Logo
HEL [tta_listen_btn]

খেজুরের বাজারে রোজার প্রভাব

শুধু রমজান নয়, সারা বছরই বেশ কদর থাকে বিদেশী ফল খেজুরের। তবে, রোজা এলেই এর চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুণ। উচ্চপুষ্টি সম্পন্ন এ ফলটি ইফতারের অন্যতম একটি আইটেম। দরজায় কড়া নাড়ছে মাহে রমজান। ইতোমধ্যেই বৃদ্ধি পেয়েছে নানা জাতের খেজুরের মূল্য। এতে ক্ষুব্ধ ক্রেতা ও বিক্রেতারা। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে নগরীর দ্বিগুবাবুর বাজার ও চাষাঢ়ায় বিভিন্ন ফলের দোকানে ঘুরে এরকম চিত্রই লক্ষ্য করা যায়। নানা জাতের খেজুর পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। রমজান আসলেই জানা যায় বিভিন্ন জাতের খেজুরের নাম ও দাম। গত বছরের তুলনায় এ বছর খেজুরের দাম কার্টন প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে ২শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতারা বলছেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও অত্যাধিক ভ্যাট দিয়ে ইম্পোর্টারদের বিদেশী বাজার থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে। সেজন্য বিদেশী ফল খেজুরের মূল্য বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে মরিয়ম জাতের খেজুরের কার্টন ৪ হাজার ৪শ’ টাকা, তিউনিসিয়া জাতের কার্টন ১ হাজার ৮শ’ টাকা, ডালবারালি ২ হাজার ৩শ’ টাকা, দাবাস ৩ হাজার ৬শ’ থেকে ৩ হাজার ৭শ’ টাকা, ফরিদা জাতের খেজুরের কার্টন ১ হাজার ৮শ’ টাকা, অজোয়া ৪ হাজার ৮শ’ টাকা ও জিহাদি ১ হাজার ৯শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
গত বছর রোজায় বাজারে মরিয়ম জাতের খেজুরের কার্টন ৩ হাজার ২শ’ থেকে ৩ হাজার ৩শ’ টাকা, তিউনিসিয়া ১ হাজার ৪শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা, ডালবারলি খেজুর ১ হাজার ৬শ’ থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা, দাবাস ২ হাজার ৮শ’ টাকা, ফরিদা জাতের খেজুরের কার্টন ১ হাজার ৬শ’ টাকা, অজোয়া ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ’ টাকা ও জিহাদি ১ হাজার ৫শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গত বছর সর্বনিম্ন দামে যে খেজুরটি বাজারে বিক্রি হতো ১০০-১৩০ টাকায়, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে দোকানে দোকানে বাহারি প্রকার খেজুরের দামের অধিক পার্থক্য নিয়ে ক্রেতাদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
নিতাইগঞ্জের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, খেজুর আমার অত্যন্ত প্রিয় ফল। খেজুর স্বাস্থ্যকর তাই নিয়মিত খাওয়া হয়। কিন্তু খেজুরের দাম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ায় ভালো মানের খেজুর কিনে পরিবারকে খাওয়ানোর সাধ্য হারিয়ে ফেলেছি। আর রোজা আসলে তো দোকানদাররা এমনিতেই খেজুরের দাম বাড়িয়ে দেয়।
দ্বিগুবাবুর বাজারে আসিফ ভূইয়া নামে একজন ক্রেতা বলেন, রোজা উপলক্ষে আমি খেজুর কিনতে এসেছি। ইচ্ছে ছিল ভালো মানের ৩ কেজি অজোয়া জাতের খেজুর নিব। খেজুর কিনতে এসে জানতে পারলাম, এখন দাম খুব বাড়তি। তাই পছন্দের খেজুর কিনা হলো না, অন্যজাতের খেজুর নিয়ে যেতে হবে।
চাষাঢ়ায় জিয়া হলের পেছনে ভ্যানে খেজুর বিক্রি করেন মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এখানে ৫ বছর যাবত খেজুরের ব্যবসা করি। বর্তমানে কাস্টমারের চাপ খুবই কম। গত বছর তুলনায় এ বছর খেজুরের দাম অনেক বেশি। কোনো উপায় না পেয়ে বাড়তি দামে পাইকারদের থেকে খেজুর কিনতে হচ্ছে। ঢাকার বাদামতলী থেকে বিভিন্ন প্রকারের খেজুর ২ থেকে ৩ বস্তা করে কিনে আনি। ১ কেজি বিক্রি করলে ৫০-১০০ টাকা লাভ হয়।
দ্বিগুবাবুর বাজারের রিফাত এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালেক বলেন, ইমপোর্টাররা আমাদের জানায় এখন বিদেশী ফল খেজুর আনতে তাদেরকে আগের চেয়ে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এছাড়া ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া ও খেজুরের দাম বাড়ার পেছনে অন্যতম একটি কারণ।
তিনি আরো বলেন, আগে আমরা রোজার এক মাস আগে মাল এনে স্টক করে রাখতাম কিন্তু এ বছর ইমপোর্টাররা অত্যাধিক দাম চাচ্ছে। তাই এবার গতবারের মত মাল আনতে পারছি না। এবারের রমজানে খেজুরের মূল্য আরো বাড়তে পারে বলে জানান এই বিক্রেতা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com