বন্দর সংবাদদাতা
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের হল রুমে অনুষ্ঠিত চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)এর অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে জাতীয় শ্রমিক লীগের আইন ও দরকষাকষি বিষয়ক সম্পাদক, তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন এর সভাপতি (চতুর্থবার) ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন প্রধান বলেছেন, যেই তিতাস কোম্পানী এক সময় বিভিন্ন ব্যাংককে কোটি কোটি টাকা লোন হিসেবে প্রদান করতো। এখন সেই কোম্পানীরই ব্যাংক থেকেই লোন নেয়ার উপক্রম হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারী ভাই-বোনেরা অত্যন্ত পরিশ্রম করে, তিলতিল করে সারা বাংলাদেশে যেই তিতাস গ্যাস কোম্পানীকে একটি বৃহৎ কোম্পানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সেই কোম্পানীর বর্তমান অবস্থা এখন খুবই নাজুক। এসময় তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফকে উদ্দেশ্য করে বলেন আপনার কাছে আমার বিনীত অনুরোধ, জোর দাবি, আপনি পারবেন এই তিতাস গ্যাসকে রক্ষা করতে। এখন দিনদিন তিতাস গ্যাস বিলীন হতে চলেছে। আমাদের এই খবরটুকু আপনি জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট পৌছিয়ে দিন। তাহলে আমাদের শ্রমিক কর্মচারীরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবেন। আমরা এই অবৈধ থেকে রক্ষা চাই। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের হল রুমে অনুষ্ঠিত চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ)এর অভিষেক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কাজিম উদ্দিন প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর কুতুব আলম মান্নান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, তিতাসগ্যাস অফিসার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি প্রকৌশলী সেলিম মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম তারেক, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম হাওলাদার, তিতাসগ্যাস কর্মচারী ইউনিয়ন এর সহসভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আয়েজউদ্দিন আহাম্মেদ, অর্থ সম্পাদক ফারুক হোসেন শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক রতন বসু, দপ্তর সম্পাদক মজিবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হারুন অর রশিদ। অনুষ্ঠানে কাজিম উদ্দিন প্রধান আরো বলেন, করোনার শুরুর দিকে বাংলাদেশে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল সে সময় আমাদের ব্যাংকে একটি টাকাও জমা না হওয়া সত্তে¡ও এলএমজি গ্যাস আমদানীর জন্য আমাদেরকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছিল। আমরা যে টাকায় এলএমজি গ্যাস ক্রয় করি তার অর্ধেক টাকায় তা বিক্রি করি। তিতাসের বর্তমান আর্থিক অবস্থা শূন্যের কোঠায়, আর যদি একমাসও সাধারণ ছুটি থাকতো তাহলে তিতাস গ্যাসের কর্মচারী ভাই-বোনেরা বেতন পেতেন না। বেতন দিতে হলে ব্যাংক থেকে লোন করার প্রয়োজন হতো। তিনি বলেন, মানুষজন রাস্তা-ঘাট, খেত-খামারসহ বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে তিতাস গ্যাসের বাইরের লোক দ্বারা, বাইরের কন্ট্রাক্টর দ্বারা এবং কিছু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে তারা এইসব কাজ করেন। আমাদের তিতাস গ্যাস এর কর্মকর্তা কর্মচারীরা যখন সে অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করতে যায় তখন সেইসব গ্রাহকরা মসজিদের মাইকের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে আশেপাশের মানুষসহ মা-ভাই-বোনেরা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠি-সোটা নিয়ে আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের, আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশদেরসহ মারধর করার নজিরও আছে। তিনি বলেন, আমরা অবৈধ গ্যাস চাই না। আমরা তিতাস গ্যাস এর কর্মকর্তা কর্মচারী কেউ-ই অবৈধ গ্যাসের সাথে জড়িত না, তাই আমরা অবৈধ গ্যাস চাই না। আমি মন্ত্রীমহোদয়ের সাথে বলেছি, আমার কমকর্তা কর্মচারীদের কেউ যদি অবৈধ গ্যাসের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে। প্রয়োজনে তাদের কারাগারেও নিক্ষেপ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এ ধরণের কাজগুলো করছে তারা কোন নির্দিষ্ট দলের না। তারা সবাই একজোট হয়ে এগুলো করছে। গণতন্ত্রের দেশে এরকম হতে পারে না। বর্তমানে লক্ষ লক্ষ অবৈধ গ্রাহক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে যখন অবৈধ গ্যাস বৈধ করার জন্য ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই সময় হাজার হাজার গ্রাহক তাদের অবৈধ লাইনকে বৈধ করার জন্য চেয়েছিল। হয়তো তাদেরকে তিতাস গ্যাসের বিলের কাগজ ধরিয়ে দিতে হবে, নাহলে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদেরকে রক্ষা করতে হবে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।