Logo
HEL [tta_listen_btn]

শীতলক্ষ্যার বর্জ্য অপসারণ করা হবে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শীতলক্ষ্যা নদীর তলদেশে বর্জ্য অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে’। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর ডেমরা ঘাট শুল্ক আদায় কেন্দ্র সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ’র চনপাড়া, ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ ইকোপার্ক উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। বন্দরে কর্ণফুলী শিপইয়ার্ডও পরিদর্শন করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘নদী তীরবর্তী স্থানগুলোকে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার ব্যবস্থা করব। এ ছাড়া নদীর চর ও তীরবর্তী অংশে ওয়াকওয়ে ও ইকোপার্ক নির্মাণের বিনোদনকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘নদীগুলো বাংলাদেশের মানুষের জীবন সংস্কৃতির একটি বিরাট অংশ। তাই নদীগুলোর প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে জরুরিভিত্তিতে শীতলক্ষ্যা নদীর তলদেশে বর্জ্য অপসারণের জন্য ড্রেজিং কার্যক্রমসহ বিআইডব্লিউটিএ’র অন্তর্ভুক্ত সব নদীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিগত সরকারের আমলে দেশে আইনের কোনো বাস্তবায়ন ছিল না। তাই নদ-নদীতেও কোনো নিয়ম মানা হয়নি বলে নদী দূষণ বেড়েছে বহুগুণে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা ও আশপাশের নদীগুলোতে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার সব রকমের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নির্বিচারে, যা বন্ধ করা খুবই জরুরি। নদীতে আজ জলজ প্রাণের অস্তিত্ব চরম সংকটে শুধু নদী দূষণের কারণে। এক্ষেত্রে নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষের মাঝেও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিচ্ছন্নতার জন্য কিছুতেই নদ-নদীতে গৃহস্থালির আবর্জনাসহ কোনো প্রকার ময়লা ফেলা যাবে না।’
উপদেষ্টা জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে বলেন, মালিকপক্ষকে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুকি ও নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাগ্রে বিবেচনা করতে হবে। শ্রমিকদের অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। যথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে। শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা গেলে দেশের অর্থনীতি আরো বেগবান হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের জাহাজ শিল্প এগিয়ে যাবে মর্মে উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপদেষ্টা শিপইযার্ডে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তাদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করেন।
উপদেষ্টা এ সময়ে কর্ণফুলী শিপইয়ার্ডে নির্মানাধীন বিআইডব্লিউটিসিএ এর চারটি কোস্টাল প্যাসেঞ্জার ভেসেল ও তিনটি প্যাসেঞ্জার ক্রুজ ভেসেল এবং বিআইডব্লিউটিএ এর ড্রেজারসমূহের নির্মাণ কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করবার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলো যেমন সন্দীপ হাতিয়া মহেশখালীতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগণের দুর্ভোগ লাগবে সরকার এ সকল রুটে নৌ যোগাযোগ স্থাপন করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারিভাবে জনগণের চাহিদার কথা চিন্তা করে জনবান্ধব নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ডেমরার ছনপাড়াতে নির্মাণাধীন ইকোপার্ক পরিদর্শন করেন এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নদীকেন্দ্রিক পর্যটনব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের আনাচে-কানাচে জালের মতো নদ-নদী, খাল-বিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। দেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ নদ-নদীর উপর নির্ভরশীল। নদীকেন্দ্রিক পর্যটনব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সহজেই আকৃষ্ট করা যেতে পারে। উপদেষ্টা এ সময় নদীকেন্দ্রিক পর্যটন চালুর জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, বিআইডব্লিউটিসি’র চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বনিক, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুন্সি মো. মনিরুজ্জামান, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) মো. জাহিদুল ইসলাম। আরও উপস্থিতি ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) এ কে এম আরিফ উদ্দিন, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) রকিবুল ইসলাম তালুকদার, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এজেডএম শাহ নেওয়াজ কবির, নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, উপপরিচালক (বওপ) মোবারক হোসেন মজুমদার ও স্থানীয় ঘাট পয়েন্টের ইজারাদার মাহমুদুল হাসান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com