Logo
HEL [tta_listen_btn]

ড্রেন নির্মাণে ঠিকাদারের ধীরগতি

নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে গভীর ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (এনসিসি) নিয়োজিত ঠিকাদার। কিন্তু কাজে ধীরগতি থাকায় জনদুর্ভোগ বাড়ছে। এরই মধ্যে ফুটপাতে পুরানো ড্রেন কেটে গভীর গর্ত করা হয়েছে। রড-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে পোক্ত করে ড্রেন তৈরীর কাজ চলছে। তবে ইট, বালি, পাথর, ভেকুসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রেখে সড়কের প্রায় অর্ধেক জায়গা দখলে চলে গেছে। প্রাইভেট কার, মিশুক, ট্রাক,ঢাকামুখী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে ধীরগতি এসেছে। চাপ বাড়তেই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এর উপর পুরাতন ড্রেনে পানির প্রবাহ বন্ধ থাকায় নোংরা পানি সড়কের এসে জমেছে। যানজট ও দুর্গন্ধে বিরক্ত হচ্ছেন বিভিন্ন বাহনের যাত্রীরা। নোংরা পানি, মাটির স্তূপের উপর হাটতে পথচারীদেরও দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সড়কের পশ্চিম পাশে উকিলপাড়ার প্রবেশ পথ থেকে গলাচিপার আগে টিএসএন প্লাজা পর্যন্ত অংশে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। বিভিন্ন মার্কেট, বিপনী বিতানও দোকানের প্রবেশপথের দিকে ড্রেন কেটে গর্ত করা হয়েছে। গর্ত পার হবার জন্য কাঠের তৈরী সাকো দেয়া হয়েছে। ফুটপাথ থেকে সড়কের দিকে তাকাতেই দেখা যায়, ভেকু, সিমেন্ট মিক্সিং মেশিন,ইট, পাথর দিয়ে চলাচলের দুই লেনের মধ্যে একটি লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চলাচলের পথ সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় অপর লেনে যানবাহন ধীর গতিতে চলছে। ফুটপাথে ড্রেনের গর্তের পাশে মাটির স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এর মাঝে, হঠাৎ নাকে দুর্গন্ধ আসা মাত্রই দেখা যায়, সড়কের পাশেই নোংরা পানি জমে আছে। ফুটপাথে মাটির স্তূপ থেকে নেমে পথচারীরা এই নেংরা পানিতে হাটছেন।
সাব্বির নামে এক দোকানী বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে থেকে এই খানে ময়লা পানি জমে। দুপুরের দিকে বাসা-বাড়িতে মানুষের গোসল, কাপড় ধোয়ার কাজ হয়। সেই সময়ে এইখানে ময়লা পানি বেশি দেখা যায়। এর পর পানি কমতে থাকে। ড্রেনের কাজ করতাছে শুনেছি। কিন্তু কাজটা একটু গুছিয়ে করলে ভালো হয়। এই ড্রেনের পানি কেন বাইরে আসবে। অনেকেই ময়লা পানিতে হাটছেন। এই পানিতে পা রাখলে শরীরে চুলকানি হয়। দুর্গন্ধের কারণে অনেকেই দোকানে আসতে চান না।
রিফাত নামে এক পথচারী বলেন, উকিল পাড়া থেকে বের হয়ে সড়কে হাটার সময়ে কয়েকদিন ধরে এই জায়গাটাতে কষ্ট হচ্ছে। একদিকে, নোংরা পানির দুর্গন্ধ। এর উপর ফুটপাথে হাটার জায়গা নাই। মাটির উপর দিয়ে গিয়ে, নোংরা পানির উপর দিয়ে হাটতে হয়। এই পানিতে একটু হাটলেই পা চুলকানো শুরু করে। রাস্তার পাশে ইট, পাথর, মেশিন ফেলা হয়েছে। এর পাশে দিয়ে যেতে হয়। ড্রেন বানাচ্ছে, ব্যাপারটা ভালো। তবে জনদুর্ভোগ যেন না হয় এমনভাবে কাজটা সিস্টেমেটিকেলি করা হয়ে আমাদের ভোগান্তি কম হতো।
জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে বঙ্গবন্ধু সড়কের গভীর ড্রেন নির্মাণ চলছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে বঙ্গবন্ধু সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে গভীর ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
ড্রেন নির্মাণের ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলামী পরশ পাথর‘র সাইট ইঞ্জিনিয়ার রাসেল আহমেদ বাপ্পি জানান, সেপ্টেম্বর থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। বঙ্গবন্ধু রোডে কাজ শেষ হতে প্রায় এক বছর লাগবে। ড্রেন সম্প্রসারণে ৩টি ঠিকাদারী কোম্পানী কাজ করছে।
তিনি জানান, ড্রেনের আগের অংশে ফ্লো ধারণ ক্ষমতা ৬০০ মিলিমিটার, নতুন ড্রেনে ধারণ ক্ষমতা মাত্রা বাড়িয়ে ১ হাজার মিলিমিটার অর্থাৎ, এক মিটার করা হচ্ছে। নতুন ড্রেনের গভীরতা ৫ ফিট থেকে ৬ ফিট হবে, আগের ড্রেনের গভীরতা ছিল ৩ফিট থেকে সাড়ে ৩ ফিট। পুরাতন ড্রেন এখন এই অংশে বন্ধ আছে। মোটর দিয়ে প্রতিনিয়ত একটি সাকশন পাইপ সংযুক্ত করে ড্রেনের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুপুরের দিকে ড্রেনে পানির প্রবাহের চাপ বেশি থাকে। তাই ড্রেনে ওভার ফ্লো হলে নোংরা পানি সড়কে আসছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ইউছুফ আলী জানান, জাইকার আরবান ডেভেলপমেন্ট সিটি গভার্ন্যান্স প্রজেক্টের আওতায় এই ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। বঙ্গবন্ধু সড়কের উভয় পাশে নতুন করে বড় ড্রেন নির্মাণ করা হবে। জনদুর্ভোগ যাতে খুব কম হয়, সেজন্যে নির্দিষ্ট টাইম ল্যাপস নিয়ে উভয় পাশের কাজ চলছে। বঙ্গবন্ধু সড়কের পশ্চিম পাশে গলাচিপার দিকে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলে এসেছে। একই সাথে নিতাইগঞ্জে বঙ্গবন্ধু সড়কের পূর্ব পাশে ড্রেনের কাজ চলছে। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে গলাচিপা, উকিলপাড়া, মাসদাইরসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা দূর হবে। সেই সাথে পুরো শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com