Logo
HEL [tta_listen_btn]

ডিসির সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সভা

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সভা করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমির খশরু, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক ফারহানা আক্তার মুনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দিপু, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, হেফাজত ইসলামের মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়েতে ইসলামের আমির, সিপিবি, কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জে ঠিক কতজন নিহত হয়েছে এর তালিকা আমার কাছে এখনো নেই। আমি পুলিশকে অনুরোধ করবো, আমি সিভিল সার্জনকে বলে রেখেছি এবং সাংবাদিক ভাইয়েরা; আপনারা আমাদের এই তথ্য দিতে পারেন। আন্দোলনের বিভিন্ন মামলায় আজকে অনেকের জামিন কিন্তু হয়েছে। কারো যদি জামিন না হয় তাহলে তাদের তালিকাটা আমার কাছে দেয়ার জন্য বলবো। যাতে তারা ন্যায় বিচারটা পায়।
তিনি আরও বলেন, যারা রাজনীতি করেন, সুশিল সমাজের যারা রয়েছেন এর সাংবাদিক ভাইয়েরা; আপনাদের প্রত্যেকের ভূমিকা রাখার সময় হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে এখনো কিছু জায়গায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। আপনারা যারা রাজনীতি করেন, আপনাদের তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মী রয়েছে। আপনারা উদ্যোগ নিলে এগুলো ঠেকাতে পারবেন। সংখ্যালঘুরা আমাদের আমানত। এনাদের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। এতদিনে নারায়ণগঞ্জে যে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে, এগুলো মেরামত করতে যে টাকা লাগবে সেটি কিন্তু আপনার আমার পকেট থেকেই যাবে। আমি উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ করবো, আপনারা আপনাদের কর্মীদের দিকনির্দেশনা দেন। যাতে এখান থেকে বের হওয়ার পর আর একটি ঘটনাও না ঘটে।
সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে। ছাত্র-জনতা নতুন এক ইতিহাস রচনা করেছে। এই কাঙ্খিত বিজয় আনতে গিয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছে তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। যতদিন এই বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলার মানুষ এই ইতিহাস গৌরবের সাথে স্মরণ করবে। আন্দোলনের মাধ্যমে এই ছাত্র-জনতা যেভাবে বিজয়টা এনেছে, আমরা এই আন্দোলনে সেভাবে ভূমিকা রাখতে পারিনি। এই স্বৈরশাসক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, অবৈধ ভাবে ক্ষমতা ধরে রেখে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।
তিনি আরও বলেন, আজ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে আমাদের লজ্জা বোধ হয়। কোটা নিয়ে যখন আন্দোলন শুরু হয় তখন আমি বলেছি, মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর। তারা কেনো তাদের সন্তানদের কাপুরুষ বানাবে। তারা কেন কোটা দিয়ে চাকরি নিবে। আমরা এর বিরুদ্ধে, সেদিন আমরা এটি স্পষ্ট করে বলেছি। অনেক সরকারি কর্মকর্তা সৎ হয়েও সৎ ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। আপনারা সবাই আপনাদের মন-মস্তিস্কে পরিবর্তন আনবেন আমরা এটা আশা করি। আমি আমার দেহের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত এই দেশের মানুষের পাশে থাকবো, প্রশাসনের পাশে থাকবো। নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনে কতজন শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন সরকারিভাবে তা তালিকা তৈরি করতে হবে। আন্দোলনের সহিংসতাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। মিথ্যা মামলার পরিবর্তে সত্যিকারের মামলা দিতে হবে।
এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আমাদের লক্ষ্য হবে সরকারি সম্পত্তি আমাদের সবার। আমাদের অনেক রদবদল হবে কিন্তু এ প্রশাসন থাকবে। এ প্রশাসন দিয়ে আমাদের দেশ গঠন করতে হবে। সুতরাং সরকারি কোনো সম্পত্তিতে আঘাত করা যাবে না। আজ থেকে যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন যেন পরিচালিত হতে পারে তার জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো। যারা বিভিন্ন অনিয়ম করে আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইবে আমাদের ছাত্র জনতার অর্জনকে নষ্ট করতে চাই সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
এসময় ছাত্র নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ না করে কোন রকমের সিদ্ধান্তে না যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক এবং উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের অনুরোধ জানান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়ক ফারহানা মুনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com