Logo
HEL [tta_listen_btn]

রোজার আগেই ফলের দাম বৃদ্ধি

শহরের বাজারগুলোতে বাড়তি মূল্যের চাপে যখন মানুষ হাঁসফাঁস করছে তখন রমজান ঘিরে বাড়ানো হচ্ছে ফলের দামও। রোজা আসার আগেই দাম বাড়িয়ে দেয়ার কারণ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিকারকরা বিদেশী ফল বাজারে কম ছাড়ছেন এ কারণে দাম বাড়ছে। যদিও আমদানিকারকরা বলছেন, বাড়তি দামে বিক্রি করে সুবিধা নিচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। কিছুদিন আগে নাশপাতি ও ছোট কমলার শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এতে ওই দু’টি ফলের দাম বেড়েছে। কিন্তু অন্য ফলগুলোতে আগের মতোই আমদানি শুল্ক রয়েছে। এতে দু’টি ফল ছাড়া অন্যগুলোর দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব ফলের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। রোজার আগে শহরের বিভিন্ন দোকানের বিক্রেতারা অতি লাভ করা শুরু করেছেন। যেসব ফলের দাম বেড়েছে, তার মধ্যে সাউথ আফ্রিকার গালা আপেল বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
মালটা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা কেজি। যা ছিল ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। বেড়েছে ৪০ টাকা। চীনা ফুজি আপেল বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা। আগে ছিল ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। নাশপাতি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা ছিল। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজি। বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা।
মানভেদে সাদা আঙুর বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি, যা ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। বেড়েছে ২০ টাকা। মানভেদে কালো আঙুরের দাম ছিল ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি। বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ছোট ও মাঝারি আনার কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি।
এছাড়া দেশি ফলের মধ্যে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। চাম্পা কলা ডজনে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সবরি কলা ডজনে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আকারভেদে প্রতি পিস আনারস বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। পেয়ারা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।
মিশনপাড়া এলাকার বাগে জান্নাত মসজিদের নিচে ফল বিক্রি করেন মো. আরব আলী। দোকানের এই মালিক বলেন, প্রতি রোজার মধ্যে দেশে পণ্যের দাম বাড়ে। অন্য দেশে কমে। দাম বেশি হলে যেখানে ৫ কেজি নিতো সেখানে নেয় এক কেজি। এতে আমাদের বিক্রিও কমে যায়। বেশি দাম রাখলে মানুষ আসতে চায় না।
এই ব্যবসায়ী সাউথ আফ্রিকার গালা আপেল বিক্রি করছেন ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। মালটা ৩০০ টাকা কেজি, চীনা ফুজি আপেল ৩০০ টাকা, নাশপাতি ২৬০ টাকা কেজি, আফ্রিকান কমলা ৩৫০ টাকা, ভারতীয় কমলা ২৫০ টাকা, ছোট আনার ৩৫০ টাকা, মাঝারি আনার ৪০০ টাকা, তরমুজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। পেয়ারা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। তবে অন্যান্য বাজারে এর চেয়ে কিছুটা কমে পাওয়া যায়।
কালিরবাজারের একটি দোকানে ফল কিনতে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী মো. বদিয়ার সরদার। তিনি বলেন, আঙুর, আপেল আমদানি করে নিয়ে আসতে হয়। যা ডলারের দামের সঙ্গে ওঠানামা করবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এখন তো ডলারের দাম কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। তাহলে দাম বাড়ার তো কোনো কারণ নেই। ব্যবসায়ীরা রোজার আগে ইচ্ছা করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যাতে তখন বাড়ানো না লাগে। এতে অবশ্যই সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
ফল আমদানি-রপ্তানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ী সমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং বিকে ফুডসের স্বত্বাধিকারী শেখ আবদুল করিম বলেন, নাশপাতি ও কমলার আমদানি শুল্ক বেড়েছে। এছাড়া আর সব ফলের শুল্ক ৬ মাস আগে থেকে একই রকম আছে। ডলারের দামও স্থিতিশীল আছে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী রোজায় মানুষ বেশি কিনবে এমন চিন্তা করে মুনাফার সুযোগ কাজে লাগান।
জানা গেছে, দেশে ৭৮ ধরনের ফল উৎপাদন হয়, এর মধ্যে ১০ থেকে ১২টি প্রধান। দেশে প্রতিবছর ফলের চাহিদা প্রায় ৩ কোটি টন। এরমধ্যে পৌনে ২ কোটি টন আমদানি করতে হয়। বাকিটুকু দেশে উৎপাদন করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com