বিশেষ প্রতিনিধি
সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রথম চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এই চার্জশিটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি শামীম ওসমানসহ মোট ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার দুই আসামি ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন, বাকিরা পলাতক।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আলমগীর হোসাইন নারায়ণগঞ্জ আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটটি বুধবার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে উপস্থাপন করা হবে, এবং মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনায় আব্দুল লতিফ নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোঃ নেজাবুদ্দিন সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিকভাবে মামলায় ১২ জনকে আসামি করা হলেও তদন্তের পর চার্জশিটে আরও দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
চার্জশিটে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ইয়াসিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, আশরাফ, ইয়াসিন আরাফাত রাসেল, আবু বকর সিদ্দিক ও ওমর ফারুক।
কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মোঃ কাইউম খান জানান, ২০২৪ সালের ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকার দশতলা বিল্ডিংয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এই হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল লতিফ নিহত হন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে পিবিআই ১২ জনের সঙ্গে আরও দুজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছে।
চার্জশিটে অভিযুক্ত ১৪ জনের মধ্যে দুজন বর্তমানে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ও আইনি প্রক্রিয়া আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
এই মামলা নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতার ঘটনাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং এই মামলার ফলাফলের দিকে সবার দৃষ্টি রয়েছে।