খানাখন্দে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া থেকে বৈদ্যের বাজার ঘাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার বিস্তৃত সড়কটি। একদিকে গর্ত-খানাখন্দে ভরা অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুসমান পানিতে সয়লাব হওয়া প্রধান সড়কে জনগণের ভোগান্তি চরমে পৌঁচেছে। অভিভাবকহীন এ সড়কটি দিয়ে পথচারী-যানবাহন দুর্ঘটনার আতংক নিয়ে চলাচল করছে। এই সড়কটির কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ও বৈদ্যের বাজার এলাকাবাসী। খানাখন্দে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া থেকে বৈদ্যের বাজার ঘাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার বিস্তৃত এ সড়ক। রোববার (২৭ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, দুই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের বেশির ভাগ জায়গায় নেই মাটি। ইটের সিলিংসহ উঠেগেছে পিচ, তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি তৈরি হয় কাদার ভাগাড়ে আবার বৃষ্টির পরমিান বেশি হলে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। চলন্ত অবস্থায় গর্তে পড়ে রিকশা-ভ্যান উল্টে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। সড়কের এমন করুন অবস্থার সুযোগ নিয়ে অধিক ভাড়া হাকাচ্ছে ছোট-বড় ভারী যানবাহন। এতে গাড়িতে চড়ে কিংবা পায় হেটেও যেতে পারছে না এলাকাবাসী। ভোগান্তির শিকার হচ্ছে চাকরিজীবী,ব্যবসায়ী, রোগী থেকে শুরু করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও।
উপজেলা অফিস, হাসপাতাল ক্লিনিক, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, রেজিস্ট্রি অফিস, এসিল্যান্ড অফিস, মার্স গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, আল মোস্তফা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, ঐতিহ্যবাহী আনন্দবাজার হাট, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রী শ্রী লোকনাথ মন্দির, আমান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই রাস্তাটি দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এছাড়া সোনারগাঁয়ের প্রায় ৪০-৫০ টি গ্রামের লোকজন রাজধানী ঢাকায় যাওয়া-আসার জন্যে এ সড়কটি ব্যবহার করে।
স্থানীয়দের জানায়, এ বিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে রাস্তাটি সংস্কারকরণের জন্য দাবি জানিয়েছি।কিন্তু,কেউ কোনো কাজ করেননি।জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার আমলে এই রাস্তার তেমন কোন কাজ হয়নি।পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি আব্দুল্লাহ কায়সার আসলেও এ সড়কের রূপ পরিবর্তন হয়নি। এখন পর্যন্ত বেহাল দশায় আছে এই সড়ক।
এ বিষয়ে মার্স গ্রুপের প্রজেক্ট ম্যানেজার মোঃ জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার কথা শোনতে পাওয়া যায়। কোম্পানির গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশ প্রতিদিনই ক্ষতি হচ্ছে,ফলে গাড়ি গুলো মেরামত করতে গিয়ে অনেক অর্থ ব্যয় হচ্ছে,ফলে কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সোনারগাঁ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বলেন,প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে।তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়।প্রায় সময়ই গাড়ি দুর্ঘটনা হয় এ রাস্তাতে।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাবরিনা হক বলেন-অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হলে এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি ব্যবহার করতে হয়,রোগীরা ভোগান্তি নিয়েই হাসপাতালে আসেন।তাই এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার।
ভবনাথপুরের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, প্রতিদিনই আমাদের এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়।বৃষ্টিতে রাস্তাটি একদম চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।কয়েকদিন আগেও একটি রিকশা বটতলা উল্টে যায়,এতে মহিলা যাত্রী গুরুতর আহত হয়।তারপরও শত ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়।আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত এ রাস্তা মেরামত করার ব্যবস্থা করেন। দত্তপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা শ্রী ফালু দাস বলেন,নারায়ণগঞ্জের মধ্যে মনে হয় এতো খারাপ রাস্তা আর নেই। জনপ্রতিনিধিরা যদি এ রাস্তাটি সংস্কার করতে না পারে তাহলে তারা যেন নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়।
এ বিষয়ে রোডস এন্ড হাইওয়ের কর্মকর্তা শাহানা আক্তার গণমাধ্যমকে জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির সংস্কারের ব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছে।তবে এই রাস্তাটি মজবুত ও টেকসই করে করতে হবে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই রাস্তাটির কাজ শুরু হয়ে যাবে।এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)ফারজানা রহমান বলেন, রাস্তাটি এলজিআরটির আওতায়। রাস্তাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে উপজেলা মিটিংয়ে বসে আলোচনা করে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিবো।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।