নিজস্ব সংবাদদাতা :
শহরের দেওভোগ এলাকায় ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রাজা লক্ষী নারায়ণ বিগ্রহ মন্দিরের শত কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তর সম্পত্তি জিউস পুকুরটি দখলমুক্তের দাবি জানিয়ে আসছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উদযাপন কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখাসহ কমিটির ৮টি সংগঠন। জিউস পুকুরটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ জানিয়ে কয়েক বছরে ধরে এই দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার করে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের অভিযোগে মেয়র আইভী এবার বিশ^ মিডিয়ায় স্থান করে নিয়েছেন। বিশ^ মিডিয়ায় মেয়র আইভীকে উপস্থাপন করা হয়েছে একজন জবরদখলকারী হিসেবে। ভারতের বাংলা সংবাদ মাধ্যমের জনপ্রিয় টেলিভিশন ‘কোলকাতা টিভি’র স্ক্রীনে উঠে এসেছে আইভী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে শতকোটি টাকা মুল্যমানের হিন্দু সম্পত্তি দখলের অভিযোগ। নারায়ণগঞ্জের গোটা হিন্দু সম্প্রদায় এই বিপুল পরিমান দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এবার শারদীয় দুর্গাপূজার মন্ডপে কালো ব্যানার লাগিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট এখানকার সমগ্র হিন্দু সম্প্রদায় আকুল আবেদন জানিয়েছে যেন মেয়র আইভী পরিবারের কবল থেকে দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কোলকাতা টিভির রিপোর্টে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী রাজা লক্ষী নারায়ণ বিগ্রহ মন্দিরে, শত কোটি টাকা মূল্যের দেবোত্তর সম্পত্তি জিউস পুকুরটি দখলের অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। কয়েক বছরে ধরে এই দেবোত্তর সম্পত্তি উদ্ধার করে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উদযাপন কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখাসহ কমিটির ৮টি সংগঠন।
এর ধারাবাহিকতায় দেবোত্তর সম্পত্তি ফিরিয়ে দিতে আইভীর প্রতি আহŸান জানিয়ে জেলায় বিভিন্ন পূজামন্ডপে ব্যানার লাগিয়েছেন সংগঠনগুলো। সা¤প্রদায়িক শক্তি মেয়র আইভী ও তার পরিবার কর্তৃক দখলকৃত লক্ষী নারায়ণ আখড়ায় দেবোত্তর সম্পত্তি জিউস পুকুর ফিরিয়ে দাও’ সম্বলিত ব্যানার লাগানো হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে মেয়র আইভী ও তার পরিবারে সদস্যরা ৮টি দলিলের মাধ্যমে মন্দিরের এই সম্পত্তি দখল করে রেখেছে বলে জানায়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি সভাপতি অরুন কুমার দাস কোলকাতা টিভিকে বলেন, মেয়রের মাতা থেকে শুরু করে উনার ভাই, উনার চাচা, আত্মীয়স্বজন ৮টি দলিলের মাধ্যমে এই সম্পদ গুলো দাবী করছে। আমরা এই সম্পদ উদ্ধার করতে সোচ্চার। বহু প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেও ফল পাইনি বলে অভিযোগ করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সাহা। তিনি বলেন, প্রেসক্লাব এর সম্মুখে আমরা মানববন্ধন করি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিকট একটা স্মারক লিপি প্রদান করেছি। শহীদ মিনারে প্রতীকী অনশন করেছি, তার পাশাপাশি আমরা জিউস পুকুরে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার লোকজনের সমাগম ঘটাই। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এদিকে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন বলেন, ১৯৮৪ সালে মেয়র আইভীর বাবা এই দেবোত্তর সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বললেও এখনো সম্পত্তি ফেরত পাইনি। এটি দ্রæত ফিরিয়ে দিতে আমরা দাবি জানাই। শিখন সরকার বলেন, আমরা একটা আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, যে আমাদের এই সম্পত্তি আপনাকে ফেরত দিতে হবে, আপনে যদি এই সম্পত্তি ফেরত না দেন তাহলে আমাদের এই আন্দোলন চলমান থাকবে। এই চলমানের অংশ হিসেবে আমরা এটা আন্দোলনের প্রতীক হিসাবে আমরা এই ব্যানার ব্যবহার করেছি। শুধু আমরা না, আমাদের সাথে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, হিন্দু মহাজোট, যুব ঐক্য পরিষদ সবাই আছে। আমরা সম্মীলিত ভাবে আমাদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এই কর্মসূচি নিয়েছি। নারায়ণগঞ্জ নগরী স্থাপনা সময়কালে শ্রী বিক্ষণ লাল ঠাকুর শহরের দেওভোগ আখড়া এলাকায়, দেবতা লক্ষী নারায়ণের নামে ‘শ্রী শ্রী রাজা লক্ষী নারায়ণ বিগ্রহ মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। শত বছর ধরে এই মন্দির নারায়ণগঞ্জে লাখো হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে পবিত্রতা ও শুদ্ধতার কেন্দ্র। লক্ষী নারায়ণের নাম অনুসারে নারায়ণগঞ্জ জেলার নাম করা হয় বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মেয়র আইভী বলেছেন, ৫ হাজার করে টাকা দিয়ে বিভিন্ন পূজামন্ডপে আমার বিরুদ্ধে ব্যানার লাগানো হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা চলছে। অবশেষে বিশ^ মিডিয়ায় প্রকাশ পেলো, দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের প্রতিবাদে পূজামন্ডপে কালো ব্যানার স্থাপণ করেছে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের ৮টি সংগঠন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।