সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ ভয়াবহ হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশে এক হাজার ১শ’ ৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মারা গেছেন ১শ’ ৬৩ জন। সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জেও ডেঙ্গু সংক্রমণে আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪শ’ জন ছাড়িয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। গত ২ দিনের ব্যবধানে নারায়ণগঞ্জে নতুন করে ৭৩ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার ফলে জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে।
নগরীতেও ডেঙ্গুর সংক্রমণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। নগরীর সরকারি ২ হাসপাতালের দেয়া তথ্য মতে, সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১শ’ ৬১ জন। সোমবারের দেয়া তথ্য মতে, ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে নতুন করে ৪০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আরএমও মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আগস্ট মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিলো ১৭ জন। সেপ্টেম্বর মাসে ১শ’ জন ডেঙ্গু রোগে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায় ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ বাড়ছে।
৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক,স্বাস্থ্য) ডা. মো. আবুল বাসার জানান, সেপ্টেম্বর মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৬১ জন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থানীয় পর্যায়ে যথাযথভাবে মশক নিধন কার্যক্রম না চালানো, নতুনকরে দায়িত্ব নেয়া সিটির প্রশাসকের মশক নিধনের প্রস্তুতিতে ঘাটতি রয়েছে।
এদিকে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
তিনি জানান, ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজ হচ্ছে। সকাল ৬টা থেকে এডিস মশা নিধনে বিভিন্ন এলাকায় আমাদের কর্মীরা যাচ্ছেন। সেখানে মশা নিধনকারী লার্ভিসাইট ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সাথে আমরা জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা কার্যক্রম অব্যাহত রাখছি।
তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক ডেঙ্গু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা একটা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা শহরের হাসপাতালগুলো থেকে ডেঙ্গু রোগীদের তালিকা নিচ্ছি। তাদের ঠিকানা নিয়ে আমাদের একটি বিশেষ রেসপন্স টিম যাবেন। সেখানে ডেঙ্গু রোগ ছড়ানোর কোন নিয়ামক আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি ডেঙ্গু সংক্রমণের নিয়ামক পাওয়া যায়, তাহলে তা দূর করা হবে। সেই সাথে আশপাশের মানুষদের সচেতন করা হবে। মূলত, ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে একটি বড় ভূমিকা রাখবে জনসচেতনতা। কী কারণে ডেঙ্গু ছড়ায়, এডিস মশা কোথায় জন্মায় এসকল বিষয়ে সবাইকে জানতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসককে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আরো তৎপর হতে হবে। এখনি মশক নিধনের যুদ্ধে নামতে হবে। এ বিষয়ে কোনরকম গাফিলতি অবস্থা আয়ত্বের বাইরে চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।