নিজস্ব সংবাদদাতা :
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর কথা ও কাজে মিল নেই। তিনি মুখে বলেন এক আর কাজ করেন আরেক। ফলে নগরবাসী তাঁকে মিথ্যেবাদী বলার সুযোগ পাচ্ছে। নির্বাচন এলেই তিনি নগরবাসীকে জুজুর ভয় দেখিয়ে থাকেন। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে দুঃসাহসী ভূমিকার কথা সিটি নির্বাচনের আগেই শোনা যায়। নগরবাসী মনে করেন, এসবের উদ্দেশ্য নির্বাচনী বৈতরণী পাড় হওয়া। নির্বাচন শেষ হলেই ভুলে যান সব। হয়ে যান আবার সেই আগের মতো। স্থানীয়রা জানায়, নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে পরিচয় দিতে যারা স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন তারাও এখন এক বাক্যে স্বীকার করেন সেই অবস্থান এখন আর নেই। নারায়ণগঞ্জকে এখন দেশের সবচেয়ে ধনী জেলা, ব্যবসা-বাণিজ্যের নগরী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন কট্টর সমালোচকরাও। সেই নারায়ণগঞ্জে পুরানো পন্থায় কথিত ‘জুজুর ভয়’ দেখিয়ে ফের নির্বাচনী বৈতরণী পাড় হতে মরিয়া বিদায়ী সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। যিনি নিজেকে সৎ, স্বচ্ছ, প্রতিবাদী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। তবে সম্প্রতি গণমাধ্যমে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত থেকে নগরবাসী নিশ্চিত হয়েছে আসলে এগুলো মিথ্যাচার, মুখের বুলি, মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা বিগত সময়ে সততার যে ফুলঝুড়ি মেয়র আইভীর মুখে ফুটে উঠেছে, সেগুলো নিতান্তই রাজনৈতিক বুলি। তারা আরও জানায়, মেয়র আইভী বিভিন্ন সভা সমাবেশে একাধিকবার বলেছেন, আমার কোন ব্যাংক একাউন্ট নেই, এক ভরি স্বর্ণও নেই আমার, সন্ত্রাস-খুনের বিরুদ্ধে আমি বলবোই, কোন শক্তিই আমাকে থামাতে পারবেনা। এসব বিশ^াস করে একসময় আমরা নগরবাসী গর্ববোধ করতাম যে, আমরা একজন সৎ, সাহসী রাজনীতিককে মেয়র পদে বসিয়েছি। কিন্তু যখনি মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলো একটি রাজকীয় বাড়ী। যাকে হোয়াইট হাউজ নামে চিনে নগরবাসী। সাধারণ ঘর থেকে কিভাবে হঠাৎ করে এমন বিলাসবহুল বাড়ী তৈরী হলো? এমন প্রশ্ন থেকেই যায়। আর একটি হত্যাকান্ড নিয়ে মুখে ফেণা তুললেও জেলার অন্যান্য চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড নিয়ে কোন কথা বলেন না তিনি। এরমধ্যে অন্যতম কাশিপুরের জোড়া হত্যাকান্ড। যে হত্যাকান্ডের মূলহোতা হিসেবে অভিযোগ করা হয় হাসান-মজিদ দুই ভাইকে। সেই সন্ত্রাসী পরিবারের বধূ প্যানেল মেয়র-১ বিভা, যিনি মেয়র আইভীর ঘনিষ্ট বান্ধবীখ্যাত। সম্প্রতি হেফাজতের ভাংচুর, জ¦ালাও পোড়াও মামলায় হাসান পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। কয়েকজন নগরবাসী জানায়, মিডিয়ার বদৌলতে আমরা অনেক কিছুই জানতে পারছি। যা অজানা ছিলো। মেয়র আইভীকে আমরা উন্নয়ণের রাণী বলেই জানতাম। কিন্তু তার কর্মকান্ডের প্রমাণসহ যেভাবে মিডিয়ায় এসেছে তাতে তাকে উন্নয়ণের রাণী নয়, ‘মিথ্যার মহারাণী’ মনে হয়েছে। তিনি মুখে বলেন এক, করেন আরেক। তাই পরিবর্তনের হাওয়া বইছে নগরীজুড়ে। ১৮ বছরের এই জঞ্জাল মুক্ত করে আমাদের সঠিক নীতি আদর্শের একজন মেয়র প্রার্থী দেওয়া হোক। যার কাছে ব্যক্তিস্বার্থের আগে নারায়ণগঞ্জের স্বার্থ প্রাধাণ্য পাবে। যিনি বিরোধে না জড়িয়ে উন্নয়ণের স্বার্থে সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন। তবেই বদলে যাবে নারায়ণগঞ্জ। এক সময়ের দেওভোগভিত্তিক চুনকা রাজনীতির অন্যতম ব্যক্তিত্ব, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের অর্থ উপ কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত নেতা কামাল মৃধা সম্প্রতি ফেইসবুক স্ট্যাটাসে ‘ঐক্যের অভাবে পিছিয়ে পড়া নারায়ণগঞ্জ ও সম্ভাবনাময় আগামীর নারায়ণগঞ্জে’র চিত্র তুলে ধরলে, তাতে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়। দেশ-বিদেশে অবস্থানরত নারায়ণগঞ্জের মানুষ স্যোশাল মিডিয়াতে নানা মন্তব্যে সহমত প্রকাশ করেন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।