Logo
HEL [tta_listen_btn]

হজ্বের পর মাঠে নামবো শামীম ওসমান

হজ্বের পর মাঠে নামবো শামীম ওসমান

নিজস্ব সংবাদদাতা
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, হজ্ব শেষে দেশে ফিরে মাঠে নামবো। তরুণ ও যুবকদের সাথে নিয়ে কাজ করবো। ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে। বর্ষা মৌসুম শেষে কাজ ধরা হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) ফতুল্লার পাগলা বাজার বহুমুখী ব্যবসায়ী সমিতির ২৫তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাগলা বাজারস্থ প্রধান সড়কে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। শামীম ওসমান আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আর আওয়ামী লীগের সম্পদ নয়, তিনি এখন বাংলাদেশের সম্পদ। গোটা বিশ্বে তিনি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। তিনি আরো বলেন, মানুষ চায় শান্তিতে ঘুমোতে। কেউ মানুষের শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটাবে, চাঁদাবাজি করবে, ইট-বালু, সিমেন্ট কিনতে জোর করবে, এটা আমি বরদাশত করবো না। এসব ক্ষেত্রে কোনো ছাড় হবে না। দেশের অন্যতম সেরা পুলিশ অফিসারকে আমরা ফতুল্লা মডেল থানায় পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুকে উদ্দেশ্য করে এই সংসদ সদস্য আরো বলেন, সেন্টু আগে বিএনপি করতো, এখন আওয়ামী লীগ করে। এটি তার মাথায় রাখতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছেন সেন্টু নিজে আওয়ামী লীগ করবে আর তার লোকেরা বিএনপি করবে, এটা হবে না। সেন্টুকে বলবো-সব নিয়ে আসুন আওয়ামী লীগে, একসাথে কাজ করি। পাগলা বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই কমিটির নেতৃব্ন্দৃ বেশ ভালো। তারা খুব ভালো কাজ করছেন। পাগলা বাজার বহুমুখী ব্যবসায়ী সমিতি সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, ফতুল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ রিজাউল হক দীপু, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী চেয়ারম্যান, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী জসিম উদ্দিন, জেলা শ্রমিক লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহ-সভাপতি সিকদার মো. হক, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুর রহমান পিন্টু, কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর হোসেন মীরু প্রমুখ। ,অপরদিকে, বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে সম্মাননা পদক ২০২১ এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, অনেকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ডেফিনিশন দেন। মাথায় আস্তে আস্তে রক্ত উঠছে। যেদিন ফাইনাল রক্ত উঠে যাবে সেদিন কেউ থাকবে না মাঠে। যখন একটা মহিলার বাবা মা পুরে পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে, তিনি যখন সেখানে পৌঁছে নামাজ পড়তে চাইল তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সমস্ত গণতন্ত্রের চর্চা আমাদেরই করতে হবে। আমার ওপর বোমা হামলার পর আহত অবস্থায় একটা কথাই বলেছিলাম শেখ হাসিনাকে বাঁচান। তখন বলা হয়েছিল শেখ হাসিনার পরিবারের আইন পাস করার জন্য নারায়ণগঞ্জে আমরা এই বোমা হামলা করেছিলাম। তিনি বলেন, এ নারায়ণগঞ্জ ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনের পুরোধা ছিল। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু। তারপর ১৯৬৬, ৬৯ সালের আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলনসহ সকল আন্দোলনের প্রভাব ছিল নারায়ণগঞ্জে। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়লেই আপনারা এটা জানতে পারবেন। এই নারায়ণগঞ্জের বায়তুল আমানে আওয়ামী লীগের প্রথম মিটিংয়ের কথা চিন্তা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে যখন সেক্রেটারি করা হয় তখন তিনি জেলে ছিলেন। খন্দকার মোশতাকরা তখন থেকেই ষড়যন্ত্র করছিল। আমার দাদা তখন ধমক দিয়ে বলেছিলেন ওই সেক্রেটারি হবে। সেটার বিরুদ্ধে তখন আর কেউ কথা বলার সাহস পাননি। পরে তিনিই সেক্রেটারি হন। রাজনীতি মন থেকে করি মাথা দিয়ে নয়। যারা মন থেকে রাজনীতিটা করি তাদেরকে নানান সময় ধাক্কা খেতে হয়। সামনেও ধাক্কা আসবে এটা সত্যি। বিএনপির আমলে নারায়ণগঞ্জে জাহানারা ইমাম আসলেন তার শরীরে তখন ক্যানসার। আমি তখন কঠিন ছাত্রলীগ নেতা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা হয়েছি মাত্র। তখন এত ভাল লোক ছিলাম না। আমরা প্যালেস্টাইনের যুবকদের মত বড় হয়েছি তাই অন্যরকম একটা ব্যাপার ছিল। সেদিন নারায়ণগঞ্জে প্রচন্ড বৃষ্টি ও ঝড় হচ্ছিল। আমি জাহানারা ইমামকে মা ডাকতাম। সেদিন বক্তব্যে বলেছিলাম এই বৃষ্টি দেখেই যদি ভয় পাই দৌড় দেই তাহলে সামনে প্রতিরোধ করবেন কীভাবে। তারা বলার আগেই আমরা নারায়ণগঞ্জে একটা প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ করেছিলাম। তখনই হয়ত আমার ওপর বোম বøাস্ট হত। যেদিন আমরা প্রতীকী অনশন করি আমার মঞ্চের সামনে থেকে বিশাল বড় বোমাসহ একজন ধরা পড়েছিল। তাকে কী করা হয়েছে আমরা জানি না। তিনি আরো বলেন, বৃষ্টির মধ্যে সেদিন অনেক মানুষ আসলো। আমরা সুখের ঢেঁকুর তুলছি। সামনে সুখের সময় নয়। জাহানর ইমাম বক্তব্য শেষ করার পর আমাকে বললেন বাবা আমাকে একটু ধরো। তখন আমি তাকে ধরলাম তিনি আমাকে বলল আমাকে আরও শক্ত করে ধরো। তখন তিনি আমাকে বললেন তোমার মাকে যেভাবে ধরো সেভাবে ধরো। পরে আমি তাকে প্রায় কোলে করেই গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে আসলাম। তার চোখ এখনও ভাসে আমার সামনে। জাহানারা ইমাম আমাকে বললেন, আমার সমস্ত শরীরে ক্যান্সার দেশটারও ক্যানসার হয়েছে। দেশটাকে জড়িয়ে ধরো। এরপর নারায়ণগঞ্জে ঘোষণা দিলাম স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার আলবদরদের নারায়ণগঞ্জের পবিত্র মাটিতে প্রবেশ নিষেধ। এই এলাকার নাম হয়েছে সাইনবোর্ড। এখানে একটা সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছিল। ছাত্রলীগ নেতা নজরুল লাগিয়েছিল। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। পার্লামেন্টে গেলাম ঝগড়া হল একজনের সাথে। তিনি বললেন তোকে দেখে নেব। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডাকলেন ঢাকা আসো। তখন আমাদের কাছে লাইসেন্স করা অস্ত্র ছিল। আমরা ভাবলাম আসুক ওরা হাজার আসলেও আমরা ২ জনই যথেষ্ট। আমি ভেবেছিলাম সামনে থেকে কেউ গুলি করে মারবে। ১৬ জুন ২০০১ সালে এই জাহানারা ইমাম ভবন করার পরিনতি হিসেবে বোমা মারা হয়েছিল। আমার ২০টা ছেলের লাশ টুকরো টুকরো করে দেয়া হয়েছিল। চন্দন ও রতনের দুই পা নেই তাদের জার্মানিতে থাকার সুযোগ ছিল। কিন্তু তারা নারায়ণগঞ্জে ফিরে এসেছে এবং তখন থেকেই টেলিফোনে ভাষণ হয়। আমরা আরও আগে থেকেই ডিজিটাল ভাষণ দিয়ে থাকি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে মিছিল না এলে তিনি বাসা থেকে বের হতেন না। তিনি বলেন, দেশটাকে ভালবাসো। দেশ ভাল থাকলে সবাই ভাল থাকবে। বঙ্গবন্ধু শুধু আওয়ামী লীগের নয় পুরো জাতির। আর শেখ হাসিনা পুরো বাংলাদেশের সম্পদ। এসময় জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীলসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com