Logo
HEL [tta_listen_btn]

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

দেশের আলো রিপোর্ট
হঠাৎ করেই শীত জেঁকে বসেছে। দিনব্যাপী কনকনে উত্তরের বাতাস আর ভোরের কোয়াশা শীতের তীব্রতায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। শীতের পোশাক ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ার জো নেই। কিন্তু শীতের তীব্রতা এতোই বেশি যে গরম কাপড়ও শীত ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ধনীদের কথা বাদ দিলেও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে কঠিন বিপাকে। তাদেরকে ঘরে বসে থাকলে চলে না। শীতকে মোকাবেলা করেই তাদেরকে রাস্তায় নামতে হয় পেটের তাগিদে। শীতের পোশাকের আশায় ধনীদের মুখের দিকে তাকিয়ে তারা হতাশ হচ্ছেন। খুব কম মানুষই তাদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছেন। কনকনে ঠান্ডা বাতাসে সৃষ্ট তীব্র শীতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। নারায়ণগঞ্জের ৫টি উপজেলাতেই তীব্র শীতের তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, পুরো জেলার মানুষই শীতে কাঁপছে। কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতে সমস্যায় পড়ছেন অনেকেই। গ্রামগঞ্জসহ শহরেও অনেকে আগুন জ্বালিয়ে শীতকে প্রতিহত করার চেষ্টা করছেন। গোটা শরীর গরম কাপড়ে ঢেকেও যেন শীত ঠেকানো যাচ্ছে না। ভোর রাত থেকে বেলা বাড়া পর্যন্ত সড়ক-মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে সকল যানবাহন। রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালকরা কনকনে ঠান্ডায় বেশি বিপাকে পড়েছে। ঠান্ডা বাতাসে ফাঁকা রাস্তায় হাত গুটিয়ে গাড়িতে বসে আছে এসব চালক, অনেকেই গাড়ির হ্যান্ডেল ধরে কাঁপছে। আবার ঠান্ডা বাতাসে কাজের খোঁজে ঘুরছে দিনমজুর। প্রতিদিন সকালে শহরের ২নং রেলগেট ও মন্ডলপাড়া পুলে বসে দিনমজুরের বেচাকেনা। শহরের লোকজন তাদের বাসাবাড়িতে কাজের জন্য এইখান থেকে দরকষাকষি করে দিনমজুর নিয়ে যায়। দেখা যায়, তীব্র শীতের প্রভাবে এসব খেটে খাওয়া দিনমজুর কোন কাজ পাচ্ছেন না। অসহায় মানুষগুলো ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে বসে আছেন, যদি কেউ কাজে নিয়ে যায় সেই অপেক্ষায়। ২নং গেট এলাকায় কাজের সন্ধানে দিনমজুর আয়জার আলী শীতের লম্বা সুয়েটার আর মাফলার পড়ে খালি চোখ দুটো বের করে বসে আছেন। তিনি বলেন, সকাল ৭টা থেকে বসে আছি, এখন পর্যন্ত কেউ কাজে ডাকছে না। শীতের জন্য কয়েক দিন থেকে কাজ-কাম একটু কমই পাচ্ছি। কাজ না পেলে চলবো কি করে?
শহরের চাষাঢ়া মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালক মজিবুর হোসেন বলেন, ক’দিন থেকে খুবি শীত পড়ছে, আর ঠান্ডা বাতাসে বাহিরে গাড়ি চলাতে পারছি না। কিন্তু কি করবো পেটের ক্ষুধা তো আর শীতের দাপট মানে না। বাড়িতে ছেলে-মেয়েরা আছে, একদিন রিকশা না বের করলে সংসার চলে না। সংসারের চাহিদা মেটাতে শীতে কাঁপলেও গাড়ি বের করেছি। সকালে কথা হয় একজন বাসচালক মোহম্মদ আলীর সাথে, তিনি বলেন, ২ থেকে ৩ দিন যাবৎ সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। সারাদিন তো নারায়ণগঞ্জ-বায়তুল মোকাররম পর্যন্ত থাকতে হয়, সব জায়গায় একই রকম ঠান্ডা বাতাস। বাতাসই বেশি কাবু করছে। হাত-পা বরফ হয়ে আছে গাড়ি চলাতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। সবজি দোকানদার সোহেল রানা বলেন, শীতে তো কাঁপছি, আবার সবজিতে পানি দিতে হয়। পানি তো আরও ঠান্ডা।ঠান্ডায় জীবন শেষ, ২ দিন থেকে সূর্যের মুখও দেখা যায়নি। যদিও এ বেলা ১২টার পর থেকে সূর্র্য উঠতে দেখা গেছে। তবে ঠান্ডা বাতাস কমেনি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধানজনিত কারণে যে শীতের তীব্রতা এটা আরও দু-একদিন থাকতে পারে। শনিবার থেকে হয়তো পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে সেটা স্থায়ী হবে না, দু-এক দিন পর হয়তো আবার পরিস্থিতি এমনই থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com