ফিরোজ আহমেদ
রাজনৈতিক কোনো অভিসন্ধির কাছে বিএনপি কখনো মাথা নত করবে না বলে দৃঢ় ঘোষণা দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, রাষ্ট্র কোনো ছেলেখেলা নয়; জনগণের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারে না। দেশের শাসনব্যবস্থা অবশ্যই একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলতে হবে। জনগণই এই রাষ্ট্রের মালিক এবং তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এনডিপি) ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, “কোনো বৈধ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার কারও নেই। এভাবে সংবিধান পরিবর্তন শুরু হলে দুই বছর বা পাঁচ বছর পর আবারো পরিবর্তনের দাবি উঠবে, যা রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক।”
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের অভিপ্রায় ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এই সরকারের প্রতিষ্ঠা সেই গণঅভ্যুত্থানেরই ফল। তবে সেই অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের আলোকে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন ও উপদেষ্টাদের শপথ অনুষ্ঠান হয়েছে আমরা সেটিকেই বৈধ প্রক্রিয়া বলে মনে করি।”
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (পিআর) নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ মানুষ এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানেই না। এমন একটি জটিল পদ্ধতি জাতির সামনে তুলে ধরে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা উচিত নয়।”
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “যারা হীন রাজনৈতিক স্বার্থে জাতীয় ও জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছে, তাদের দেশের স্বার্থে সঠিক পথে ফিরে আসতে হবে।”
নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “যে শক্তি নির্বাচনে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের পক্ষে একটি রাজনৈতিক দল কাজ করছে। যদি নির্বাচন বিলম্বিত হয়, তাহলে দেশে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।”
জুলাই সনদের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, “এখন বলা হচ্ছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ভিত্তিতেই পরবর্তী নির্বাচন হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সংবিধানের যেসব অংশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তা সম্পূর্ণ করতে পরবর্তী সংসদের দায়িত্ব নিতে হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য নির্ধারিত সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সেই কাজ সম্পন্ন করা উচিত।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনডিপির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল হারুন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণদলের সভাপতি এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।