নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, যারা ফুটপাথে ব্যবসা করেন, যারা হকার ব্যবসা করেন তাদের জন্য বলবো, একটি টাকা চাঁদাবাজি কেউ করতে পারবে না। এলাকা থাকবে চাঁদামুক্ত, কেউ চাঁদা চাইতে আসলে তাদের প্রতিহত করবেন। লাগলে আমাদের জানাবেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে ব্যবস্থা নিবো। চাঁদার কারণে আপনারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এলাকা চাঁদামুক্ত করছি, আপনারা দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিত মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রব্যমূল্য হ্রাস করে দিবেন। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, বিএনপির নেতৃবৃন্দ আপনাদের পাশে থাকবে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডে এক আলোচনা তিনি সভায় এ কথা বলেন।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, ২য় বারের মতো দেশ স্বাধীন হয়েছে। ১৬ বছর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো বসেছিলো বাংলাদেশে মানুষের উপর। এতো বড় স্বৈরাচার পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও হয়নি। আমাদের ছাত্রদের ও মুক্তিকামী মানুষের মধ্যে দিয়ে এই স্বৈরাচার পতন হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে। এই ১৬ বছরে সরকার প্রশাসন দিয়ে, সরকারি দলের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে এমন কোন অপর্কম নাই যেটা এই আওয়ামী সরকার করে নাই। নির্যাতন, জুলুম, অত্যাচার যেমন করেছে তেমনি মানুষের অর্থ সম্পদ যারা সরকারের কর্মরত ছিলেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ তারা চুরি-ডাকাতি করে বিদেশে পাচার করেছে। নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছেন। আমরা যারা এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন করেছি, তাদের গুম, হত্যা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে কি পরিমান নির্যাতন করেছে তা আপনারা সবাই জানেন। চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যবসায়ীরা জানেন কিভাবে তাদের কাছে থেকে চাঁদাবাজি করা হতো। আপনারা ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাতের, স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলে ব্যবসা করার কোন পরিস্থিতি ছিলো না।
তিনি বলেন, এখানে যে সিএনজি পরিবহনের ব্যবহার হয়, সেটাতেও চাঁদাবাজি হতো। চাঁদাবাজি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। চাঁদাবাজির কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হতো, জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হতো। আমরা চাঁদাবাদি বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আপনারা দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনবেন। এ ব্যবস্থা শুধু চিটাগাং রোডের জন্য নয়, নারায়ণগঞ্জের সকল ব্যবসায়ীদেরকে আপনারা জানিয়ে দেবেন। এ ঘোষণা সকল এলাকার জন্য। পরিবহনে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ফুটপাতে যারা আয় করেন তাদের কাছে কোন চাঁদাবাজি চলবে না। তাদের জন্য চাঁদামুক্ত একটি নারায়ণগঞ্জ হবে। আমাদের পরিচয়ে কেউ চাঁদা তুললে জানাবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, নেতা তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী আপনাদের বলছি, সম্পূর্ণ চাঁদামুক্ত ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা কায়েম করবো। কেউ ভয় পাবেন না, আমরা অপকর্ম প্রশ্রয় দেই না। ভবিষ্যতেও দেব না। এ নারায়ণগঞ্জে ১৬ বছর যাবৎ গডফাদার ছিল। একেএম শামীম ওসমান গডফাদারের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জে আরও বহু গড়ফাদার ছিল। তারা সন্ত্রাস করতো, চাঁদাবাজি করতো। আজকে তাদের বিরুদ্ধে রুখতে হবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যত অপরাধ করেছে, তাদের এ অপরাধ থেকে ক্ষমা নাই। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। যারা ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ছিল তাদের নামের তালিকা দেবেন। তালিকা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে দেবেন, আমাদেরকেও দেবেন। শাস্তি ছাড়া তাদের কোন রেহাই নাই। শত শত কোটি টাকা লুন্ঠন করে নিয়ে গেছে। তারা পার পেয়ে গেলে চাঁদাবাজ আরও সৃষ্টি হবে। স্বৈরাচারী সরকার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা সেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে চাই। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আজ দেশের ১০টি জেলায় বন্যার কারণে মানুষ দুর্ভোগে আছেন। তাদের সহায়তা করতে আমরা চেষ্টা করছি, আপনারাও এগিয়ে আসুন।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, মহানগর শ্রমিকদলের সভাপতি এসএম আসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যায়েরর নেতৃবৃন্দ।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।