Logo
HEL [tta_listen_btn]

নদী দিবসে বিআইডব্লউটিএর সেমিনার অনুষ্ঠিত

নদী দিবসে বিআইডব্লউটিএর সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব সংবাদদাতা:
বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উদ্যোগে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘মানুষের জন্য নদী’ শিরোনামে সেমিনারে নদী দখল ও দূষণ রোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে এ আয়োজন করা হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মাসুদ কামাল। উপপরিচালক মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড রুবাইয়া খানম, বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপপরিচালক ইসমাইল হোসেন, সহকারী পরিচালক নাহিদ হোসেন, সহকারী পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য, বিআইডবিøউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের সিবিএ চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ। প্রধান আলোচক হিসেবে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম ও মূল্য আলোচক হিসেবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার নাম ব্যানারে উল্লেখ থাকলেও তারা উপস্থিত হননি। নারায়ণগঞ্জ সদর এসিল্যান্ড রুবাইয়া খানম বলেছেন, আমাকে কয়েকদিন আগে আলাপচারিতায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বলছিলেন, বিআইডবিøউটিএ নদীতে উচ্ছেদ করে কিন্তু তাদের উচিত যারা দখলদার তারা বেআইনি কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা। একই কথা বলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিষ্ট্রেটও। তিনি বলেন, দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে বিআইডবিøউটিএ’রও একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে। উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানালে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। নদীর যেসব জায়গা ব্যক্তির নামে রেকর্ড হয়ে আছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ারও তাগিদ দেন তিনি। কারণ অনেক সময় নদীর জায়গা যাদের নামে রেকর্ড হয়ে থাকে তারা ভূমি অফিসে নামজারী করতে আসে। আমরা নামজারী না দিলে তারা বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালায়। কিন্তু নদীর জায়গাতো আমরা নামজারী করতে পারি না। আমরা যদি একসঙ্গে বসে কাজ করি তাহলে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য ফলপ্রসু কোন রেজাল্ট দিতে পারবো। আমাদের কাজ হচ্ছে ময়লা পরিস্কার করা। আমরা সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। আমরা যদি শুধু বক্তব্যই দেই কিন্তু ফলপ্রসু কোন রেজাল্ট নারায়ণগঞ্জবাসীকে দিতে না পারি তাহলে আমরা ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত হবো। অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে নদী দখল করছে কিন্তু সেটা দিনশেষে আমাদের উপরেই প্রভাব পড়বে। নারায়ণগঞ্জ শিল্প এলাকা হিসেবে বেশীরভাগ কারখানাতেই এফলুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বা ইটিপি রয়েছে। কিন্তু বেশীরভাগ শিল্পকারখানা ইটিপি চালায় না। তারা ইটিপি বন্ধ করে রাখে। আমরা কিংবা বিআইডবিøউটিএ যখন পরিদর্শনে যাই তখন মালিকপক্ষ ইটিপি চালু করে। বর্তমানে নদী দূষণ মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে। নদীকে বাঁচাতে হলে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। আমাদের সকলের মন থেকে নদীকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ নদীতে কেউ যদি কোন বর্জ্য ফেলে সেটা সরকারের কোন সংস্থার একার পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব না। একা বিআইডবিøউটিএ কিংবা নৌ পুলিশের পক্ষে এটা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব না। আমি আশা করবো নদী রক্ষায় বিআইডবিøউটিএ যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিবে যাতে হাইকোর্ট তার জাজমেন্টে নারায়ণগঞ্জের উদহারণ টানবে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ শফিউল ইসলাম বলেন, পরিবেশ জীবন টিকিয়ে রাখার জন্য নদী হচ্ছে লাইফলাইন। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে আগামীর প্রয়োজনে বসবাসের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে নদীকে রক্ষার বিকল্প নেই। এই শীতলক্ষ্যাকে ঘিরেই নারায়ণগঞ্জ প্রাচ্যের ডান্ডি হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় নদী রক্ষায় আমাদেরকে আরো সচেতন হতে হবে। বিআইডবিøউটিএ’র নদী রক্ষার অভিযানে আমরা সবসময়ই সহযোগিতা করে আসছি। আমরা প্রশাসন ও বিআইডবিøউটিএ মিলে টিম নারায়ণগঞ্জ হিসেবে নদী রক্ষায় কাজ করবো। নদীপথে দুর্ঘটনা রোধেও সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন তিনি। ভবিষ্যতে যাতে নৌ দুর্ঘটনায় একটি মানুষেরও প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি।
বিআইডবিøউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল প্রবন্ধে নদীর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরেন। এছাড়া সেমিনারে হাইকোর্টের নিদের্শে নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শীতলক্ষ্যা নদীকে দখলমুক্ত করতে বিগত দিনের উচ্ছেদ অভিযানের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শীতলক্ষ্যার মদনগঞ্জ-সৈয়দপুর থেকে রূপগঞ্জের কাঞ্চন পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা দখলদারদের বিরুদ্ধে আমরা একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। যার মধ্যে ৭০ ভাগের বেশি দখল মুক্ত হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ দেওয়ার আগে থেকে শীতলক্ষ্যার উভয় তীরে বেশ কিছু শিল্পকারখানা রয়েছে যাদের কারখানার কিছু অংশ নদীর জায়গার মধ্যে রয়েছে। এ সকল কারখানার অংশ ভেঙ্গে দিতে গেলে দেশের বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন ব্যহত হতে পারে। এতে রাষ্ট্রীয় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে আমরা ওইসব স্থাপনা এখনো উচ্ছেদ করতে পারিনি। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে শীতলক্ষ্যায় ২ হাজার ৪০০ টি সীমানা পিলার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান আছে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো সীমানা পিলার স্থাপন করা হয়েছে। নদীর তীরে বেশ কিছু স্থানে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। আরো কিছু স্থানে শীঘ্রই ওয়াকওয়ে স্থাপন কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। আমরা যেহেতু ইতিপূর্বে সীমানা পিলার স্থাপন করতে পারিনি সেজন্য আমরা মামলা দেইনি। তবে আমরা স¤প্রতি রূপগঞ্জে এক দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। ভবিষ্যতেও দখলদারদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা দায়ের করবো। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বিগত দিনে আমাদেরকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও নদীর সীমানা নির্ধারণে যেভাবে সহযোগিতা করেছে ভবিষ্যতেও সেভাবে সহযোগিতা করবে বলে প্রত্যাশা রাখি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com