Logo
HEL [tta_listen_btn]

বক্তাবলিতে ফসলি জমি পানির নিচে

বক্তাবলিতে ফসলি জমি পানির নিচে

ফতুল্লা সংবাদদাতা
আশা করেছিলাম এবার হয়তো ভালো ফসল পাবো। লাভের মুখ দেখা যাবে। কিন্তু তা আর হলো না। বন্যার পানি সব ডুবিয়ে দিলো। এখন লাভ তো দূরের কথা, মূলধনই উঠাতে পারবো না। নিজের ফসলি জমির পাশে দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের বক্তাবলী এলাকার কৃষক আরিফুল ইসলাম। তার সব ফসল পানির নিচে। আর কিছুদিন পানি থাকলে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ অবস্থায় ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করে চোখে অন্ধকার দেখছেন কৃষক আরিফুল। সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে দেশের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীর পানিও প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধলেশ্বরী নদীর পানিতে বক্তাবলীর পশ্চিম কানাইনগরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। আলীরটেকের পূর্বগ্রাম এলাকার ফসলি জমিও পানিতে নিমজ্জিত। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নকে কৃষিজমির আবাদভূমি বলা হয়। এখানকার ফসল নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকার চাহিদা মিটিয়ে থাকে। সদর উপজেলার ৩ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমির মধ্যে বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নেই অন্তত ২ হাজার হেক্টরের বেশি পরিমাণ কৃষি জমি রয়েছে। বর্তমানে বন্যার পানিতে ফসলি জমিগুলো তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার বেশিরভাগ কৃষকই ঋণ করে বর্গা নেওয়া জমিতে ফসল ফলান। এসব জমিতে বন্যার পানি উঠে পড়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। লাভ তো দূরের কথা, ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আহাদ বলেন, কয়েকশ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে ঢেঁড়শ, পুইশাক, ধুন্দল ও বিভিন্ন ফসল চাষ করেছিলাম। এতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এই কয়দিনের পানিতে সব তলিয়ে গেছে। ঢেঁড়শ এখনো পানির ওপরে রয়েছে। ঢেঁড়শ দিয়ে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছি। তবে পানি যেভাবে ৪০ বিঘা জমিতে পাট, ঢেঁড়স, ধুন্দল, বেগুন ও আমন ধানের চাষ করছিলেন কৃষক ওয়াদুদ মিয়া। বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গেছে। এতে তার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে বলে জানান তিনি। কৃষক আব্বাস আলী বলেন, প্রতিবছরই বন্যার কারণে ধলেশ্বরী নদীর পানি বাড়ে। তবে সেটা আমাদের ফসল তোলার পর। কিন্তু এবার আগেই পানি বেড়ে গেছে। যে কারণে আমরা কৃষকরা বিপাকে পড়ে গেছি। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাহমুদ হাসনাত বলেন, বৃষ্টি এবং নদীর জোয়ারের পানি বাড়াতে থাকায় কিছু ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে পানি যদি কয়েকদিনের মধ্যে নেমে যায় তাহলে সমস্যা হবে না। যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে কৃষকরা হয়তো কিছুটা ক্ষতির মধ্যে পড়ে যাবেন। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. আব্দুল মাজেদ বলেন, আমরা উপজেলাগুলোতে চিঠি দিয়েছি। এখনো রিপোর্ট পাইনি। যে কারণে নির্দিষ্ট করে আপাতত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com