Logo
HEL [tta_listen_btn]

বন্দরে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনকালে এমপি সেলিম ওসমান  বন্দর থেকেই স্মার্ট বাংলাদেশের সূচনা করলাম

বন্দরে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনকালে এমপি সেলিম ওসমান  বন্দর থেকেই স্মার্ট বাংলাদেশের সূচনা করলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার স্মার্ট বাংলাদেশের সূচনা আমরা এখান থেকে শুরু করলাম। হয়তো আমরা তেমন কিছু দেখতে পারবো না, কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখবে। আমি আশা করি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একদিন এই দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বন্দরের সমরক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় স্থানটিতে যুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানিয়ে ‘নারায়ণগঞ্জ স্মৃতিসৌধ’ এর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বন্দর উপজেলায় সমরক্ষেত্র মাঠে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই ভিত্তিপ্রস্থর উদ্বোধন করা হয়। ভিত্তি ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন শেষে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য খুব আনন্দের। কারণ দীর্ঘ ৫০ বছর পর আমরা চিন্তু করতে পারছি যে আমরা এখানে একটা স্মৃতিসৌধ বানাতে পারবো, যার মাধ্যমে মানুষ জানতে পারবে আমাদের দেশ কেনো স্বাধীন হয়েছে, কেনো আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, কেনো বঙ্গবন্ধু আমাদের যুদ্ধের জন্য ডাক দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাংলাদেশকে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নতমানের স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দিবেন। তারই জন্য আমাদের জেলা প্রশাসক অতন্ত জরুরিভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন, এই স্মৃতিসৌধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জানতে পারবে কেনো আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। যুদ্ধের আসল ইতিহাস কি। তিনি আরও বলেন, আমাদের জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন মিলে এখানে স্মৃতিসৌধ তৈরী করছে। আমরা এটা বানাতে সকলের সহযোগিতা চাইবো। শুধু ফুল দেয়ার জন্য এই স্মৃতিসৌধ বানাবো না। মানুষ যাতে এই স্মৃতিসৌধ দ্বারা শিক্ষা নিতে পারে মুক্তিযুদ্ধের সেটাই আমাদের সাফল্য। আমরা এখন ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করলাম। আশা করি আগামী মার্চ মাসের মধ্যে এটা সম্পূর্ণভাবে গড়ে তুলবো। সেলিম ওসমান বলেন, এই স্মৃতিসৌধে বন্দরের মুক্তিযুদ্ধে কি কি হয়েছে, কারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, সমস্ত ইতিহাস এখানে তুলে ধরবো। শুধু বন্দরের না, সারা নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস এখানে তুলে ধরা হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, সকলের সহযোগিতায় আমরা স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু করেছি। এখানে যত টাকা ব্যয় হয়, আমাদের অভিভাবক ও স্থানীয় এমপি মহোদয় আছেন, তারা আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন। সরকারি বরাদ্ধ ছাড়া এটা স্থানীয়ভাবে করা হচ্ছে, তাই টাকার হিসেবটা আমাদের কাছে আপাতত নেই। তবে আমরা এখন কাজ শুরু করতে চাই। কাজ শেষ হলে বলতে পারবো এখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে কত টাকা লেগেছে। আমরা ভেবেছিলাম এখানে একটা মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘর বানাবো। কিন্তু যেহেতু একটা খেলার মাঠ আছে সেটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই আমরা অন্য কোন স্থানে করার চেষ্টা করাবো। তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা, অনেক বোধগম্য রয়েছে। এখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। কিন্তু মানসম্মত কোন স্মৃতিস্তম্ভ বা স্মৃতিসৌধ নেই। আর সেটা নিয়েই বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আবেগের কথা বলেছেন। তাদের দাবিতেই আজ আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটা হলে মানুষ উপকৃত হবে। মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারবে বা ইতিহাস জানার একটা জায়গা তৈরী হবে। আর এখান থেকেই নারায়ণগঞ্জের মানুষ ইতিহাসকে আবার নতুন করে জানার সুযোগ পাবে।
বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ বলেন, আজ যে স্থানে এই স্মৃতিসৌধ তৈরী করা হচ্ছে এটা একটা সময় ডোবায় পরিণত হয়েছিলো। এটা ছিলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ যুদ্ধের স্থল। এটা দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত পরিত্যক্ত ডোবা ছিলো। এই স্থানে প্রায় ১১জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন ও ১জন আহত হয়েছেন। এই জায়গাটা সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে আমরা প্রয়াত সাংসদ নাসিম ওসমানের কাছে বলেছিলাম, কিন্তু তার হঠাৎ মৃত্যু হওয়ায় তারই ভাই বর্তমান সাংসদ সেলিম ওসমান এই জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করেন এবং অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে বাউন্ডারী করে দেন। আমরা দীর্ঘ ৪০ বছর পর এই জায়গাটা পাওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খুব আনন্দিত। এই জায়গায় স্মৃতিসৌধ বানানোর জন্য জেলা প্রশাসক ও এমপি সেলিম ওসমানকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের অর্থায়নে এই স্মৃতিসৌধ করা হচ্ছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোসা. ইসমত আরা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এইচ. এম. সালাউদ্দীন মনজু, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিএম কুদরত এ খুদা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুরাইয়া ইয়াসমিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার প্রধান, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সালাম মিয়া, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ, ধামঘড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com