Logo
HEL [tta_listen_btn]

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জের  চরম নিরাপত্তাহীনতায় পাইনাদিবাসী

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জের  চরম নিরাপত্তাহীনতায় পাইনাদিবাসী

সিদ্ধিরগঞ্জ সংবাদদাতা
কখনো অন্যের মালামাল চুরি করে আবার কখনো নানা ফন্দি করে টাকা হাতানো তাদের পেশা। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতেও সাহস পান না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও তারা মানেন না।একাধিকবার তাদের বিরুদ্ধে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। তবে সবকিছুকে উপেক্ষা করেই তারা একের পর এক চালিয়ে যাচ্ছেন অপকর্ম। এরা সবাই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের বাসিন্দা। সম্প্রতি একটি ঘটনার সূত্র ধরে তাদের এ বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন-সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকার করিম বাদশাহ, দুলাল, আশিক, জুনায়েদ, মন্টু, শুভ, আসিফ ইকবাল, সাগর, গাফ্ফার, সালাউদ্দিন সালু, লিটন, রুহুল আমিন, শাহরিয়ার, সোহাগ ও মেহেদী। ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সবশেষ গত ৯ ফেব্রæয়ারি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকায় চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে সংঘবদ্ধ হয়ে ডাকাতি করেন তারা। প্রথম দফায় চুরি করে পার পেয়ে গেলেও দ্বিতীয় দফায় তারা আবার চুরি করতে যান। এলাকাবাসী চোর বলে ধাওয়া দেয়। পরে তারা দলবল নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে মারধর করে সবকিছু লুটপাট করেন। এ ঘটনায় রাতেই থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নেয় ভুক্তভোগী পরিবার। তবে পুলিশ প্রথমে মামলা না নিয়ে শুধু একটি অভিযোগপত্র নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা পর ১০ ফেব্রæয়ারি রাতে মামলা নেয় পুলিশ। মামলায় আশিক (১৮), সালাউদ্দিন সাল্লু (৩৩), আব্দুল আওয়াল (৫০), করিম বাদশাহ (৩১), দুলাল (৩৫), জুনায়েদ (২৫), মন্টু (১৮), শুভ (১৮), আসিফ ইকবাল (৩২), সাগর (২৪), গাফ্ফার, লিটন (৩৮), রুহুল আমিন (৩৬), শাহরিয়ার (২৫), সোহাগ (২৭) ও মেহেদীসহ (২৮) অজ্ঞাতপরিচয় মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়। ৯ ফেব্রæয়ারি হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা শওকত ওসমান বলেন, আগের দিন তারা আমার বাসার জানালার গ্রিল চুরি করে নিয়ে যায়। তখন আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পারিনি। এর পরদিন আবার তারা আমার বাসায় চুরি করতে আসে। তখন আমরা তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলি। এ খবর পেয়ে এলাকার আরও লোক মিলে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে তারা আমার বড় ছেলে ফয়সাল হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। তাকে ছাড়িয়ে নিতে বাসার ভাড়াটিয়া জিসান এগিয়ে এলে তার ওপরও হামলা করে। আমি ও আমার ছোট ছেলে ফাহিম হোসেন শুভ এগিয়ে আসি। এরপর আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করে। মারধর করতে করতে বাড়ি থেকে তুলে রাস্তায় নিয়ে যায়। যা রাস্তার একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে সংরক্ষিত হয়।’ আহত ফাহিম হোসেন শুভ বলেন, ‘৯ ফেব্রæয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় অতর্কিত আমাদের বাসায় হামলা চালানো হয়। বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাসায় হামলা করে স্বর্ণালংকার ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।’ এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করলেও একজন জামিনে বের হয়ে এসেছেন বলে জানালেন হামলার শিকার ফয়সাল হোসেন। তিনি বলেন, বাকিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এ ঘটনায় পুলিশ নিস্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেন ফয়সাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পুলিশ ২৪ ঘণ্টা পর মামলা নিলেও মামলার মধ্যে বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে মামলাকে হালকা করে দিয়েছে। পুলিশ মামলায় আমাদের “ছুরি দিয়ে জখম” করার কথা না লিখে “বাঁশ দিয়ে আঘাত” করার কথা লিখেছে।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত করিম বাদশাহ ও দুলালের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, ‘এ মামলায় গ্রেফতাররা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কাউকে ছাড় দেবো না।’ জানতে চাইলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম বার বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন। দোষীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com