Logo
HEL [tta_listen_btn]

ফতুল্লায় চোরাই তেলের রমরমা ব্যবসা

ফতুল্লায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে যমুনা ও মেঘনা ডিপোর তেল চোর সিন্ডিকেটের হোতারা। প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ এই তেল চোর সিন্ডিকেট চালিয়েছে যাচ্ছে তেল চুরির মহোৎসব।
ইতোপূর্বে জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাব এর কয়েক দফা অভিযান পরিচালনা করে চোরাই তেল সহ এই সিন্ডিকেটের বেশ কয়েকজন তেল চোরকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও আইনের ফাঁকে জামিনে বের হয়ে আবারও তারা তেল চুরিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। ফতুল্লা মডেল থানার ২শ’ গজ দূরে যমুনা ও মেঘনা তেলের ডিপো। তার সন্নিকটে গড়ে উঠা তেলচোরদের টং দোকানেই চলে দিন রাত চোরাই তেলের জমজমাট ব্যবসা।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়, যমুনা ও মেঘনা ডিপোর তেল চোর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন ফাজেলপুরের আবু সালাম ও জামাই ইব্রাহিমসহ বেশ কয়েকজন। এদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হচ্ছে টং দোকানের মাধ্যমে যমুনা ও মেঘনা ডিপোর তেল চোরের সিন্ডিকেট।
সরকারি ভাবে বিস্ফোরক লাইসেন্স না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব টং দোকানগুলোতে মজুদ রাখা হচ্ছে পেট্রোলিয়ামের মত ভয়ংকর জ্বালানী তেল। ইতোপূর্বে টং দোকানের মজুদ রাখা পেট্রোলিয়ামের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণে প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা এসব টং দোকান থেকেই চোরাই তেল ট্যাংলরীর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করা হচ্ছে বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, এক সময় যমুনা ও মেঘনা ডিপোর ট্যাংলরী ধোঁয়া মোছার কাজ করে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো। সময়ের বিবর্তনে উল্লেখিত তেল চোরেরা আজ তারা তেল চুরির মাধ্যমে বিশাল অর্থের মালিক বনে গেছেন। বর্তমানে তাদের রয়েছে গাড়ি, বাড়িসহ নামে বেনামে প্রচুর সম্পত্তি। তেল চুরির দায়ে ইতোপূর্বে বেশ কয়েকটি মামলার আসামী হয়ে একাধিক বার জেল যেতে হয়েছে এই তেল চোর সিন্ডিকেটের কর্তাব্যক্তিদেরকে। তারপরও তেলচুরি যেন তাদের কাছে মহৎ ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, এ সকল তেল চোরেরা প্রতিদিন ডিপো থেকে বের হওয়া ট্যাংলড়ি থেকে বিভিন্ন পন্থায় তেল চুরি করে মজুদ গড়ে তোলে। পরে তা বিভিন্ন শিল্প কারখানায় জেনারেটরে জালানী হিসেবে ব্যবহার করছে পাশাপাশি ফতুল্লা লঞ্চঘাট দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার তেল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেও হাতিয়ে নিচ্ছে প্রচুর টাকা।
তারা আরও বলেন, প্রতিটি পেট্রোল পাম্পে বিভিন্ন গাড়িতে প্রতি লিটারে যে পরিমাণে তেল কম দেয়া হয়ে থাকে তার একমাত্র কারন হচ্ছে এ গুনধর তেল চোরের সিন্ডিকেট। কারণ প্রতিটি ৯ হাজার লিটার ধারণ সম্পন্ন একটি ট্যাংলড়ি হতে সর্বনিম্ন ৪০ লিটার তেল চুরি করছে এবং সরকারি- বেসরকারী বিভিন্ন মিল-ফ্যাক্টরির জন্য নেয়া ট্যাংলড়ি থেকে ২ থেকে ৩ ব্যারেল তেল সরিয়ে ফেলছে এ তেল চোরের সিন্ডিকেট। এ তেল চুরির টাকা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তাব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলীয় ও শ্রমিক নেতার পকেটে ঢুকছে।
এ বিষয়ে যমুনা ও মেঘনা ডিপোর তেল চোর সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আবু সালামের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই এগুলো মিছা কথা। গাড়ির ড্রাইভাররা গাড়ি পরিষ্কারের সময় ২ থেকে ১ লিটার তেল পায় আমরা সেইগুলো কিনি। ইতোপূর্বে তেল চুরির দায়ে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভাই এগুলো ১৫ বছর আগের কথা। আমি এ কাজ (তেলচুরি) করিনা।
এ বিষয়ে যমুনা ও মেঘনা ডিপোর তেল চোর সিন্ডিকেটের অপর হোতা জামাই ইব্রাহিম বলেন, গাড়ির ড্রাইভারদের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লিটার করে তেল কিনি। ডিপোর ভিতরে মিটারম্যানদের কাছ থেকেও তেল চুরির ব্যবস্থা করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঐখান থেকে আমরা পাইনা। ঐগুলো হিমেল ও তার বাহিনীর সদস্যরা করে। ইতোপূর্বে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তেল চুরির দায়ে এমন জবাবে তিনি বলেন, ঐটা ফখরুদ্দিনের আমলে হয়েছে। তাছাড়া আমরা পুলিশ প্রশাসনকে টাকা দিয়েই এ রকম ব্যবসা ও অপরাধ করি। তাদের টাকা না দিয়ে কি এমন ব্যবসা করা যায় নাকি?


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com