মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি থেমে থেমে চলতে থাকে আজ বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সারাদিন ব্যাপী। বৃষ্টির এই নৃত্যে অংশ নেয় মেঘলা আকাশ ও দমক হাওয়া। আবহাওয়ার বিভিন্ন ওয়েব সাইটের পূর্বাভাস থেকে জানায় এমন আবহাওয়া থাকতে পারে আগামীকাল বৃহস্পতিবারও। তবে সূর্যের হাশি দেখা যাবে শুক্রবার। বৃষ্টি প্রেমীদের জন্য এই সময় আনন্দঘন হলেও কর্মজীবী এবং ব্যবসায়ীদের কাছে এ যেন এক ভোগান্তির নাম। কারণ বৃষ্টি হলেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক (লিংক রোড), নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়ক ও মীর জুমলা সড়কসহ এলাকার অলিগলিতে নগরবাসীর চলাচলের অবকাশ থাকে না। বৃষ্টি হলেই সড়কের পাশে পরে থাকা ময়লায় ছড়িয়ে পরে সম্পূর্ণ সড়কে, নোংরা পানিতে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা এবং সাথে যোগ হয় দূর্গন্ধ। একদিকে বৃষ্টির পানিতে যেমন ফুটপাত হয় কাদাময় তেমনই বাড়ে সিএনজি-অটো-রিকশার ভাড়া। ভাপসা গরমের পর এই গুড়ি বৃষ্টিতে নগরবাসীর জীবনে স্বস্তির সাথে নেমেছে ভোগান্তিও।
বুধবার সরেজমিনে নগরীতে দেখা যায় এমন চিত্র। যানজট এমনিতে নগরবাসীর মাথা ব্যথার কারণ হলেও বৃষ্টি হলেই তা আরও বেড়ে যায়। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ফুটপাতের বিপরিতে গণপরিবহন ব্যবহার করে পথচারীরা। যে কারণে সড়কে যানবাহনে চাপের সাথে সৃষ্টি হয় যানজট। এদিকে বৃষ্টির কারণে ফুটপাতে নিজের রুজিরুটির পসড়া সাজিয়ে বসতে পারেনি হকাররা। এক কথায় বৃষ্টির জালে আটকা পরে প্রতিটি শ্রেনীর কর্মব্যস্থ মানুষ।
কালিরবাজারের এক ফার্মেসীর কর্মচারী সাগর অভিযোগ করে বলেন, অন্যান্য সময়ে যে ভাড়া থাকে ২০ টাকা, রিকশা চালকদের মাথায় দু’ফোটা পানি পড়লেই সেই ভাড়া হয়ে যায় ৪০ টাকা। এই গলা কাটা ভাড়া না দিয়ে যদি হেটে যেতে চাই তাহলে মুখমুখি হতে হবে কাদা, ময়লা আর দূর্গন্ধের। মেট্রোহল থেকে কালিরবাজার যেতে কুমুদিনির সামনে রাস্তায় সারাদিন ময়লা পরে থাকে। সকালে সিটি কর্পোরেশনের লোক এসে ময়লা নিয়ে যাওয়ার ২০ মিনিটের মাথায় আবার আগের মতো ময়লায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। বৃষ্টি হলেই গাড়ির চাকায় সারা রাস্তা ছড়িয়ে যায় এই ময়লা। বাধ্য হয়েই এক হাতে ছাঁতা অন্য হাতে নাক ধরে যেতে আসতে হয়।
দ্বিগুবাবুর বাজারে আসা আসিফ জানায়, বাজারে কি কি বিক্রি হয় সেটা এই রাস্তার দিকে তাকালেই বোঝা যায়। প্রতিটা দোকান থেকে ময়লা ছুড়ে ফেলা হয় রাস্তার মাঝে, হোক সেটা সবজি-মাংস বা অন্য কিছুর দোকান। নিত্যদিনের বাজার করতে এখানে আসতে হয়। কিন্তু সামান্য বৃষ্টি হলেই দোকানে থাকা সবজির দাম বাড়ে, রিকশার ভাড়া বাড়ে, এর সাথে বাড়ে রাস্তায় ময়লা আর দূর্গন্ধ।
যানজটে আটকে পরা তাহমিনা বলেন, অন্যান্য দিন মেয়েকে হেটেই স্কুলে নিয়ে যাই। কিন্তু বৃষ্টি ও রাস্তার কাঁদায় বাচ্চার ড্রেস নষ্ট হবে বলে রিকশা নিয়েছি। বাসা থেকে ২০ মিনিটে যেখানে স্কুলে যাওয়া যায় সেখানে আজ ৩০ মিনিট ধরে জ্যামে বসে আছি। এদিকে মেয়ের স্কুল শুরু হতে আর ১০ মিনিট সময় বাকি। হয়তো সময় মতো যেতে পারবো না।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।