মাহবুবুল ইসলাম সুমন
দেশের লুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যের সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শণ ও নতুন প্রজন্মকে এর সাথে পরিচয় করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে সোনারগাঁয়ে শুরু হওয়া মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের পর্দা নেমেছে। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লোকজ মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে লোকজ উৎসবের সমাপ্তী ঘোষণা করা হয়। ঋৃতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে এদিন লোকজ উৎসব হয়ে উঠেছিল বিভিন্ন বয়সী মানুষের মিলন মেলার কেন্দ্রস্থল।
বাংলাদেশ লোককারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে দেখা গেছে, বাসন্তী সাজে মনের মানুষের সাথে লোকজ উৎসবে এসেছেন উঠতি বয়স থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সি মানুষ। আনন্দের যেন কমতি ছিলনা মেলায় আগত দর্শনার্থীদের। সকাল থেকেই দেশ বিদেশের পর্যটকরা আসতে শুরু করে সোনারগাঁয়ে। পাশাপাশি মেলার সমাপ্তি উপলক্ষে স্থানীয়দেরও মিলনমেলার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠে মেলা ও লোকজ উৎসব প্রাঙ্গণ।
এবারের মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের ঐতিহ্যবাহী পণ্য প্রদর্শণ ও বিক্রির জন্য ৬৪টি স্টল স্থান পায়। এছাড়াও দেশী বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য দেয়া হয় বানিজ্যিক স্টল। মেলার পাশাপাশি লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন পরিবেশন করা হয় বাউলগান, কবিগান, পালাগান, জারি-সারি ও ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া গান এবং লোকজ নাটক। এছাড়াও স্থানীয় স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমে লোক জীবন প্রদর্শণীসহ গ্রামীন খেলাধুলা প্রদর্শিত হয়। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক একেএম আজাদ সরকার জানান, মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে অংশ নেয়া ঝিনাইদাহ ও মাগুরার শেলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ী, মণিপুরী তাঁত শিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের কাঠের কারুশিল্প ও নকশী কাঁথা, সিলেটের শীতল পাটি, বান্দরবান ও রাঙামাটির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির কারুপণ্য ও টাঙ্গাইলের বাঁশের কারুশিল্পসহ ৬৪ জন কারুশিল্পিকে দেয়া হয়েছে সনদপত্র, ক্রেস্ট ও শিল্পি সম্মানী। গত ১৬ জানুয়ারি শুরু হয় মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। মেলা প্রাঙ্গণ খোলা ছিল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।