সোনারগাঁ সংবাদদাতা
সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার পরাজয়ের পেছনে উপজেলা আওয়ামী লীগের যগ্ম আহŸায়ক কায়সার হাসনাত, সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু দায়ী বলে মনে করেন নৌকার প্রার্থী শাহ সোহাগ রনি। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আরিফ মাসুদ বাবুর হয়ে প্রকাশ্যে ভোট চাওয়া এসব নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে এরইমধ্যে নালিশ করেছেন রনি। বুধবার (২২ জুন) দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবর প্রেরিত ওই চিঠিতে নৌকার পরাজয়ের কারণ তুলে ধরেন এবং নৌকার বিরোধীতাকারী এই ৪ নেতার আমলনামা তুলে ধরেন। চিঠিতে রনি উল্লেখ করেন, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহŸায়ক কায়সার হাসনাত দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে ২০১৮ এর জাতীয় নির্বাচনে মহাজোট এর প্রার্থীর বিরুদ্ধে সিংহ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছিল। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন এর নির্বাচনে উনার চাচা আরিফ মাসুদ বাবুকে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহŸায়ক কমিটির সদস্য থেকে পদত্যাগ করিয়ে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করিয়েছে। কায়সার হাসনাতসহ উনার ছোট ভাই সানজিত হাসনাত, ছোট চাচা মনির হোসেন, চাচাতো ভাই তানভীর হোসেন তান্না ও মারুফ মিনহাজসহ সকলেই প্রকাশ্যে নৌকার বিরোধীতা করে নৌকাকে পরাজিত করেছে। নির্বাচনের দিন প্রকাশ্যে নির্বাচনী বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস মার্কায় ভোট চেয়েছে, তার প্রমাণ ভিডিও ফুটেজে বিদ্যমান। ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের সময় এই পরিবারের সদস্যরাই বিএনপির সাথে প্রকাশ্যে নির্বাচন করে নৌকা পুঁড়িয়ে নৌকার প্রার্থী আবু নুর মোহাম্মদ বাহাউল হক সাহেবকে পরাজিত করেছিল। উনারা কেউ আওয়ামী লীগ করেন না, উনারা সকলেই ব্যক্তি স্বার্থের পারিবারিক। উপজেলা আ’লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামকে দলীয় শৃংঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে এর আগেও নৌকার বিরোধীতা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিল। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী প্রয়াত মোশারফ হোসেন এর বিরুদ্ধে ঘোড়া মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিল। সেই কালাম এবার বাবুর সাথে হাত মিলিয়ে নৌকার বিরোধিতা করেছে প্রকাশ্যে। কালামই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মূল নায়ক হিসেবে কাজ করেছে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী কায়সার হাসনাতের সাথে সিংহ মার্কার নির্বাচন করেছে এবং আজও মোগরাপাড়া ইউনিয়ন এর নির্বাচনে তার ব্যক্তিগত সন্ত্রাসবাহিনী নিয়ে আমাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করছে এবং জায়গায় জায়গায় গিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। নৌকার বিরোধিতা করেছে, নৌকার ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে, হামলা করেছে। নৌকাকে পরাজিত করার জন্য মূল ভূমিকায় কারিগর হিসেবে নিয়োজিত ছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহŸায়ক কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমের রক্তের সাথে মিশে আছে নৌকার বিরোধীতা করা। তার ভাই ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর প্রয়াত মোশারফ হোসেন এর বিরুদ্ধে ঘোড়া মার্কার নির্বাচন করেছে। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন এর নির্বাচনে তার ব্যক্তিগত সন্ত্রাসবাহিনী নিয়ে নৌকার বিরোধিতা করেছে। নৌকার ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে, ঘরবাড়ি ভাংচুর, লুটপাট করেছে, কর্মীদের মারধর করেছে, রাস্তা ঘাটে হামলা করেছে। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন এর নির্বাচনে এই ৪ জন প্রকাশ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রম করেছে।চিঠিতে তিনি দলীয় প্রধানের উদ্দেশ্যে আরও লিখেন, প্রিয় নেত্রী, আপনার দোয়া আমানত কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বিশেষের কারণে আমি রক্ষা করতে পারিনি। আমি বাাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মান রক্ষা করতে পারিনি। ৪৭% ভোট পেয়ে আমি বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছি। আমি লজ্জিত, আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার মোগরাপাড়া ইউনিয়ন এর আওয়ামী লীগের প্রাণ তৃণমূল নেতাকর্মীরা আজ নির্যাতনের শিকার। যারা সত্যিকার আওয়ামী লীগ, যারা নৌকার অন্ধ ভক্ত, যারা মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে আপোশহীন অকুতোভয় তারা আজ অত্যাচারিত। তাদের দোষ তারা কেন নৌকায় ভোট দিল। তারা কেন ব্যক্তিলীগ না করে আওয়ামী লীগ করল। আমার আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মী আজ হামলা ও নির্যাতনের শিকার, ব্যবসা বাণিজ্য লুটপাট, বসতবাড়ি ভাংচুর করছে। আপনি তাদের রক্ষা করুন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।