Logo
HEL [tta_listen_btn]

কুলাঙ্গারের কাণ্ড!

নিজস্ব সংবাদদাতা
পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ঘৃণ্য উদ্দেশ্য ও সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় নিজের গর্ভধারিণী মাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অভিযোগ উঠেছে এক কুলাঙ্গার সন্তানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই সন্তানের নাম আবুল বাশার জনি।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ নগর খাঁনপুর এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত আলহাজ্ব আবু তাহের, সাহেবের দোকানপাট ও বাড়িঘর অন্যান্য সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন। মরহুম আবু তাহের সাহেবের মৃত্যুর পর আইনগতভাবে তাঁর স্ত্রী এবং ৩ সন্তান সেই সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হবেন। আবুল বাশার জনি হচ্ছে দ্বিতীয় সন্তান।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জনি দীর্ঘদিন ধরে জোর করে পুরো সম্পত্তি নিজের দখলে রাখার লক্ষ্যে, নিজের নামে লিখে নিতে তার মায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। মা তাতে রাজি না হওয়ায় তিনি এই চরম পদক্ষেপ নেন।
গত ৫ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ চতুর্থ অতিরিক্ত সহকারী জজ আদালতে জনির পক্ষে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে তিনি তার মায়ের বিরুদ্ধে ‘সম্পত্তির অধিকার নিয়ে মিথ্যা দাবি’ এবং ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ এনেছেন। এই মামলার মাধ্যমেই ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর আইনি নোটিশ ধরিয়ে দেন জনি।
আদালতে হাজির হয়ে অভিযুক্ত মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি জন্ম দিয়েছি, কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি। আজ সে শুধুমাত্র সম্পত্তির জন্য আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়াল। এই সম্পত্তির উপর আমার ও তার বাকি ২ ভাই-বোনের হক রয়েছে। আমি কল্পনাও করতে পারিনি, আমার নিজের ছেলে আমাকে এভাবে অপমান করবে।”
বৃদ্ধা জানান, তার স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায়ই সম্পত্তি বন্টনে একটি অসিয়তনামা করে যান,কিন্তু জনি একাধিকবার পারিবারিক বৈঠকে বাবার ওসীয়ত নামা মানতে রাজি হয়নি, বিগত ১ আগস্ট ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার অহিদুল ইসলাম ছক্কুর কার্যালয়ে, কমিশনারের তত্তাবদানে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নন জুডিশিয়ান স্ট্যাম্পের মাধ্যমে পারিবারিক বন্টক নামা করাহয়।
ওই বিচারকে উপেক্ষা করে, জনি তার মা এবং ভাই -বোনকে চাপ সৃষ্টি করছেন। এতে তার মা নিজেকে সম্পূর্ণ অসহায় এবং তার জীবন নিয়ে আশংকাবোধ করছেন।
এলাকাবাসী এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনির এক প্রতিবেশী বলেন, “আমরা জনির মা-কে বহু বছর ধরে চিনি। তিনি অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ এবং সহজ-সরল মানুষ। জনি যে এমন কাণ্ড করতে পারে, তা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। সম্পত্তির লোভে এমন জঘন্য কাজ সমাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে।”
বাদীপক্ষের আইনজীবী এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে, মায়ের পক্ষে আইনি লড়াই পরিচালনার জন্য স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংগঠন এগিয়ে এসেছে। তারা এই মামলাটিকে সন্তানের হাতে পিতা-মাতার অধিকার লঙ্ঘনের একটি গুরুতর দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই ঘৃণ্য চেষ্টার বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন এবং সমাজে এমন সন্তানের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost.Com