পবিত্র মাহে রমজান মাসে রোজার সময় সব পরিবারেই ইফতারিতে কম-বেশি ফল রাখেন। ভাজা-পোড়ার পাশাপাশি ফল খেয়ে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করেন সব শ্রেণীর মানুষ। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও এবার চড়া দামের কারণে ইফতারিতে বিভিন্ন রকমের ফল রাখা সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে।
নারায়ণগঞ্জের ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি কম আর রোজার শুরুতে চাহিদা অনেক বেশি বলেই ফলের বাজার চড়া। ফলে রোজায় এবারও ফলের বাজারে আগুন!
এদিকে বাজারে ফলের কমতি নেই। স্থায়ী দোকান থেকে শুরু করে পাড়া মহল্লায় ভ্যানে করেও ফল ফেরি করে বেড়ান অনেকে। সেসব ফলের চাহিদাও কম নেই ক্রেতাদের কাছে। আর চাহিদা বেশি থাকে বলে প্রতিবারই রোজার শুরুতেই ফলের বাজারে আগুন লাগবে এটাই যেন স্বাভাবিক। যদিও শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সব ফলের বাজারেই ভরা ফল। এবারও রোজা শুরু থেকেই বেড়ে গেছে তরমুজ, আঙুর, আপেল, মালটা, কমলা, আনার, নাশপাতি আর খেজুরের দাম।
এসময়ে বাজারে রসালো এবং মুখরোচক নানা স্বাদের ফলের অভাব নেই। তরমুজ, আপেল, বেল, বাঙ্গী, কলা, কমলা, মালটা, আঙুর, নাসপাতি, ডাব, পেঁপে, বরই, সফেদাসহ আরো কিছু ফলের দেখা মেলে বাজারে। কেবল কিনতে গেলেই দাম শুনে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসতে হয়। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে কেনেন সামান্য।
বাজারে সরবরাহ যথেষ্ট থাকার পরও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে খেজুর। ভিন্ন নামে, বিভিন্ন মানের খেজুরের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। ২শ’ টাকার নিচে বাজারে কোনো খেজুর নেই। সর্বোচ্চ খেজুরের কেজি ২ হাজার টাকারও বেশি। যদিও রোজার দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষে দাম অর্ধেক হয়ে যাবে বলে জানান পাইকারি ফল ব্যবসায়ীরা।
শহরের চারারগোপ ও দ্বিগুবাবুর বাজারের ফলের আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজানের কারণে প্রায় সব ফলের দাম বেড়েছে তুলনামূলক বেশি। রসালো ফল হিসেবে পরিচিত এক কেজি মালটার দাম ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা, কমলার কেজি ২৮০-৩২০টাকা, কেনু কমলা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, আঙুর কেজি ৩২০-৩৫০, আপেলের দাম কেজি প্রতি ২৫০ থেকে শুরু করে ৩৮০ কেজি টাকা, আনারের কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা, নেসপাতির কেজি ৩০০-৩২০ টাকা, ছবেদা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি, পেঁপে ১২ থেকে ১৫০ টাকা কেজি, বরুই ১০০ থেকে ১৫০ কেজি টাকা, পেয়ারা ৮০ থেকে ১০০টাকা কেজি। একটা ছোট্ট সাইজের তরমুজের ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আর মধ্যম সাইজের তরমুজের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। মাঝারি এক পিস আনারস ৫০-৭০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। একটি ছোট বেলের দাম ৩০-৫০ টাকা, বড় বেল ৭০-৮০, দেশি চম্পা কলার ডজন ১২০ টাকা, সাগর কলা ১২০-১৪০ টাকা, শবরী কলা ১৪০-১৬০ টাকা।
ফল কিনতে আসা একজন বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা শামীম আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, রোজার সময় সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার পর ইচ্ছে থাকলেও ফল কিনতে পারি না। তারপরও ছেলে-মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সামান্য পরিমাণে কিনতে হয়। ফলের দাম দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। প্রতিবছরই রোজায় ফলের দাম দ্বিগুণ করে ফেলেন ব্যবসায়ীরা।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।