Logo
HEL [tta_listen_btn]

এনসিসি’র ৫শ’ ৮৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

এনসিসি’র ৫শ’ ৮৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

দেশের আলো রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (এনসিসি) এর ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের রাজস্ব ও উন্নয়নসহ ৫শ’ ৮৮ কোটি ৬৯ লক্ষ ১০ হাজার ৬শ’ ৩৮ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে মোট ৫শ’ ৮৮ কোটি ৬৯ লক্ষ ১০ হাজার ৬শ’ ৩৮ টাকা আয় এবং ৫শ’ ৫৯ কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৪শ’ ৭৯ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বছর শেষে ঘোষিত বাজেটে ২৯ কোটি ২৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ১শ’ ৫৯ টাকা উদ্বৃত্ত থাকবে। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সাড়ে ১১টায় আলী আহম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তনে তিনি এ বাজেট ঘোষণা করেন। এসময় এনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল আমিনসহ এনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ঘোষিত বাজেটে পানি সরবরাহ খাতে সর্বাধিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যানজট নিরসন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জরুরি ত্রাণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খেলাধুলার মানোন্নয়ন মাঠ নির্মাণ, রাস্তা, ড্রেন, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ, মশক নিধন, বৃক্ষ রোপণ সহ দারিদ্র বিমোচন খাতে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেটের বক্তব্যে সময়মত হোল্ডিং কর পরিশোধ করে শহরের উন্নয়ন কার্যক্রমে ভূমিকা রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।  শহরকে বসবাসযোগ্য ও সবুজশ্যামল রাখতে শহরবাসীর কাছে সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে মেয়র আইভী বলেন, শহরবাসীর জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট সংগ্রহে মানুষের ভোগান্তি হয়, এটা আমরা জানি। জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট শীঘ্রই নিজ নিজ ওয়ার্ড হতেসংগ্রহ করতে পারবেন। আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও আমাদের কাজ চলছে। নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে হতদরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষিত করে দক্ষ মানবগোষ্ঠী করার লক্ষ্যে কাজ করছি। যানজট নিরসনে ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্লান হবে। এডিবির সহয়তায় শীতলক্ষ্যার দু’পাড়ে বাধাই করার প্রকল্প হয়েছে। শহরবাসীর চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা থেকে অবকাঠামো উন্নয়ন সহ শীতলক্ষ্যা পরিচ্ছন্ন করার জন্য সব ধরনের কাজে আমরা হাত দিয়েছি। অনেকেই অভিযোগ করেন, আমাদের ড্রেনের পানি দিয়ে শীতলক্ষ্যা দূষিত হচ্ছে, কিন্তু সেটা মাত্র ২০ শতাংশ। বাকি ৮০ শতাংশ শিল্পকারখানা সহ অন্যান্য কারণে।
এই ২০ শতাংশও যেন দূষিত না হয়, এইজন্য আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আমরা ইটিপির মাধ্যমে পানি পরিশোধন করে শীতলক্ষ্যায় ফেলতে চাই। শিল্পকারখানার ইটিপি না থাকলে পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স পাওয়ার কথা না। কিন্তু কিভাবে পরিবেশের লাইসেন্স পায় আমার জানা নেই।
আমি নগর পরিকল্পনাবিদকে বলেছি, আমরা ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রাখব যতক্ষন না পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তারপরেও নদী দূষণ হচ্ছে। নদীকে বাঁচানোর জন্য সকলের কাছে আহŸান জানাচ্ছি। মেয়র বলেন, আপনারা খেয়াল করবেন সিটি এলাকায় কী পরিমাণ হকার বসে। মীর জুমলা রোড আর নেই। এত কিছু করে যে রোড আমরা উদ্ধার করেছিলাম। আপনারা আমাকে এক রকম নাস্তানাবুদ করেছিলেন। আমিতো সে রোড উদ্ধার করতে পারিনি। এনসিসির মীর জুমলা রোড টেন্ডার দিত না পরে যখন এনসিসির হল। সাময়িকভাবে যখন প্রশাসক ছিল তখন তারা টেন্ডার দিয়ে দিল। এখন সেখানে বাজার হয়ে গেছে। শায়েস্তা খান রোড তো পুরো কাঁচাবাজার। এর পেছনে কারা আপনারাও জানেন। প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া সেখানে কেউ বসতে পারে না। শহর পরিষ্কারের দায়িত্বে এনসিসির পুলিশ, এসপি সাহেবের, ম্যাজিস্ট্রেট ডিসি সাহেবের।  তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের মামলায় রিপোর্ট দিয়েছে। সেখানে বলা হয় এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে মেয়রের ওপর পিস্তল উচিয়ে আক্রমণ। তারপরেও বলে কিছু হয়নি। আপনারা সবাই চুপ। কারও সত্য বলার জো নেই। আমি একা হয়ে গেছি। আমার কাউন্সিলররাও আপস করে চলে। নয়তো মামলার আসামী হয়ে যাবে। মেয়র বলেন, আপনারা জানেন আমাদের চারটি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এর বাইরেও অনেকে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। বয়স্ক যারা আছেন তাদের চিকিৎসা সেবার জন্য আমরা কাজ করি। দেওভোগ আর্বান হাসপাতালে আমরা কিডনি ডায়ালিসিস চালু করেছি। সিদ্ধিরগঞ্জেও আমরা এটা চালু করতে যাচ্ছি। আমাদের ১৫নং ওয়ার্ডে আরেকটি হাসপাতাল ফ্রি স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এনসিসির হতদরিদ্র নারীদের পাচ্ছে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এমন নারী আছে যারা গাড়ি চালাচ্ছে। আমরা ক্ষুদ্র ঋণও দিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, যানজট স্থানীয় সরকারের অধীনে নয়। আপনারা বলবেন ভোট দিয়েছি দায়িত্ব আপনাদের। আলোচনা করে নারায়ণগঞ্জের জন্য ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান শুরু হচ্ছে। আমরা শহরের মধ্যে ট্রেন সার্ভিস চালু করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। মেয়র বলেন, আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, বাস ও ট্রাকস্ট্যান্ড শহরের বাইরে স্থানান্তরের জন্য জমি একোয়ারের আবেদন করেছি। এটা আপাতত আটকে আছে। তবে খুব শীঘ্রই এ কাজ শুরু হবে। হাইকোর্টের রায় আছে নদীর পাড়ের সব জায়গা স্থানীয় সরকারকে হস্তান্তর করতে হবে। এ বাজেটে কোনো নতুন ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়নি জানিয়ে মেয়র বলেন, বাস্তবতা অনুযায়ী বাজেট ঘোষণা করেছি। আপনাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন করতে চাই। আপনারা দয়া করে ট্যাক্স সময়মতো দেবেন। আপনারা গ্যাসের টাকা দেন, ইলেক্ট্রিসিটি বিল দেন। আমরা দিন—রাত পরিশ্রম করে আপনাদের জন্য কাজ করছি। আমি কর্মচারীদের বেতন কোথা থেকে দেব, ট্যাক্স না দিলে আমি আপনাদের কাক্ষিত সেবা দিতে পারবো না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com