভূমিকা নিয়ে এখন নানান আলোচনা-সমালোচনা করছেন দলটির নেতারা। তাঁরা বলছেন, সেদিন নেতারা জোরালো প্রতিবাদ করেননি। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য যোগ দিয়েছিলেন খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায়। এ বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি দেশরতœ শেখ হাসিনা। বিশেষ করে রাজনীতির সূতিকাগার ও আওয়ামী লীগ দলটির জন্মস্থান ‘নারায়ণগঞ্জ’ জেলার নেতারা এ বিষয়ে আবারও সমালোচনায় সরব হয়েছেন। এড. খোকন সাহা জানান, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পরের দিন, খুনি মোশতাকের নির্দেশে এ.কে.এম শামসুজ্জোহা সহ অনেকে গ্রেফতার হন। এ.কে.এম শামসুজ্জোহা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সততার কিংবদন্তী সৎ রাজনীতিবিদ। ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ এর প্রতিষ্ঠাকালীন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সারাবাংলা থেকে অংশগ্রহণকারী ৩শ’ ডেলিগেটরের সমর্থনে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক সহ ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। আওয়ামী লীগের ওই প্রতিষ্ঠাকালীন গঠিত কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এ. কে.এম শামসুজ্জোহা। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এ.কে.এম শামসুজ্জোহার বাড়ি ‘হীরা মহল’ পরবর্তীকালে নিলাম করা হয়। ঐ সময়ে শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকেরা চাঁদা তুলে ‘হীরা মহল’ রক্ষা করেন নিলামের হাত থেকে।
খোকন সাহা বলেন, আর বর্তমান সময়েও আওয়ামী বিরোধী শক্তির সাথে গলায় গলায় মিলিয়ে তাদেরই উত্তরসূরি প্রকাশ্যে জনসভায় বলেন, হিরা মহলের ইট খুলে নিবো। আজ যারা ইট খুলে নিতে চায়, স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে সুর মিলিয়ে গলাবাজি করে, অথচ নিজ পূর্বপুরুষদের আওয়ামী লীগার দাবি করে। কিন্তু ইতিহাস কথা বলে। সেই দিন কিছু কিছু নেতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ বিবৃতি কিংবা শোক বিবৃতি বা মিলাদ মাহফিল কোনটাই করেন নাই। খোকন সাহা আরও বলেন, ওরা ১৯৭৫ সাল থেকে বিভিন্ন সরকারের সাথে আপোষ করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেছেন। তারা কোনও দিন জেল খাটে নাই। শুধু তাই নয়, তারা ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত নিজেদের সম্পত্তি বৃদ্ধি করে অনেক ধন-সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এমন কি, তারা ভূয়া জাল দলিলের মাধ্যমে দেবোত্তর সম্পত্তিসহ স্ব নামে, বে- নামে বহু সম্পত্তির মালিক হয়। ঐ গোষ্ঠী ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্তও নারায়ণগঞ্জে বহু লুট-পাট করেছেন। এভাবেই এই লুট-পাটকারী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু সরকারের বদনাম করেছেন।
খোকন সাহা আরও বলেন, ‘তারা তৎকালীন বিএনপি সরকারকে খুশী করার জন্য ‘নারায়ণগঞ্জ টাউন হল’ টা ‘জিয়া হল’ নামকরণ করতে সহয়তা করে। আওয়ামী লীগ সেজে এই কাজ করছেন। তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ শহর উন্নয়ন কমিটির নামের তালিকা দেখে, তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করার জন্য প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com