দেশের আলো ডেক্স
টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) শুরু হয়েছে। প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি অংশ নিয়েছেন।ইজতেমার মুসুল্লিদের সঙ্গে জুম’আর নামাজে অংশ নিতে ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মুসুল্লিরা আসেন ময়দানে। দ্বিতীয় পর্বে জুম’আর নামাজ অনুষ্ঠিত হয় দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে। দ্বিতীয় পর্বে জুম’আর নামাজ পরিচালনা করেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) ইজতেমার ময়দানে ও ময়দানের বাইরের সড়কে সরেজমিনে দেখা যায়, একদমই স্বাভাবিক। জুম’আর নামাজের আগে থেকে আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী এলাকায় যানবাহনের চাপ নেই। মুসুল্লিরা পায়ে হেটে ময়দানে জুম’আর নামাজ আদায় করতে আসেন। তারা সরাসরি ময়দানের ভেতরে গিয়ে জুম’আর নামাজ আদায় করতে পেরেছেন। ভেতরের ময়দানও ছিলো অনেকটা খালি। যে কারণে দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমার ময়দানের বাইরের সড়কে নামাজ আদায়ে মুসুল্লিদের কোনো ভিড় দেখা যায়নি।
তবে এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে জুম’আর নামাজে মুসুল্লিদের ভিড়ে ময়দান ছিলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ। ময়দানের প্রবেশের পথগুলোও পরিপূর্ণ ছিলো। এরপর মুসুল্লিদের ভিড়ে আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী স্টেশন রোড, মিলগেট ও টঙ্গী ফ্লাইওভারও ছিলো মুসুল্লিতে ভরা। যা দ্বিতীয় পর্বে দেখা যায়নি। জুম’আর নামাজ আদায় করতে গাজীপুর মাওনা থেকে আগত মুসুল্লি বিল্লাহ হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে জুম’আর নামাজ আদায় করতে এসেছিলাম। কিন্তু ময়দানের ভেতরে যেতে পারিনি। অনেক ভিড় ছিলো। একপর্যায়ে ময়দানের বাইরে প্রধান সড়কে মুসুল্লিদের উপচে পড়া ভিড় হয়েছিল। আজও জুম’আর নামাজ আদায় করতে ময়দানে এসেছি। এবার ময়দানের ভেতরে গিয়ে নামাজ আদায় করেছি। প্রথম পর্বের তুলনায় দ্বিতীয় পর্বে মুসুল্লিদের পরিমাণ কম হয়েছে। বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১৫ জনের একটি জামাত ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে এসেছেন। তারা মাওলানা সাদ অনুসারী। এই জামাতের একজন সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ মাত্র ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। এখনও মুসুল্লিরা আসছে। আমাদের অঞ্চল থেকে অনেকে আসছেন। এবার ইজতেমায় পানি ও টয়লেটের কিছু সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। তবে মুসুল্লিদের চাপ বাড়লে এতে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে নিয়োজিত মুরব্বিরা জানিয়েছেন, এ পর্বে মাওলানা মুহাম্মদ সাদ কান্ধলভি আসার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি এবার আসছেন না। তবে মাওলানা সাদ না এলেও বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে ময়দানে উপস্থিত রয়েছেন তার বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী, মেঝো ছেলে মাওলানা সাঈদ বিন সাদ কান্ধলভী ও ছোট ছেলে মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ কান্ধলভী। এছাড়াও তাদের সঙ্গে মাওলানা সাদের জামাতা মাওলানা হাসানসহ ৭ জনের একটি জামাত ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই মিলে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ করেছি। দ্বিতীয় পর্ব আরও ভালোভাবে শেষ করতে চাই। প্রথম পর্বের চেয়ে আরও বেশি সতর্ক অবস্থায় আছি আমরা। তিনি বলেন, প্রথম পর্বের সব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয় পর্বে আরও বেশি নিরাপত্তা কীভাবে দেয়া যায়, সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি। ইজতেমার ময়দানে মুসুল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রয়েছে উল্লেখ করে জিএমপি কমিশনার বলেন, পোশাকে, সাদা পোশাকে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, স্পেশাল ইউনিট, র্যাব, কুইক রেসপন্স টিম, সিসিটিভি মনিটরিং, সবকিছু মিলিয়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এখানে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হবে না। পুরো মাঠ নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ, বিশ্ব ইজতেমা-২০২৩ এর প্রথম পর্ব ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিযে শেষ হয়। প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বাদ আসর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। আগামীকাল রোববার (২২ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।