নিজস্ব সংবাদদাতা
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এক বক্তব্যের সামলোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নাকি দৃষ্টতা। অথচ খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যে কতটা অন্যায়, কতটা অবিচার; সময় আসলে বাপধন টের পাইবা।’ সোমবার (১ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা মিথ্যা ও ভুয়া। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটা মামলাও সঠিক না। এসব মামলা প্রতিবেশীদের খুশি করার জন্য। খালেদা জিয়ার অপরাধ, তিনি দেশবিরোধী চুক্তি করতে নারাজ, তিনি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিতে রাজি নন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি।
গয়েশ্বর বলেন, স্বাধীন দেশে আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। প্রতিবেশী দেশের সাথে স্বার্থবিরোধী কোন চুক্তি নিয়ে কিছু বললেই আমাদের বলে আমরা নাকি ভারত বিদ্বেষী। একটা চক্রান্ত চলছে। আওয়ামী লীগকে ভারতের সেবাদাস বানানোর চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশে ফাঁসির আসামী ও খুনের মামলার আসামীর জামিন হলেও একমাত্র খালেদা জিয়ার জামিন হয় না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। খালেদা জিয়া জনগণের সামনে ৭টি বছর যাবত কোনো কথা বলতে পারছেন না। খালেদা জিয়ার বেরোলে এই সরকারের অস্তিত্ব থাকবে না। এই কারণে খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মারার ব্যবস্থা হচ্ছে। ভবিষ্যতে একটা পরিকল্পিত মার্ডার কেস হবে। মামলা খাইতে খাইতে এখন আইন বুঝি। আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ নাই, টাকা নাই, এইটা সেইটা বলে বিদেশে ভিক্ষা করে। আর জনগণের উপর ভ্যাট-ট্যাক্স বসায়। আপনার (শেখ হাসিনা) পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা ১-১৭ বছরে যা কামাইছেন বাংলাদেশ থেইকা তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেন, একটা টাকাও ট্যাক্স বাড়ানোর দরকার হবে না।
বাজেট আর প্রকল্প মানেই চুরি মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, নতুন কর্মসংস্থান নাই। আমদানি-রপ্তানি নিম্নগতি কিন্তু বিশাল একটা বাজেট করছেন। উন্নয়ন তো খয়রাত না, উন্নয়ন জনগণের অধিকার, জনগণের টাকায় হয়। সেই উন্নয়নের নামে তারা টাকা লুটপাট করে খায়। স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা তো করোনার সময়ের চেয়েও খারাপ। যেদিকে তাকাবেন সব খাতেই চুরি আর ডাকাতি।
ভারতকে করিডোর দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশের উপর দিয়ে ভারতের রেললাইন গেলে আমাদের কী লাভ হবে তাতো জনগণকে জানাতে হবে। এখন করিডোর শুরু হলে পরে নিরাপত্তার কথা বলে ভারতীয় আর্মি বাংলাদেশে ঢুকবে। আমাদের দেশ স্বাধীন করতে লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমরা পাকিস্তানের অত্যাচার ও অর্থনৈতিক বিষম্য মানতে পারলাম না কিন্তু এখন আমরা দিল্লীর গোলামি করি। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় দিতে না পারলে বাংলাদেশ নামে দেশটির নাম মানচিত্রে থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, বেনজির, আজিজ, মতি, সম্রাটদের মতো কত তালিকা যে আছে এইদেশে। ওদের নেত্রী আজকের প্রধানমন্ত্রী। এই প্রধানমন্ত্রী হচ্ছে এই চোর, ডাকাত, পাচারকারী আর লুটপাটকারী সকলের আড়তদার। এই আড়তদারের কাছে বিচার চেয়ে তো লাভ নাই। দুর্নীতি ছাড়া যাদের কোনো নীতি নাই, তারা বলেন, দুর্নীতিতে কোনো আপোস নাই, আহা! সময় আসলে সবকিছুর জবাব দিতে হবে। হুমকি বাদ দেন, ভদ্র হওয়ার চেষ্টা করেন।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহাম্মেদ টিটু, নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন প্রমুখ।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।