নিজস্ব সংবাদদাতা
অবশেষে নগরীর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ ধরণের অভিযান আরো আগেই পরিচালনা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন ভুক্তভোগীরা। শেষমেস পরিচালিত অভিযানে ১৫ দালালকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে এই দালাল চক্র রোগীদের হয়রানি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। এই দালাল চক্রের পেছনে শহরের কিছু বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার জড়িত। এমনকি হাসপাতালের কিছু অসাধু চিকিৎসকও দালালদের মাধ্যমে কমিশনবাণিজ্যে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, দালাল চক্র নির্মূলে প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকলে খানপুর হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা পরিবেশ ফিরে আসবে।
র্যাব জানায়, সরকার ঘোষিত নির্দেশনা অমান্য করার দায়ে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ৭ জন পুরুষ ও ৮ জন নারীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
র্যাব-১১, সিপিসি-১ এর কোম্পানি কমান্ডার এএসপি মোঃ আল মাসুদ খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে কিছু দালাল পুরুষ ও নারী দীর্ঘদিন ধরে রোগীদের প্রলোভন দেখিয়ে বাইরে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যেতেন। সেখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগসাজশে অতিরিক্ত পরীক্ষা করিয়ে বেআইনিভাবে অর্থ উপার্জন করতেন।
এই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং সোমবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১৫ জনকে আটক করা হয়।
তারা হলো- মোঃ চিনু ইসলাম (৩৮), পিতা- আব্দুল গফুর, মাতা-গোলে আকসা, ঠিকানা- সাং থানপুর, থানা- সদর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, সোমন মিয়া (২৫), পিতা- সোমেদ আলী, মাতা- বিনা বেগম, সাং কায়েম, থানা- ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, কামরুল ইসলাম (৩০), পিতা- রাজ্জাক হাওলাদার, মাতা- মোশেদা বেগম, সাং তল্লা, থানা- ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, মোঃ আলমগীর কবির (৪৫), পিতা- কলিম উল্লা মুন্সী, মাতা- আমেনা বেগম, সাং খানপুর, থানা- সদর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, মোঃ মাসুম (৪০), পিতা- মৃত মকবুল হোসেন, মাতা- সালেহা বেগম, সাং খানপুর, থানা- সদর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, মোঃ ফরিদ (২৫), পিতা-আবুল কাশেম, মাতা- ফিরোজা বেগম, সাং খানপুর, থানা- সদর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, মোঃ রবিন (৩৮), পিতা- মোঃ রাজু মিয়া, মাতা- সাহানাজ বেগম, সাং খানপুর, থানা- সদর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, শিউলিআক্তার (৩৫), পিতা- সামদ আলী দেওয়ান, স্বামী- মৃত ওয়ালী উল্লাহ, মাতা-ফজিলাতুন নেছা, সাং মুকুলদী, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ফরিদা পারভীন (৫২), স্বামী- মৃত মোঃ আলী, পিতা- আব্দুল লতিফ, সাং পঞ্চবটি, ফতুল্লা, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, মোছাঃ আম্বিয়া (৪৮), স্বামী মৃত আজগর আলী, পিতা- সাবেদ আলী, মাতা- ফজিলাতুন নেছা, সাং মুকলদি, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, রাজিয়া বেগম (৪৫), পিতা- মৃত খলিলুর রহমান, মাতা- হালিমা বেগম, সাং নবী গঞ্জ থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, কাকুলি আক্তার (৩৬), পিতা- খবির হোসেন, মাতা- খালেদা বেগম, সাং দাশের গাঁও, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, কাকুলি আক্তার (৩৬), পিতা- খবির হোসেন, মাতা- খালেদা বেগম, সাং দাশের গাঁও, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, মোছাঃ রোখসানা (৫০), স্বামী- শাহাদাত, পিতা- মৃত নুর ইসলাম, মাতা- অহিতুন নেছা সাং নবী গঞ্জ, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, মোছাঃ মাকছুদা (২৫), স্বামী- মেহেদী হাসান, পিতা- মৃত জাহাঙ্গীর খান, মাতা- সালেহা বেগম সাং বালিপাড়া, থানা- বন্দর, জেলা- নারায়ণগঞ্জ।
ম্যাজিস্ট্রেট রাহসিন কবির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই দালাল চক্র রোগীদের হয়রানি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। আজকের অভিযানে তাদের আটক করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযোগ রয়েছে, এই দালাল চক্রের পেছনে শহরের কিছু বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার জড়িত। এমনকি হাসপাতালের কিছু অসাধু চিকিৎসকও দালালদের মাধ্যমে কমিশন বাণিজ্যে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।
সাধারণ মানুষের দাবি, দালাল চক্র নির্মূলে প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি ও কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত থাকলে খানপুর হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা পরিবেশ ফিরে আসবে।
গোপনীয়তা নীতি | এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।