নিজস্ব সংবাদদাতা
শামীম ওসমান, তাঁর ছেলে অয়ন ওসমান ও তাঁদের অনুসারী শাহ নিজামের নামে অস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে। শাহ্ নিজাম ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি হকার ইস্যুতে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি চালিয়েছিলেন সিটি মেয়র আইভী ও তাঁর লোকজনের ওপর। এছাড়া আজমেরী ওসমান ও তার সহযোগীদের কাছেও প্রচুর অবৈধ অস্ত্র ছিলো। গত বছর ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ শহরে শামীম ওসমান ও তাঁর সহযোগীরা অস্ত্র নিয়ে ধাওয়ার ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হতাহত মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু গত ১৪ মাস যাবৎ গ্রেফতার এড়াতে শামীম ওসমান ও তার সঙ্গীরা দেশ বিদেশে পলাতক জীবনে রয়েছেন। তাদের অস্ত্রভান্ডারের সন্ধান এখনো নিতে পারেনি প্রশাসন। এ ব্যাপারে পসংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ব্যর্থতা নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
জানা যায়, গত বছর জুলাইয়ে নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও তাঁর সহযোগীদের গুলি ছোঁড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর আহত এক ক্যামেরাপার্সনের তোলা ভয়াবল দৃশ্য ছবিও প্রকাশ হয়। ওই দিন চাষাঢ়া বঙ্গবন্ধু সড়কে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করেন। একটি উঁচু ভবনের ওপর থেকে মুঠোফোনে ২৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি ধারণ করা।
ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, শামীম ওসমান ও তাঁর কয়েক শতাধিক অনুসারী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কে শহরের ২ নম্বর রেলগেইট এলাকার দিকে ধাওয়া দিচ্ছেন। সেখানে শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ (টিটু) গুলি ছোড়েন। শামীম ওসমানের আত্মীয় (অয়ন ওসমানের শ্বশুর) ফয়েজ উদ্দিন (লাভলু), তাঁর ছেলে মিনহাজুল ইসলাম ও শীতল পরিবহনের বাসের পরিচালক অনুপ কুমার সাহা, ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিয়াজুল ইসলাম (২০১৮ সালে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর ওপর অস্ত্র উঁচিয়ে ধরে আলোচিত) প্রমুখকে দেখা যায়। তাঁরা আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিয়ে শহরের মণ্ডলপাড়া পর্যন্ত হটিয়ে দেন। ওই দিন মহড়ায় শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও আবদুল করিম (বাবু) ও তাঁর ছেলে এম আর কে রিয়েন, ছাত্রলীগ নেতা কাউসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
১৯ জুলাই শহরের নয়ামাটি এলাকায় চারতলার বাড়ির ছাদে খেলার সময় ৬ বছরের শিশু রিয়া গোপ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, শামীম ওসমান ও তাঁর সহযোগীদের গুলিতে রিয়া গোপের মৃত্যু হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জের সমন্বয়ক ফারহানা মানিক বলেন, ওই দিন (১৯ জুলাই) ওই এলাকায় কোনো পুলিশ সদস্য ছিলেন না। কার গুলিতে রিয়া গোপের মৃত্যু হলো, সেটি প্রশাসনকে খুঁজে বের করতে হবে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।