Logo
HEL [tta_listen_btn]

ঊর্ধ্বমুখি নিত্যপণ্যের বাজার

নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে নানা অজুহাতে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আমদানী কম বা বৈরী আবহাওয়া নতুবা উৎপাদন কম এমন সব যুক্তি দেখিয়ে বেড়ে যায় বিভিন্ন পণ্যের দাম। কিন্তু বাস্তবিকভাবে দাম বৃদ্ধির চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গেও আমদানীকৃত পণ্যের কোনো সামঞ্জস্য থাকে না। এছাড়া বর্তমানে প্রায় সকল পণ্য উৎপাদনেই স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। তবে ব্যবস্থাপনার অভাবে নষ্ট হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি উৎপাদিত শস্য। এদিকে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভুত নিত্যপণ্যসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় অসহায় ও দিশেহারা হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
ক্রেতারা বলছেন, সরকারের নজরদারির অভাবে বেড়ে চলছে নিত্যপণ্যের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়ে ভোক্তারা বলছেন নিয়মিত পণ্য বিক্রির পাইকারী ও খুচরা বাজার তদারকিসহ পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল ও সংরক্ষনাগের দিকে বিশেষ নজরদারি রাখতে হবে।
এদিকে টানা বৃষ্টি ও দেশের অনেক জেলায় বন্যা, উপরন্তু ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানী ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে কয়েকদিনের ব্যবধানে হু হু করে বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। বেড়েছে আলুর দামও। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজই বেশি বিক্রি হচ্ছে ১শ’ থেকে ১শ’ ২০ টাকা কেজি। আলুর কেজি সর্বনিম্ন ৬০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়লে পেঁয়াজ-আলুর দাম কমবে। তবে ডিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমেছে। দ্বিগুবাবুর বাজারে প্রতিডজন বাদামি রঙের ব্রয়লার ডিম বিক্রি হচ্ছে ১শ’ ৪০ থেকে ১শ’ ৪৫ টাকা। তবে বিভিন্ন এলাকায় প্রতি ডজন ডিম ১শ’ ৫০ থেকে ১শ’ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে বেশিরভাগ সবজি ও মাছের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। শহরের প্রধান পাইকারি কাঁচাবাজার দ্বিগুবাবুর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে কাঁকরোল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, গোল বেগুন ১শ’ টাকা, লম্বা বেগুন ৯০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, করোলা ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, গাজর ১শ’ টাকা, কচুরমুখী ১শ’ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৭০ টাকা, লেবু প্রতি হালি ৩০ টাকা এবং ঢেঁড়স ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে রসুনের দাম কমেছে, তবে বেড়েছে শসা ও টমেটোর দাম। দেশি ও আমদানী করা উভয় ধরনের রসুনে কেজিতে ১০-২০ টাকা দাম কমেছে। আর শসা ও টমেটোর কেজিতে ২০-৪০ টাকা দাম বেড়েছে। অন্যান্য সবজি ও মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজি বিক্রেতা উজ্জল বলেন, সবজির বাজারে কোন সরকারি মনিটরিং নেই। যে যেমন পারছেন দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। আমরা খুচরা বেচি। পাইকারিতেই যদি বাড়তি দামে কিনতে হয় তাহলে তো লোকসান করে খুচরায় সবজি বিক্রি করা যায় না।
কোরবানির ঈদের পর হঠাৎ করেই বেড়ে গেলেও এ সপ্তাহে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা বাজারে গত সপ্তাহে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল ৩শ’ ৫০ থেকে ৪শ’ টাকা কেজি দরে। এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১শ’ ৬০ থেকে ২শ’ টাকা কেজি দরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কম থাকে। এছাড়া বৃষ্টির জন্য খরচ বেড়েছে। তাই মরিচের দাম কখনও বাড়ে কখনও কমে।
আলী হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, বাড়তে সময় লাগে না, কিন্তু বেড়ে গেলে যেন আর কমে না সবজির দাম। আমাদের মতো মধ্যবিত্তের পরিবারে জন্য সবজি ও নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় খরচের হিসাব সীমিত করতে হয়েছে। মাছ-মাংস তো বাজারের তালিকা থেকে বাদ দিতেই হলো।
বাজারে ডিমের দাম কমলেও ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১শ’ ৭০ থেকে ১শ’ ৯০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২শ’ ৯০ থেকে ৩শ’ টাকার মধ্যে।
বাজারে মাছের দামও বাড়তি। প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২শ’ টাকা, রুই ৩শ’ ৫০ টাকা, পাঙাশ ২শ’ ২০ টাকা, সিলভার কার্প ২শ’ টাকা, শিং মাছ আকার ভেদে ৫শ’ থেকে ৭শ’ ৫০ টাকা এবং চিংড়ি মাছ ৬শ’ থেকে ১২শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com