নিজস্ব সংবাদদাতা
মুখাবয়ব নয়, আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে পরিচয় যাচাই ও নাগরিক পরিচয়পত্র (এনআইডি) প্রদানের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘নারায়ণগঞ্জ জেলা পর্দানশীন নারী সমাজ’ নামের একটি সংগঠন। গতকাল সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে প্রায় অর্ধশতাধিক নারী অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, বিগত ১৬ বছর ধরে পর্দানশীন নারীদের মুখাবয়ব প্রদর্শনে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তাদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার (প্রাইভেসি) অধিকারের লঙ্ঘন। এনআইডি না পাওয়ার কারণে তারা জমি ক্রয়-বিক্রয়, ত্রাণ গ্রহণ, বাসা ভাড়া, সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি, চাকরির মতো মৌলিক নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ সময় সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা তিন দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো, দ্বীনি অধিকার ও গোপনীয়তা বজায় রেখে জাতীয় পরিচয়পত্র নিশ্চিত করা, এনআইডি প্রক্রিয়ায় নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট গ্রহণের জন্য নারী অফিসার নিয়োগ করা ও গত ১৬ বছরে যেসব নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্মকর্তা পর্দানশীন নারীদের মুখাবয়ব প্রদর্শনে বাধ্য করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মানুষের মুখচ্ছবি পরিবর্তনশীল, তাই এটি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। আধুনিক বিশ্বে আঙ্গুলের ছাপই পরিচয় নিশ্চিত করার কার্যকর উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তারা আরও বলেন, পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০ ও ২০২৩-এ ছবি বা আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করা হয়নি, অথচ প্রশাসনিক জটিলতার কারণে পর্দানশীন নারীরা এনআইডি পাচ্ছেন না। বক্তারা আরও বলেন, গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, কিন্তু পর্দানশীন নারীরা এখনও বৈষম্যের শিকার। তারা অবিলম্বে তাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, এনআইডি না থাকায় তারা জমি ক্রয়-বিক্রয় ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা, বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত নারীদের বাসা ভাড়া পেতে সমস্যা, সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত জটিলতা, চাকরি ও ব্যবসার সুযোগ সংকুচিত হওয়া, সরকারি ত্রাণ বা ভাতা গ্রহণে বাধার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।