বন্দর সংবাদদাতা
চরম হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ এর আওতাধীন ২৬ ও ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় বন্দর উপজেলার গকুল দাসের বাগস্থ চৌরাস্তা খেলার মাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বন্দরে ২৬ ও ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ¦ আনোয়ার হোসেন বলেন, রাজনীতিতে আমার আর খোকন সাহার কোন লোভ লালসা ছিল না। আমার মা, বোন, ভাই ওআমার ছেলে সন্তানরা কোন দিন রাজনীতিতে আসবে না। এইটি আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলে দিতে চাই। কারণ উত্তরাধিকার হিসেবে রাজনীতিতে আগমন আমার পর আমার ছেলে, ছেলের পর নাতি ও নাতির পর পুতি এই যে রাজনীতির এ প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সম্পৃক্ত না। আমরা সেটা হতে পারি নাই। আমরা রাজনীতি করি, তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে। আমি যাদের নিয়ে রাজনীতি করি যাদের নিয়ে মিছিল করি, যাদের নিয়ে মিটিং করি যাদের নিয়ে আমি আন্দোলন সংগ্রাম করি, তারাই হলো আমার রাজনীতি ওয়ারিশ। তারা বাঁচলে আমিও বাঁচব। তারা হেরে গেলে আমিও হেরে যাব। এই হলো আমার ভাষণা এই হলো আমার কামনা। তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা খবর শুনে তৎকালীন তোলারাম কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি তা মেনে নিতে পারি নাই। আমি বঙ্গবন্ধু সান্নিধ্যে একবার এসে ছিলাম। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ যখন ছিল। তখন তোলারাম কলেজের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার ডাকে গিয়ে ছিলাম। টিফিনের পয়সা জড়ো করে তার রিলিফ ফান্ডে দিয়ে ছিলাম। তোমরা না খেয়ে টিফিনের টাকা আমার রিলিফ ফান্ডে জমা দিয়েছো তোমরা তো দুর্বল হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেছিলেন, লেখাপড়া করো। লেখাপড়া মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন কর। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত। তাই লেখাপড়া করে উন্নত হয়ে ছিলাম। আপনারা যেনে খুশি হবেন, নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ১৯৭০ সালে টেলেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে ঢাকা বোর্ডে উত্তীর্ণ হয়ে ছিলাম। আমার পরিবারে ইচ্ছা ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবেন। বিধাতা সহায়ক নয় বিধায় আজ রাজনীতিতে আমার পর্দাপন হয়েছে। আমি কখনো ভাবতে পারি নাই আমি আজ রাজনীতিতে পর্দাপন করব। আমি ভেবে ছিলাম আমি একজন ডাক্তার হবো, আমি একজন ভালো ইঞ্জিনিয়ার হবো। আমি ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হয়ে আমার পরিবারের মুখে হাসি ও সুনাম বৃদ্ধি করবো। আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম। আমি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতাম। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ আমি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনার জন্য আমি আমার বড় ভাইকে বলেছিলাম আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখতে চাই ও তার ভাষণ শুনতে চাই। আমি সেদিন গিয়ে ছিলাম। ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে সামনে গিয়ে ছিলাম। আমি উজ্জীবিত হয়ে ছিলাম বঙ্গবন্ধুর প্রতি। এত বড় মাপের একজন নেতা এত বড় মাপের একজন দেশ প্রেমিক তার মত যদি হতে পারতাম। তাহলে নিজেকে ধণ্যমনে করতাম। মনের অজান্তেই আমি বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ফেলেছি। আল্লাহ সহায়ক আমি তোলারাম ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হলাম। সে থেকে আমার রাজনীতি পক্রিয়া শুরু হলো। আওয়ামী লীগের জন্ম নারায়ণগঞ্জে। বঙ্গবন্ধুর কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। পৃথিবীর মধ্যে বিরল মাত্র ৯মাস যুদ্ধ করে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি। এখন অনেক দেশ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতা অর্জন করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, ১৯৭০ সালে নির্বাচনে আমরা ১শ’ ৬৯টি আসনের মধ্যে ১শ’ ৬৭টি আসনে নির্বাচিত হয়েছি। আমরা ১৯৯৬ সালে আবারও নির্বাচিত হই। ২০০৯ সালে আমার আবারও নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করি। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর থেকে সারা দেশে আমূল পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ মাধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ হচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা আসার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হত্যাসহ যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন করেছে। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ ওসমান গনীর সভাপতিত্বে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ এম.এ রশীদ। মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এড. হাবিব আল মুজাহিদ পলুর সঞ্চালনায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ¦ নূরুল ইসলাম চৌধূরী, যুগ্ম সম্পাদক জি.এম. আরমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য আলহাজ¦ আবেদ হোসেন, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী নূরুন নাহার সন্ধ্যা প্রমুখ। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ২৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল হোসেন। সম্মেলন শেষ মুহূর্তে ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলামের সমর্থকরা কমিটি ঘোষণা নিয়ে সম্মেলন স্থলে হট্টগোল শুরু করলে এসময় মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কমিটির নাম ঘোষণা না করেই সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।