নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজের ৭০ জন শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভুইয়ার দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ নুরুন্নবী এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস ফারুকী তদন্ত করার জন্য নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলে উপস্থিত শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন। তদন্ত কমিটির কাছে শিক্ষকরা অভিযোগ করেন মাহমুদুল হাসান ভুইয়া বিগত কমিটির সভাপতি চন্দনশীলের সহযোগিতায় প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে আর্থিক অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। সরকারি বেতনের বাইরে সে স্কুল তহবিল থেকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে বাড়ি ভাড়া এবং চার্জ এলাউন্স বাবদ প্রতিমাসে ৮৮ হাজার টাকা অবৈধভাবে নিয়ে যায়। এছাড়া কমিটির কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষা সফরের নামে বহিরাগত লোকদের সাথে নিয়ে সাড়ে ৮ লাখ টাকা খরচ দেখিয়ে স্কুল তহবিল থেকে উত্তোলন করেন। মেয়াদ উত্তীর্নের আগেই মূল কমিটি বাতিল করে এডহক কমিটির মাধ্যমে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা করে নিয়ে ২২ জনকে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করেন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের ছেলে রয়েছে। স্কুলের শিক্ষকরা তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করেন, কোন প্রকার কারণ ছাড়াই কর্মরত অবস্থায় ৭ জন শিক্ষককে মৌখিক নির্দেশে চাকরিচ্যুত করেন। সেখানে তার ইচ্ছেমতো শিক্ষক নিয়োগ করেন। এই চাকরিচ্যুতির নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ৩ জন শিক্ষক আদালতে মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে আদালতের নির্দেশে একজন শিক্ষক চাকরি ফেরত পেয়ে স্কুলে যোগদান করার পর অজ্ঞাত কারণে তার বেতন এক বছর যাবত প্রদান করা হচ্ছেনা।
শিক্ষকরা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টিয়ে মাহমুদুল হাসান ভুইয়া রাতারাতি বিএনপির নেতা বনে যায়। ২১ শে সেপ্টেম্বর স্কুলে কর্মরত সকল শিক্ষক এবং ছাত্ররা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নুরুন্নবীর উপস্থিতিতে সে পদত্যাগ করে স্কুল ত্যাগ করেন। এদিকে প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভুইয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক এবং গভর্ণিং বডির সভাপতি মাহমুদুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে শিক্ষকেদের আশ^স্ত করেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস ফারুকী জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে তারা মাহমুদুল হাসান ভুইয়ার আর্থিক অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছেন। শিক্ষকদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। অনেক অনিয়মের প্রমান পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট প্রদান করবে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।