৪ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে বিনা নোটিশে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ফতুল্লায় ক্রোনী গ্রুপের রপ্তানীমুখী পোশাক কারখানা ক্রোনী অ্যাপারেলস লিমিটেডের অন্তত ৫৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কাশীপুর ইউনিয়নের হাটখোলা এলাকায় কারখানাটির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ে পৃথক লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
ক্রোনী অ্যাপারেলসের কর্মচারিরা জানান, মঙ্গলবার সকালে তারা অন্যদিনের মতো কর্মস্থলে গেলে কারখানার গেটে তাদের ছবি ও আইডি নম্বরসহ একটি নোটিশ ঝুলতে দেখতে পান। এতে বলা হয়েছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের চাকরিচ্যুত করেছে। তবে নোটিশে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো কারণ দেখানো হয়নি।
কারখানার আইটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহাদী হাসান বলেন, কোনো কারণ না জানিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের চাকরিচ্যুত করেছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪ মাসের বেতনও আমরা পাইনি। আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেছে, তারা আমাদের কেবল ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দিবে। এমনকি তারা আমাদের ২ মাস আগের তারিখের পদত্যাগপত্রে সই করার জন্য চাপ দিচ্ছে।
কারখানার স্টোর ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে কেউ কেউ এই প্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ বছর ধরেও চাকরি করছেন। শ্রম আইন অনুযায়ী চাকরিচ্যুত করার আগে আমাদের সকল বকেয়া ও ৩ মাসের অগ্রিম বেতন পরিশোধ করার কথা রয়েছে। আমরা আইন অনুযায়ী ন্যায্য পাওনা পরিশোধের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় প্রয়োজনে আমরা শ্রম আদালতে যাবো।
ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কারখানার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে কয়েকজন কর্মচারি ছাঁটাই করা হয়েছে। তবে, কার কত পাওনা রয়েছে তা আমরা হিসাব করছি। সকল কর্মচারিকে তাদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে। তাদের আপাতত এক মাসের বেতন নিতে বলা হয়েছে। বাকিটাও তাদের পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এরআগে গতবছরের ২৪ ডিসেম্বর ক্রোনী গ্রুপের আরেকটি কোম্পানী ক্রোনী টেক্স সোয়েটার লিমিটেডকে বিদেশী অর্ডার কমে গেছে উল্লেখ করে লে-অফ ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে পরদিন সকালে কারখানার কয়েকশ’ শ্রমিক ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ সড়কে বিক্ষোভ করে। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি অন্তত ৭ হাজার শ্রমিক-কর্মচারির বকেয়া পরিশোধ না করে একই গ্রুপের অবন্তী কালার লিমিটেড কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরে আযম বলেন, ক্রোনী অ্যাপারেলসের কর্মচারিরা তাদের ছাঁটাই এবং বকেয়া বেতনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।