Logo
HEL [tta_listen_btn]

দেখার কেউ নেই  ফতুল্লায় যত্রতত্র অবৈধ ফার্মেসী

দেখার কেউ নেই  ফতুল্লায় যত্রতত্র অবৈধ ফার্মেসী

দেশের আলো রিপোর্ট
লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ফার্মেসীতে সয়লাব ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে কোন পাত্তাই দিচ্ছে না এসব অবৈধ ফার্মেসীর মালিকপক্ষ। ফার্মেসী মালিকরা ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি হাতুড়ে ডাক্তারের ভূমিকায় নেমে পড়েন। তাদের অপচিকিৎসার শিকার হয়ে অনেককেই অকালে প্রাণ হারাতে হচ্ছে। এছাড়া তারা কোন প্রেসকিপ্সান ছাড়াই গ্রাহকের হাতে ঘুমের ট্যাবলেট ও নেশাজাতীয় ওষুধ বিক্রি করে থাকেন। ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গড়ে উঠেছে অনুমোদন বিহীন ফার্মেসী। শহরের বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীর ফার্মেসীগুলোতে কিছুদিন চাকরির সুবাধে নিজ এলাকায় গড়ে তুলেন নাম সর্বস্ব ফার্মেসী। ড্রাগিষ্টের কোন ধরণের অনুমতি ব্যতিত অবৈধ এ ফার্মেসীগুলো থেকে ওষুধ সরবরাহ করায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। সূত্রে জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ, অনুমোদনহীন ও মানহীন ভুয়া কোম্পানীর ওষুধে সয়লাব হয়ে গেছে কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকা। এমন নানা অভিযোগ নিয়েই চলছে কুতুবপুরের অধিকাংশ ফার্মেসী। প্রশাসনের সঠিক নজরদারি না থাকায় ড্রাগ লাইসেন্স, কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই নারায়ণগঞ্জ কুতুবপুরের বিভিন্ন অলি-গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো। সরকারি রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়োটিকসহ সকল ধরণের ওষুধ বিক্রি করছেন ফার্মেসী মালিকরা। ফলে মানুষের জীবন রয়েছে মারাত্মক মৃত্যু ঝুঁকিতে। নারায়ণগঞ্জ ওষুধ প্রশাসনের সূত্রমতে, সরকারি ড্রাগ লাইসেন্সধারী ফার্মেসী আছে ৩ হাজার ৩শ’ ১২টি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ১শ’ ৩টি, সোঁনারগা উপজেলায় ৩শ’ ৪৮টি, আড়াইহাজার উপজেলায় ১শ’ ৩৭টি, বন্দর উপজেলায় ৩শ’ ৫৩টি এবং রূপগঞ্জ উপজেলায় ৩শ’ ৭১টি ফার্মেসী রয়েছে। এর বাইরে বিনা লাইসেন্স ও শিক্ষাগত যোগ্যতাবিহীন ফার্মেসিস্ট ছাড়াই কয়েক হাজার ফার্মেসী গড়ে উঠেছে। লাইসেন্সধারী বেশিরভাগ ফার্মেসীগুলোর ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও এক তৃতীংশ লাইসেন্স পুনরায় নবায়ন করা হয়নি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, রোগীদের মানসম্পন্ন ওষুধ পাওয়ার এবং ওষুধের যৌক্তিক ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে ফার্মেসী এবং ওষুধের দোকান স্থাপন ও পরিচালনার জন্য নির্দেশিকা রয়েছে। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী মডেল ফার্মেসীতে (লেভেল-১) কমপক্ষে একজন স্নাতক ডিগ্রিধারী ফার্মাসীস্ট থাকবেন, তাকে সাহায্য করবেন বাংলাদেশ ফার্মাসীস্ট কাউন্সিল থেকে প্রশিক্ষণ নেয়া বিভিন্ন পর্যায়ের ফার্মাসীস্ট। মডেল মেডিসিন শপে (লেভেল-২) থাকবেন কমপক্ষে ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসীস্ট। বাংলাদেশ ফার্মাসীস্ট কাউন্সিল থেকে প্রশিক্ষণ নেয়া বিভিন্ন পর্যায়ের ফার্মাসীস্ট তাকে সহায়তা করবেন। প্রশিক্ষণ নেই এমন কেউ ফার্মেসী বা ওষুধের দোকানে ওষুধ কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না, এমন কঠোর নির্দেশনাও রয়েছে। ওষুধ প্রশাসনের কড়া নির্দেশনা থাকলেও সরজমিনে কুতুবপুরের একাধিক ফার্মেসীতে ঘুরে ভিন্ন এক চিত্র দেখা যায়, ডিগ্রিধারী, ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসীস্ট ও ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই চলছে শত শত ফার্মেসী। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এসব ফার্মেসী থেকে বিক্রি হচ্ছে ওষুধ। অধিকাংশ ফার্মেসীগুলোতে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ছারপত্র ও নেই।  এছাড়া বড় বড় ফার্মেসীর ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও সেখানে নেই দক্ষ ফার্মাসিস্ট। কুতুবপুর ইউনিয়নে গড়ে ওঠা ফার্মেসীগুলোতে এই চিত্র দেখা যায়। লাইসেন্সবিহীন এসব ফার্মেসী থেকে নি¤œ আয়ের মানুষের চিকিৎসা গ্রহণের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কোনো ধরণের কেমিস্ট বা ফার্মাসিস্ট না থাকলেও সব ধরণের রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এসব ফার্মেসীতে প্রায়ই ছোট ছোট অপারেশনও করানো হয়। একাধিক ফার্মাসিস্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোফস্বলের ফার্মেসীগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। সেখানে তদারকির কোন ভয় নেই। যে যার যার ইচ্ছেমতো ওষুধের ব্যবসা পরিচালনা করছে। শহরে মাঝে মধ্যে পরিদর্শন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা হলেও মোফাস্বলে তদারকির কার্যকর ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নারায়ণগঞ্জ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পরিচালক শাহজাহান খান এ বিষয়ে বলেন, আমরা প্রায়ই প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানিয়েছি লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রশাসন থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু এই অভিযানের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। মানুষের মাঝে ভয় নাই।  আমরা একাধিক বার এই বিষয়ে জেলা ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। বিভিন্ন সভায় বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছি। আমরা চাই অনুমোদনহীন নকল, মেয়াদোত্তীর্ণ ও নি¤œ মানের ওষুধ বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। নারায়ণগঞ্জ ওষুধ প্রশাসনের সহকারি পরিচালক মাহমুদ হাসান ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসী প্রসঙ্গে বলেন, ড্রাগ লাইসেন্স ও স্নাতক ডিগ্রিধারী ফার্মাসীস্ট কিংবা ডিপ্লোমাধারী ফার্মাসীস্ট ছাড়া ফার্মেসী পরিচালনা নিষিদ্ধ। বিধি-নিষেধের মেনেই ফার্মেসী পরিচালনা করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com