বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি সাব্বির আলম খন্দকারের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শোক র্যালি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার ফাউন্ডেশন। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে খুনিদের আটকের দাবিতে সমাবেশ ও শোক র্যালি বের হয়। এসময় সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, এড. তৈমূর আলম খন্দকার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, সাহাবুদ্দিন খন্দকার, শেখ মো. আমান, জয়নাল আবেদীন, আবুল কালাম আজাদ, মনোয়ার হোসেন শোখন, আইনজীবী নেতা এড. হামিদ ভাসানী, এড. বোরহান উদ্দিন সরকার, রানা মজিব, জুয়েল রানা, নাজমুল কবির নাহিদ, শওকত খন্দকার, আক্তার হোসেন খোকন শাহ, জুয়েল রানা, সুমন ভূইয়া, ইকবাল হোসেন, মোক্তার হোসেন, ফয়সাল মোল্লা, মো. শহিদ, মুসা, রানা মুন্সি, ওসমান গনি, সাইদুল, জুলহাস, প্রমুখ।
সমাবেশে এড. তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, নারায়ণগঞ্জ হল সন্ত্রাসের অভ্যায়ণ্য। ২০০৩ সালের ২১ অক্টোবর জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও ৪২টি প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভা হয়েছিলো। সেখানে ঝুট সন্ত্রাস মাদকসহ সমাজের বিভিন্ন অপরাধ নিয়ে বক্তব্য রাখেন সাব্বির আলম খন্দকার। ওই সভায় অনেক বড় ব্যবসায়ী নেতা ছিলেন, তারা কিছু বলেনি। সাব্বির বিকেএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যও ছিলেন। ওই সময় ও দাঁড়িয়ে বলেন, আমার জানাযায় অংশগ্রহণ করার আহবান জানিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য শুরু করছি। তিনি সন্ত্রাস ঝুট সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপরাধ তুলে ধরেন। এতে সন্ত্রাস চাঁদাবাজ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন এ্যাকশন শুরু হয়। এর জের ধরে সাব্বিরকে হত্যা করা হলো। তাকে এই হত্যার কারণে আপনারা প্রতি বছর স্মরণ করেন।
তৈমূর আলম আরও বলেন, হত্যার পর বিকেএমইএ থেকে আমাদের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান দিতে চেয়েছিল। আমরা সেই টাকাটি গ্রহণ করেনি, বলেছি তাকে (সাব্বির) সম্মানটুকু করবেন। আমরা টাকাটা চাই না। দুঃখের সহিত বলতে চাই, বিকেএমএইএ’র সভাকক্ষে সাব্বির আলম খন্দকারের নাম রাখা হয়েছিলো। তাকে উৎসর্গ করে তার নামে রাখা হয়েছিলো। আমি জানতে পারলাম, সেই নামটি এখন উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। বিকেএমইএ’র নতুন ভবনে তার নামকরণে সভাকক্ষ রাখা হয়নি। আমি সেলিম ওসমান এমপির সাথে কথা বলে বলেছি, আমরা আপনাদের কাছ থেকে কোন আর্থিক সহযোগিতা চাই না। সাব্বির গার্মেন্টস মালিকদের ঝুট সন্ত্রাসীদের হাত থেকে গার্মেন্টস মালিক বিকেএমইএ সদস্যদের রক্ষা করতে গিয়ে হত্যার শিকার হয়েছে। আপনারা নতুন ভবনে সাব্বিরের নামটি পুনরায় স্থাপন করুণ। চেম্বার অব কর্মাসে কাছে অনুরোধ করেছি, আপনারা সাব্বিরে ছবি স্থাপন করুণ। আগে চেম্বারে সাব্বিরের ছবি ছিলো, এখন সেই ছবিটি নেই। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সাব্বিরে জীবন গেলেও তাকে সম্মান না করলে আপনারা প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।
মাদক ইভটিজিং সন্ত্রাস চাঁদাবাজ নগরে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি কয়েকবার বলেছেন, মাদক নিমূল করবেন। এই দেশ থেকে মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজমুক্ত করতে হলে সাব্বিরের নামে শপথ নেন। তিনি যেভাবে আন্তরিকভাবে চেয়েছিলো, আপনার সেভাবে করুণ। শুধু লোক দেখানো ও পত্রিকায় কভারেজ নেয়া জন্য হলে মাদকমুক্ত হবে না।
নিহত সাব্বির আলম খন্দকারের মেয়ে ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, আমার বাবা হত্যার বিচার হবে। আসামীরা বার বার তারিখ দিয়ে বিচার দেরি করছে। আসামী বলেছে, তারা দেশের বাইরে ছিলো। কিন্তু হত্যাটি বিশেষ পরিকল্পিত ছিল, তারা পরিকল্পনা মতামতে দেশের বাইরে থেকে হত্যা করেছে আমার বাবাকে। তিনি আপনাদের সুশৃঙ্খল নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলা জন্য নিজের জীবন দিয়েছেন।
সমাবেশে ১৮ ফেব্রুয়ারিকে সন্ত্রাস ও মাদক বিরোধী দিবস ঘোষনার দাবি করে নেতাকর্মীরা বলেন, আজ যেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্বে সরকারসহ দেশবাসী কথা বলছে, সেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শহীদ সাব্বির আলম খন্দকার নব্বইয়ের দশক থেকেই সোচ্চার ছিলেন। তিনি মাঠ পর্যায়ে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় মাদক ও সন্ত্রাসের গডফাদারদের চক্ষুসূলে পরিণত হন। সমাজের ও দেশের চিন্তা করেই একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়েও অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েও তার হত্যার বিচার পাইনি তার পরিবার। বক্তারা সমাবেশ থেকে হত্যাকারীদের ফাঁসি ও নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাস ও মাদক মুক্ত করার দাবি জানান।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।